শিরোনাম
সোমবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ঝুটের পোশাক বিশ্ববাজারে

নীলফামারীর সৈয়দপুরে ৫ শতাধিক কারখানা গড়ে উঠেছে

আবদুল বারী, নীলফামারী

ঝুটের পোশাক বিশ্ববাজারে

ঝুট কাপড়ের তৈরি পোশাকের বাজার। সৈয়দপুরের ছবি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নীলফামারীর সৈয়দপুরে ঝুট কাপড় দিয়ে তৈরি নানা পোশাক স্থানীয় গন্ডি পেরিয়ে এখন যাচ্ছে বিশ্ববাজারে। দামে কম ও মানে ভালো হওয়ায় এখানকার পোশাকের চাহিদা বাড়ছে। এ শিল্প ঘিরে কর্মসংস্থান হয়েছে লক্ষাধিক মানুষের। রপ্তানি বাজার সম্প্রসারণসহ আরও কিছু উদ্যোগ নিলে এ শিল্প অনেক বেশি সম্ভাবনাময় হয়ে উঠবে বলছেন উদ্যোক্তারা। উত্তরের জেলা নীলফামারীতে শীতের তীব্রতা থাকে বেশি। শীতবস্ত্রের চাহিদাও থাকে বাড়তি। এই চাহিদা পূরণে সৈয়দপুরে গড়ে উঠেছে ক্ষুদ্র পোশাক কারখানা। যেখানে ফেলনা কাপড় (ঝুট) দিয়ে বিভিন্ন শীতবস্ত্র তৈরি হয়। এ শীতবস্ত্র দেশের চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে ভারত, নেপাল ও ভুটানে। ক্ষুদ্র পোশাক কারখানার মালিকেরা ঢাকার উত্তরা, মিরপুর, সাভার, গাজীপুরের টঙ্গী, ঢাকার নারায়ণগঞ্জ, চট্টগ্রামসহ বিভিন্ন স্থানের পোশাক কারখানা থেকে ঝুট কাপড় কেজি দরে সংগ্রহ করেন। এসব পোশাকের বড় পাইকারি বাজার গড়ে উঠেছে সৈয়দপুরে। উত্তরাঞ্চল ছাড়াও দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে এখানে ব্যবসায়ীরা এসে ঝুট কাপড় দিয়ে তৈরি পোশাক কিনে নিয়ে যান। সৈয়দপুর শহরের ক্ষুদ্র পোশাক কারখানাগুলোতে তৈরি হচ্ছে বাহারি ডিজাইনের জ্যাকেট, বিভিন্ন সাইজের ট্রাউজার, টি-শার্ট, হাফ প্যান্ট, জিনস প্যান্ট। দেশের বাইরে ভারতের আসাম রাজ্যে এসব পোশাকের চাহিদা সবচেয়ে বেশি। এরপর ভুটান ও নেপালেও কদর রয়েছে। ২০০২ সালে রপ্তানিমুখী ক্ষুদ্র গার্মেন্ট মালিক গ্রুপ নামে পোশাক প্রস্তুতকারকদের সংগঠন গড়ে ওঠার পর এর পরিধি বেড়ে যায়। এখানে পাঁচ শতাধিক ক্ষুদ্র শিল্প-কারখানার মালিকের মধ্যে মাত্র সাতজনের রপ্তানির লাইসেন্স আছে। এসব লাইসেন্স ব্যবহার করে বছরে ৫-৭ লাখ ডলারের এবং ঢাকা ও রংপুরের কয়েকজন ব্যবসায়ীর লাইসেন্সে আরও ২-৩ লাখ ডলারের পণ্য রপ্তানি হয়। করোনার কারণে গত দুই বছর রপ্তানি প্রায় অর্ধেকে নেমে এসেছিল। এবার করোনার ধাক্কা কাটিয়ে আগের চেয়ে বেশি রপ্তানির আশা কারখানা মালিকদের। এ ছাড়া ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা এসব কারখানা নির্দিষ্ট জায়গায় নিয়ে একটি পল্লী গড়ে তোলার দাবি জানিয়ে আসছেন তারা। এতে এ শিল্পের সম্প্রসারণ এবং রপ্তানি আরও বাড়বে। শহরের গার্ডপাড়ার ক্ষুদ্র পোশাক কারখানা মালিক ওমর ফারুক জানান, মহামারি করোনার কারণে সৈয়দপুর শহরের দুই শতাধিক ক্ষুদ্র গার্মেন্ট কারখানা বন্ধ হয়ে যায়। সম্প্রতি এসব কারখানা আবার চালু হতে শুরু করেছে। কারণ ভারত, নেপাল ও ভুটান থেকে অর্ডার আসছে। কাজ পেয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় ক্ষুদ্র গার্মেন্ট কারখানাগুলো। সৈয়দপুর রপ্তানিমুখী ক্ষুদ্র গার্মেন্ট মালিক সমিতির সভাপতি আকতার হোসেন খান বলেন, ঝুট কাপড় চার-পাঁচ হাত ঘুরে আমাদের কাছে আসে। ঢাকা বা নারায়ণগঞ্জ থেকে ঝুট কাপড় কিনতে গেলে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে কিনতে হয়। সরাসরি গার্মেন্ট থেকে কিনতে পারলে আরও মুনাফা করা যেত।

সর্বশেষ খবর