ঝিনাইদহ জেলা শহরে দিন দিন বাড়ছে ইজিবাইক। তিন চাকার এ বাহনের বেপরোয়া চলাচলের কারণে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা। যত্রতত্র যাত্রী ওঠা-নামা এবং পার্কিং করায় লেগেই থাকে যানজট। চরম ভোগান্তির শিকার হন শহরবাসী। ইজিবাইকের দৌরাত্ম্য থেকে পরিত্রাণ পেতে জেলা ট্রাফিক বিভাগ ও পৌর মেয়র নানা কর্মসূচি হাতে নিলেও তা বাস্তবায়ন হয়নি। ফলে ইজিবাইকের ভোগান্তি থেকে মুক্তি মিলছে না ঝিনাইদহ শহরের সাধারণ মানুষের।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ঝিনাইদহ শহরে বর্তমানে প্রয়োজনের তুলনায় পাঁচগুণ বেশি ইজিবাইক চলাচল করছে, যার সংখ্যা প্রায় ৫ হাজার হবে। অপ্রাপ্তবয়স্ক ও অদক্ষ চালকদের কারণেই সড়কে যানজট হচ্ছে। প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। পঙ্গুত্ববরণের পাশাপাশি দুর্ঘটনায় প্রাণ হারাচ্ছেন কেউ কেউ। ঝিনাইদহ পৌরসভার তথ্যমতে, শহরে ইজিবাইকের সংখ্যা দেড় হাজারের মতো। যানজট কমাতে পৌরসভা থেকে লাইন্সেস অনুমোদন করা হচ্ছে এসব ইজিবাইকের অনুকূলে। এর বাইরে শহরের ভিতর যে ইজিবাইক দেখা যায় তার অধিকাংশই অন্য উপজেলা থেকে এসে ভাড়া খাটে। ফলে বর্তমানে ঝিনাইদহ শহরে তীব্র যানজট সৃষ্টি হচ্ছে। জানা যায়, শহরের প্রাণকেন্দ্র পায়রা চত্বর, এইচএসএস সড়ক, বঙ্গবন্ধু সড়ক, মুজিব চত্বর, হাটের রাস্তাসহ বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ সড়কে প্রতিনিয়ত দেখা যায় ইজিবাইকের জটলা। এ জট নিরসনে ট্রাফিক পুলিশ লাগাতার চেষ্টা করলেও সুরাহা মিলছে না। ঝিনাইদহ সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী ফারহানা ইয়াসমিন জানান, হামদহ এলাকা থেকে তার স্কুলে আসতে সময় লাগে ১০ মিনিট। কিন্তু ইজিবাইকের কারণে প্রায়ই যানজটে পড়ে রিকশায় বসে থাকতে হয় ৩০ মিনিট। রাস্তার পাশে ফল ব্যবসায়ী সেলিম মিয়া বলেন, ইজিবাইকগুলো দিন দিন বেপোরোয়াভাবে চলাচল করছে। চলন্ত অবস্থায় হঠাৎ রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে পড়ে এসব যান। এতে বিড়ম্বনায় পড়তে হয় পথচারী ও অন্য যানবাহনের চালক-যাত্রীদের। ঝিনাইদহের ট্রাফিক পরিদর্শক গোলাম মোর্শেদ জানান, অদক্ষ চালকের কারণে ইজিবাইকে বেশি দুর্ঘটনা ঘটে। দিন দিন ইজিবাইক বেড়ে যাওয়ায় যানজট এখন নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে গেছে। প্রশিক্ষণপ্রাপ্তরা ইজিবাইক চালালে দুর্ঘটনা কমবে বলে তিনি মনে করেন। ঝিনাইদহ পৌরসভার মেয়র কাইয়ুম শাহরিয়ার জাহেদী হিজল জানান, শহরে ইজিবাইক চলাচল নিয়ে আমাদের বেশকিছু পরিকল্পনা আছে। নানা প্রতিবন্ধকতায় এখনো সেগুলো বাস্তবায়ন করা সম্ভব হয়নি।