মঙ্গলবার, ৫ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বুড়িমারী বন্দরে বাণিজ্যে ভাটা

হরতাল-অবরোধের প্রভাবে কমেছে রাজস্ব

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

বুড়িমারী বন্দরে বাণিজ্যে ভাটা

ডলার সংকট, অবরোধ, হরতালসহ নানা কারণে লালমনিরহাটের বুড়িমারী স্থলবন্দর দিয়ে আমদানি-রপ্তানিতে ভাটা পড়েছে। কমেছে রাজস্ব আয়। একাধিক ব্যবসায়ী, স্থলবন্দর এবং শুল্ক স্টেশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে। ব্যবসায়ীরা বলছেন, আমদানির লক্ষ্যে তফসিলি ব্যাংক থেকে লেটার অব ক্রেডিট (এলসি) বা প্রত্যয়নপত্র চাহিদা অনুযায়ী পাওয়া যাচ্ছে না। কয়েক মাস আগে চাহিদা অনুযায়ী আমদানি পণ্য মূল্যের ২০ শতাংশ থেকে ২৫ শতাংশ নগদ অর্থ ব্যাংকে জমা দেওয়া হলে ব্যাংক পুরো অর্থ পরিশোধের দায় নিয়ে আমদানিকারককে প্রত্যয়নপত্র দিত। পণ্য এনে (আমদানি) বিক্রি করে শর্তানুযায়ী অবশিষ্ট টাকা ব্যাংকে জমা দিতেন আমদানিকারকরা। কিন্তু এ সুযোগ এখন দিচ্ছে না ব্যাংকগুলো। একাধিক ব্যাংকের ব্যবস্থাপক জানান, ব্যাংক সংশ্লিষ্ট ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ও দেশে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ ঠিক রাখতে ব্যবসায়ীদের কম এলসি দেওয়া হচ্ছে। ব্যবসায়ীদের দাবি, ব্যবসা কমে যাওয়ার অন্যতম কারণ হলো ডলার-সংকট। চাহিদা অনুযায়ী ডলারের অভাবে এলসি না পাওয়ায় ব্যবসা করা সম্ভব হচ্ছে না। পণ্য আমদানি ডলারের যে দরে করা হলো, পরে বিল পরিশোধ করতে গেলে এর দর বৃদ্ধির কথা বলে ব্যাংক কর্তৃপক্ষ বেশি টাকা নেয়। এতে পণ্য আমদানি করে লাভ নয় বরং ক্ষতি হচ্ছে। এ কারণে অনেক আমদানিকারক পণ্য আমদানি করেছেন না। এতে বন্দরে ব্যবসায় ধস নেমেছে। এ ছাড়া অবরোধ, হরতালসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় গাড়িতে আগুন দেওয়ায় ঝুঁকি নিয়ে ব্যবসা করতে রাজি হচ্ছেন না অনেক আমদানি-রপ্তানিকারক। চালকরাও দূরদূরান্তে পণ্যবাহী গাড়ি নিয়ে যেতে ও আনতে নিরাপত্তার শঙ্কা করছেন। বুড়িমারী স্থলবন্দরের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেরি শিপিং লাইনসের স্বত্বাধিকারী রেজাউল করিম রেজওয়ান বলেন, ‘ডলারের বাজার স্থিতিশীল নয়।’ আমদানিকারক রাইসা এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবু সাঈদ বলেন, ‘আন্তর্জাতিক বাজারে ডলার সংকট। দেশে ডলারের দরও ঠিক নেই। একেক ব্যাংকে একেক দর। ব্যবসায় লস হচ্ছে। উল্টাপাল্টা দরের কারণে এলসি বন্ধ রাখছি।’ ইসলামী ব্যাংক পাটগ্রাম শাখার ব্যবস্থাপক আখতারুল ইসলাম বলেন, ‘অ্যাভেইলেবল (সহজে) এলসি দেওয়া হচ্ছে না। পণ্যের গুরুত্ব ও চাহিদা বুঝে এলসি দেওয়া হচ্ছে। বুড়িমারী কাস্টমসের উপপরিচালক গিয়াস উদ্দিন বলেন, ডলার সংকট প্রকট আকার ধারণ করায় বন্দরে ব্যবসা-বাণিজ্য কমেছে। ফলে আয় কিছুটা কমেছে। এ সংকট কতদিনে নিরসন হবে তা বলা মুশকিল।

সর্বশেষ খবর