বুধবার, ৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

অসময়ে পিঁয়াজ চাষে সম্ভাবনা

ভালো ফলন ও দাম পাওয়ায় আগ্রহ বাড়ছে

বাবুল আখতার রানা, নওগাঁ

অসময়ে পিঁয়াজ চাষে সম্ভাবনা

নওগাঁর একটি পিঁয়াজ খেত -বাংলাদেশ প্রতিদিন

পিঁয়াজের নতুন জাত নাসিক রেড এন-৫৩। গ্রীষ্মকালীন এই ফসলের ফলন বেশ ভালো, অনেক লাভজনক। কৃষকের তেমন কোনো খরচ নেই। ফলে ভালো ফলন ও আশানুরূপ দাম পাওয়ায় এ পিঁয়াজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে নওগাঁর কৃষকদের। নওগাঁর বদলগাছীর কোলা ইউনিয়নের কেশাইল গ্রামের কৃষক আবদুস ছালাম জানান, তিনি ৮ শতাংশ জমিতে গ্রীষ্মকালীন নতুন জাতের পিঁয়াজ ‘নাসিক এন-৫৩’ আবাদ করেছেন। বীজ, সারসহ অন্যান্য উপকরণ দিয়েছে উপজেলা কৃষি অফিস। মাত্র এক মাসের মধ্যে পিঁয়াজে গুটি আসতে শুরু করেছে। আরও এক মাসের মধ্যে তা তোলা যাবে। তিনি বলেন, এই চারা এত ছোট যে, প্রথমে আমি বিশ্বাস করতে পারিনি। জমির পিঁয়াজ অনেক সুন্দর হয়েছে। আশা করছি, প্রায় ৩০ মণ পিঁয়াজ পাব। নিজেদের খাবার জন্য রেখে বাকিটা বাজারে বিক্রি করব। যা বিক্রি হবে তার সবটুকুই লাভ। কৃষি অফিস থেকে নতুন এই জাতের পিঁয়াজের আবাদ করার জন্য আমাদের উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। একই ইউনিয়নের কেশাইল দক্ষিণপাড়া গ্রামের আরেক কৃষক রোস্তম আলী চঞ্চল বলেন, আমি এবার ২২ শতক জমিতে নতুন এ জাতের পিঁয়াজ লাগিয়েছি। দুই মাসের মধ্যে প্রায় ৫৫-৬০ মণ পিঁয়াজ পেয়েছি। ইতোমধ্যে অনেক পিঁয়াজ পাইকারি ৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি। বিনামূল্যে বীজ ও সারসহ অন্যান্য উপকরণ কৃষি অফিস থেকে পেয়েছি। এখানে নিজের পরিশ্রম বাদে সবকিছুই বিনামূল্যে পেয়েছি। কৃষি বিভাগের আশা, সারা বছর পিঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে রাখতে নাসিক এন-৫৩ জাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। স্থানীয় চাষিরা বলেন, বীজ পাওয়ায় পিঁয়াজ থেকে আমরা ভালোই লাভ করতে পেরেছি। বদলগাছী কৃষি অফিসের উপ-সহকারী কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বলেন, আমরা কৃষকদের বীজের সঙ্গে ২০ কেজি ডিএপি, ২০ কেজি পটাশ দিয়েছি। অন্যান্য উপকরণসহ পরামর্শমূলক সহযোগিতা সব সময় করছি। নাসিক ফিফটি থ্রি বা এন-৫৩ জাতের এই পিঁয়াজের এক কেজি বীজ দিয়ে এক বিঘা জমি চাষ করা যায়। এর পরিচর্যা খরচও কম, সেটাও আমরা দিয়েছি। ফলন ভালো হলে ৭-৮টি পিঁয়াজে এক কেজি হয়। বিঘা প্রতি ৭০-৮০ মণ পিঁয়াজ হয়ে থাকে।

এর পাতাও সবজি হিসেবে খাওয়া যাবে। এটি লাগানোর পর সর্ব্বোচ্চ দুই মাসের মধ্যে বাজারে তুলতে পারবে কৃষক।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাবাব ফারহান বলেন, নাসিক এন-৫৩ জাতটি ভারতীয়। পিঁয়াজ সংকট দূর করার লক্ষ্যে কৃষকদের অধিক ফলনশীল এই পিঁয়াজ চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। আমরা এই উপজেলায় ১৫০ কৃষককে প্রণোদনা দিয়েছি। পরিচর্যার জন্য নগদ টাকাও দেওয়া হয়েছে। কৃষি বিভাগ অধিক লাভজনক এই পিঁয়াজ চাষে কৃষকদের সব ধরনের পরামর্শ দেওয়ায় আবাদ আশানুরূপ ভালো হয়েছে।

সর্বশেষ খবর