শুক্রবার, ৮ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ইটভাটায় যাচ্ছে ফসলি জমির মাটি

হারাচ্ছে উর্বরতা, প্রভাব পড়ছে চাষাবাদে

নীলফামারী প্রতিনিধি

ইটভাটায় যাচ্ছে ফসলি জমির মাটি

মাটি কেটে তোলা হচ্ছে ট্রাক্টরে -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নীলফামারীর সৈয়দপুর উপজেলার কামারপুকুর, কাশিরাম বেলপুকুর, বাঙালিপুর, বোতলাগাড়ী ও খাতামধুপুর ইউনিয়নে ৫০টির ওপরে ইটভাটা গড়ে উঠেছে। কামারপুকুর ইউনিয়নেই রয়েছে ২৩টি। এসব ইটভাটায় দূর-দূরান্ত থেকে আবাদযোগ্য জমির মাটি কেটে আনা হচ্ছে। এক শ্রেণির দালাল জমি মালিকদের নানা প্রলোভন দেখিয়ে এসব জমির মাটি কেটে বিক্রি করছেন। নির্বিচারে টপ সয়েল কাটায় এসব জমির উর্বরতা শক্তি হারিয়ে যাচ্ছে। যার প্রভাব পড়তে শুরু করেছে ফসল আবাদে। মাটি কাটা ও আবাদি জমিতে বাসাবাড়ি গড়ে তোলায় আবাদযোগ্য জমির পরিমাণও কমে যাচ্ছে।

ইউনিয়নের জমির মালিক এমদাদুল হক বলেন, ইটভাটা মালিকদের সঙ্গে ২-৩ ফুট মাটি কাটার শর্তে জমি দেওয়া হয়। কিন্তু তারা এমনভাবে মাটি কেটে নিয়ে যায় সেখানে বড় ধরনের গর্ত সৃষ্টি হয়। এভাবে মাটি কাটার কারণে বৃষ্টি হলেই জমিতে পানি জমে থাকে। ফলে ৫-৬ বছর সেই জমিতে আর কোনো ফসল আবাদ হয় না।  খাতামধুপুর ইউনিয়নের বাসিন্দা মতিয়ার রহমান বলেন, ইটভাটার কারণে আমাদের এলাকায় ফসল ভালো হচ্ছে না। এ ছাড়া ইটভাটার ধোঁয়ার কারণে আম, কাঁঠাল আকারে ছোট ও ফসলের আবাদ খারাপ হচ্ছে। ট্রাক্টরগুলোও মাটি পরিবহনে কোনো নিয়মনীতি মানছে না। ধুলোবালি উড়িয়ে সড়ক ও মহাসড়কে চলাচল করছে। ফলে পথচারীর চোখে ধুলোবালি পড়ছে। হোটেল-রেস্তোরাঁয় তৈরি খাবারে তা উড়ে গিয়ে পড়ছে।

ইটভাটা মালিকেরা বলছেন, কার্তিক মাসে মাটি সংগ্রহের মাধ্যমে ইটভাটার কার্যক্রম শুরু হয়। ইট তৈরির জন্য বিভিন্ন এলাকার উঁচু জমি থেকে মাটি সংগ্রহ করা হয়। তাছাড়া আমাদের এলাকার বেশির ভাগ ইটভাটায় উঁচু চিমনি ব্যবহার করায় পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না। সৈয়দপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা ধীমান ভূষণ বলেন, আবাদি জমিতে ইটভাটা তৈরিতে ঘোর আপত্তি জানানো হলেও তা মানা হচ্ছে না। পরিবেশ অধিদফতর থেকে অনুমতি নিয়ে দিব্যি ইটভাটা চালিয়ে যাচ্ছেন মালিকরা। নির্বিচারে জমির টপ সয়েল কাটায় জমির উর্বরতা শক্তি হারিয়ে যাচ্ছে। মাটিকাটা ও আবাদযোগ্য জমিতে ঘরবাড়ি গড়ে তোলায় আবাদি জমির পরিমাণও কমছে।

সর্বশেষ খবর