রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

অস্থির বাজারে স্বস্তি গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ

প্রতি বিঘায় ফলন ১০০-১১০ মণ

মো. রফিকুল আলম, চাঁপাইনবাবগঞ্জ

অস্থির বাজারে স্বস্তি গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ

পিঁয়াজ তোলায় ব্যস্ত কৃষক -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ভারত পিঁয়াজ রপ্তানি বন্ধের সিদ্ধান্ত জানানোর পর দেশের ব্যবসায়ীরা কারসাজি করে বাজারে বাড়িয়ে দিয়েছেন পিঁয়াজের দাম। মাত্র এক দিনের ব্যবধানে চাঁপাইনবাবগঞ্জে প্রতি কেজি পিঁয়াজে ৯০ থেকে ১০০ টাকা বাড়ানো হয়। এমন অবস্থায় গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ মানুষের মাঝে কিছুটা স্বস্তি এনে দিতে পারে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। কৃষি বিভাগ বলছে, গ্রীষ্মকালীন ও মুড়িকাটা পিঁয়াজ চাষ সম্প্রসারণ করা গেলে কমে আসবে আমদানি নির্ভরতা।

কৃষি অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলায় ৪ হাজার ৫০০ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষ হয়েছে। ভারতের এন-৫৩ জাতের পিঁয়াজ চাষ করে চাষিরা প্রতিবিঘায় ফলন পাচ্ছে ১০০ থেকে ১১০ মণ। এ পিঁয়াজের স্বাদ ও আকার ভারত থেকে আমদানি করা পিঁয়াজের মতোই। সদর উপজেলার রানীহাটি ইউনিয়নের রামচন্দ্রপুর এলাকার পিঁয়াজ চাষি সায়েম আলী জানান, কর্মসংস্থানের জন্য বিদেশ যেতে ব্যর্থ হয়ে ২০২১ সাল থেকে স্বল্প পরিসরে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষ শুরু করেন তিনি। ফলন ভালো হওয়ায় এ বছর তিনি প্রায় ৮ বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষ করেছেন। খেতে ফলন হয়েছে ভালো। বিঘাপ্রতি ১০০ থেকে ১২০ মণ পর্যন্ত ফলন পাওয়া যাচ্ছে। এক বিঘা জমিতে গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষে খরচ হয় সর্বোচ্চ ৪৫ হাজার টাকা। উৎপাদন হওয়া পিঁয়াজ সর্বনিম্ন সাড়ে ৩ লাখ টাকায় বিক্রি করা যায়। লাভ বেশি হওয়ায় এ এলাকায় গ্রীষ্মকালীন পিঁয়াজ চাষে আগ্রহ বাড়ছে। তিনি আরও জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে বর্ষায় পিঁয়াজের পুল রোপণ করি। ৯০ দিনের মধ্যেই পিঁয়াজ তোলার উপযোগী হয়ে গেছে। এখন বাজারজাত করা যাচ্ছে এই পিঁয়াজ। এই সময় বাজারে দেশি পিঁয়াজ নেই বললেই চলে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক ড. পলাশ সরকার জানান, সাধারণত দেশি জাতের পিঁয়াজ বিঘাপ্রতি ফলন হয় ৩০ থেকে ৪০ মণ। কিন্তু গ্রীষ্মকালীন এন-৫৩ জাতের পিঁয়াজ উৎপাদন হয় বিঘায় ১০০ থেকে ১২০ মণ। তাছাড়া অসময়ে এ পিঁয়াজ বাজারে বিক্রি করায় চাষিরাও অধিক দাম পান। তিনি আরও বলেন, জেলায় অনেক আমবাগান গড়ে উঠেছে, যেখানে আলো-বাতাস পর্যাপ্ত থাকে। এসব বাগানেও পিঁয়াজ চাষ করা সম্ভব। তাই এই পিঁয়াজ চাষ সম্প্রসারণে প্রণোদনা দেওয়া হচ্ছে। আমরা এই পিঁয়াজ চাষে সক্ষম হলে বিদেশ থেকে আমদানির প্রয়োজন পড়বে না।

সর্বশেষ খবর