শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

৪৬ গবাদি পশুর মৃত্যু খুরারোগে

পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে রিপোর্ট মেডিকেল টিমের

দিনাজপুর প্রতিনিধি

৪৬ গবাদি পশুর মৃত্যু খুরারোগে

দিনাজপুরের বীরগঞ্জে একটি খামারের ৪৬টি গবাদি পশু খুরারোগে মারা গেছে বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ অধিদফতর। গতকাল জেলা ভেটেরিনারি অফিসার ডা. আশিকা আকবর তৃষ্ণা প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন। বীরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ দফতর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে আয়োজিত প্রেস বিফিংয়ে তিনি বলেন, ওই খামারে এত সংখ্যক গবাদি পশুর মৃত্যুর পাঁচটি কারণ চিহ্নিত করে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম। পরে রোগের ইতিহাস, খামার পরিদর্শন, রোগের লক্ষণ, ময়নাতদন্ত এবং ল্যাবরেটরি টেস্টের ফলাফলের ভিত্তিতে এসব গবাদি পশুর মৃত্যুর মূল কারণ খুরারোগের সেরোটাইপ-০ এবং এশিয়া-১ ভাইরাস বলে চিহ্নিত করা হয়। ওই খামারের ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত নাজুক বিধায় আক্রান্ত অবস্থায় খুরারোগের টিকা প্রয়োগজনিত ধকলের কারণে পাস্টুরেলা মাল্টোসিডা নামক সুবিধাদি ব্যাক্টেরিয়ার দ্বিতীয় পর্যায়ে সংক্রমণের মাধ্যমে হেমোরেজিক সেপ্টিসেমিয়া গবাদিপশুর মৃত্যুকে ত্বরান্বিত করেছে। খুরারোগ ভাইরাস ও পাস্টুরেলা মাল্টোসিডা ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ, অপর্যাপ্ত পানি সরবরাহের ব্যবস্থাপনার কারণে পানিশূন্যতায় অধিক মৃত্যু হয়েছে বলে চিহ্নিত করেছে ভেটেরিনারি মেডিকেল টিম। এ ঘটনায় ৯টি সুপারিশের কথা উল্লেখ করা হয়। আগামী দিনে এ ধরনের বিপর্যয় প্রতিরোধে পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, খামারিদের সচেতনতা বৃদ্ধি এবং খামারগুলোয় নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। প্রাণিসম্পদ অধিদফতরের যথাযথ রোগনির্ণয় ও চিকিৎসায় গত পাঁচ দিন ধরে খামারে গবাদি পশুর মৃত্যু হয়নি। এ ধরনের সংক্রমণে শতভাগ মৃত্যুর আশঙ্কা থাকলেও সবার সহযোগিতায় দ্রুত সময়ে খামারের গবাদি পশুর মৃত্যুহার শূন্যের কোটায় চলে আসা এবং খামারের ব্যবস্থাপনা নাজুক থাকা সত্ত্বেও ৫০ ভাগ গবাদি পশুর মৃত্যু আটকে গেছে। প্রেস বিফিংয়ে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. গোলাম কিবরিয়া, কাহারোল উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. আবু সরফরাস হোসেন, বীরগঞ্জ উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. ওসমান গনি এবং উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. শামীমা বেগম। এ ঘটনায় ৮০ লাখ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে আর্থিক সহায়তার আবেদনে উল্লেখ করেছেন ক্ষতিগ্রস্ত খামারি। উল্লেখ্য, বীরগঞ্জ উপজেলার সাতোর ইউনিয়নের প্রাণনগর ঘোষপাড়ার বাসিন্দা মৃত গীরেন্দ্রনাথ ঘোষের ছেলে গোপাল ঘোষ ও গোবিন্দ ঘোষের গরু খামারের শতাধিক গরু রোগাক্রান্ত হয়। ৫ ডিসেম্বর থেকে একের পর এক আক্রান্ত গরু মারা যেতে থাকে। ঘটনার পর থেকে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুটি মহিষসহ খামারের ৭০টি গবাদি পশু মারা যায়। ঘটনার পর মৃত গবাদি পশুর নমুনা সংগ্রহ করে ঢাকার কাজী আলাউদ্দিন রোডে অবস্থিত কেন্দ্রীয় রোগ অনুসন্ধান গবেষণাগারে প্রেরণ করা হয়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে গতকাল জেলা উপজেলার গণমাধ্যমকর্মীদের উপস্থিতিতে আনুষ্ঠানিক রোগের রিপোর্ট প্রকাশ করা হয়।

সর্বশেষ খবর