রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

পটুয়াখালীতে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ

হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে তিল ধারণের ঠাঁই নেই

সঞ্জয় দাস লিটু, পটুয়াখালী

পটুয়াখালীতে বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগ

পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ড -বাংলাদেশ প্রতিদিন

আবহাওয়া পরিবর্তনে পটুয়াখালীতে শীতজনিত রোগে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। এর মধ্যে শিশু রোগীই বেশি। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে এখন তিল ধারণের ঠাঁই নেই। এক বেডে একাধিক শিশুকেও দেওয়া হচ্ছে চিকিৎসা। বারান্দায় রেখেও চিকিৎসা সেবা দিতে হচ্ছে শিশুদের। রোগীর চাপে স্বাভাবিক চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে চিকিৎসক ও নার্সদের। হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু ওয়ার্ডে ৪৬টি বেড নির্ধারিত আছে। বর্তমানে এই ওয়ার্ডে ৬৩ শিশু রোগী চিকিৎসা নিচ্ছে। বৃহস্পতিবার ১০ শিশু ছাড়পত্র নিয়ে বাড়িতে চলে গেছে। গত তিন দিনে ৪০ শিশু সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেছে। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে নতুন নতুন রোগী আসছে হাসপাতালে। এর মধ্যে নিউমোনিয়া, ব্রোঙ্কাইটিস, অ্যাজমা, শ্বাসকষ্ট, ডায়রিয়াসহ শ্বাসতন্ত্রের বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত বেশির ভাগ শিশু। শয্যা সংকটে এক বেডে দুই শিশুকে চিকিৎসা দেওয়ায় এক শিশু থেকে অন্য শিশু ভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঘটনাও ঘটছে। শিশু রোগীর স্বজনদের অভিযোগ, মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা হয়েছে কিন্তু শয্যা সংখ্যা বাড়েনি। শিশুদের চিকিৎসা নিতে এসে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে। এক শিশুর রোগীর মা ইটবাড়িয়া এলাকার কণা আক্তার বলেন, তার মেয়ে রুকাইয়ার বয়স ৬ মাস। তিন দিন ধরে ঠান্ডা, কাশি, বমি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছেন। রোগীর চেয়ে বিছানা কম থাকায় কষ্ট হচ্ছে। আড়াই মাস বয়সী রাইয়ানের মা জানান, এক সপ্তাহ ধরে তার ছেলে নিমোনিয়ায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি আছে। তার সঙ্গে আড়াই বছরের রাহেলা রয়েছে। তার ভয় যদি সুস্থ শিশুটিও অসুস্থ হয়ে পড়ে। শিশু ওয়ার্ডে কর্তব্যরত নার্সরা জানান, শীত মৌসুমে শিশুদের ঠান্ডাজনিত রোগ বেশি দেখা দেয়। বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে শিশুরা। পর্যাপ্ত বেড ও অন্যান্য সরঞ্জামাদি কম থাকায় চিকিৎসা সেবা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। নির্ধারিত বেডের অতিরিক্ত বারান্দায় চারটি বেডের ব্যবস্থা করে রোগীর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. ওয়াহিদুজ্জামান শামীম জানান, নিউমোনিয়া, হাঁপানি ও শ্বাসকষ্টজনিত রোগী বেশি আসছে। বয়স্কদের তুলনায় শিশু রোগীর সংখ্যা বেশি। এসব রোগ এড়িয়ে চলতে সব সময় মাস্ক পরা ও শিশুদের শীতের পোশাক পরিয়ে রাখার পরামর্শ দেন তিনি। পটুয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডাক্তার দিলরুবা ইয়াসমিন লিজা বলেন, মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নতুন ৫০০ শয্যার কার্যক্রম চালু হলে বেডের সংকট কমবে। বর্তমানে শিশু রোগীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। একটু কষ্ট হলেও আমরা আপ্রাণ চেষ্টা করছি। শিশুদের চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছেন আমাদের চিকিৎসক ও নার্সরা।

 

সর্বশেষ খবর