রবিবার, ২৪ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

বিদ্যালয় মাঠে নির্মাণসামগ্রী

ধোঁয়া, বালু, বিটুমিন পোড়া দুর্গন্ধে ভুগছে এলাকাবাসী

নাটোর প্রতিনিধি

বিদ্যালয় মাঠে নির্মাণসামগ্রী

নাটোরের বড়াইগ্রামে রামাগাড়ী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে রাখা নির্মাণ সামগ্রী -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নাটোরের বড়াইগ্রামে রামাগাড়ী উচ্চবিদ্যালয় মাঠে নির্মাণসামগ্রী রেখে চলছে পার্শ্ববর্তী এলাকার রাস্তা সংস্কার কাজ। এতে খেলাধুলার সুযোগ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে স্কুলের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় তরুণরা। এ ছাড়া বিষাক্ত ধোঁয়া, ধুলাবালি, বিটুমিন ও ঝুট পোড়ানোর গন্ধ ছড়িয়ে স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ছেন বিদ্যালয় সংশ্লিষ্টসহ রামাগাড়ী বাজারের ব্যবসায়ী ও গ্রামের বাসিন্দারা। স্থানীয়রা জানান, বাগাতিপাড়া উপজেলার চন্দ্রখৈর থেকে দয়ারামপুর অভিমুখী রাস্তা সংস্কারের জন্য ওই বিদ্যালয়ের মাঠে নির্মাণসামগ্রী রাখা হয়েছে। ঠিকাদার ওই বিদ্যালয় মাঠেই পিচ (বিটুমিন) গলিয়ে রাস্তা সংস্কার কাজ শুরু করেছেন। সারা দিন এ কাজ চলে। এতে বিষাক্ত ধোঁয়া, ঝুট পোড়ানোর গন্ধ ও মিহি বালু ছড়িয়ে রামাগাড়ী বাজারের ব্যবসায়ী ও ক্রেতাসহ মাঠসংলগ্ন বাসিন্দারা পড়েছেন স্বাস্থ্যঝুঁকিতে। সরেজমিন দেখা যায়, স্কুল ভবনের সামনে দিয়ে বড় পলিথিন দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে। মাঠজুড়ে বালু, পাথর আর বিটুমিন। এক পাশে স্তূপ করে রাখা হয়েছে চুলায় জ্বাল দেওয়ার ঝুট কাপড়। মাঠে চুলা তৈরি করে পিচ গলানোসহ মিক্সার মেশিনে পিচের সঙ্গে পাথর বালু মেশানো হচ্ছে। চুলা ও মিক্সার মেশিনের কালো ধোঁয়াসহ বালু ও ছাই উড়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ছে। রামাগাড়ী উচ্চবিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিফাত হাসান ও হেলাল সরকার জানায়, ‘বার্ষিক পরীক্ষার পর বর্তমানে স্কুল ছুটি। এখন বন্ধু-বান্ধবদের নিয়ে মাঠে খেলাধুলা করার সময়। কিন্তু মাঠজুড়ে রাস্তার নির্মাণসামগ্রী রাখায় আমরা খেলাধুলা করতে পারছি না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রামাগাড়ী গ্রামের এক গৃহবধূ বলেন, সব সময় বাতাসে বালু উড়ে এসে ঘরের সব আসবাবপত্র, কাপড়চোপড়, খাদ্যদ্রব্যে পড়ছে। নাকে মুখে ধোঁয়া ও বালু ঢুকে বাচ্চারাও অসুস্থ হয়ে পড়ছে। রামাগাড়ী বাজারের কয়েকজন ব্যবসায়ীও একই মত প্রকাশ করে বলেন, উড়ে আসা বালু পড়ে দোকানের বিভিন্ন পণ্য নোংরা হচ্ছে। জিনিসপত্র কিনতে আসা লোকজন বিরক্ত হচ্ছে। একাধিক গ্রামবাসী জানান, পিচ পোড়ানোর গন্ধে বমি আর মাথা ঘোরানোসহ নানা সমস্যা হওয়ায় ঠিকমতো খেতে পারি না। ক্রীড়ামোদী কাইয়ুম হোসেনসহ অনেকে জানান, আগে আমরা নিয়মিত মাঠে খেলাধুলা করতাম। কিন্তু মাঠে পাথর, বালু রাখার পর থেকে তা বন্ধ। কাজ শেষ হয়ে গেলেও ঘাসের ভিতরে পড়ে থাকা পাথর কুচির কারণে মাঠ খেলার অনুপযোগী হয়ে পড়বে। মাঠে কাজের তদারকিতে থাকা ঠিকাদারের ম্যানেজার নজরুল ইসলাম দাবি করেন, প্রধান শিক্ষক ও সভাপতির অনুমতি নিয়েই আমরা মাঠে কাজ করছি। তারপরও কিছু সমস্যা হতে পারে, তাতে আমাদের কিছু করার নেই। প্রধান শিক্ষক আবদুল হালিম জানান, রাস্তা সংস্কারের সুবিধার্থে মাঠে নির্মাণসামগ্রী রাখার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আবু রাসেল বলেন, এ ব্যাপারে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর