মঙ্গলবার, ২৬ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

কুয়াশার দাপট, জেঁকে বসছে শীত

ফেরি চলাচল বন্ধ, ঠান্ডাজনিত রোগী বাড়ছে

প্রতিদিন ডেস্ক

কুয়াশার দাপট, জেঁকে বসছে শীত

লালমনিরহাটে কুয়াশায় আচ্ছন্ন জনপদ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

কুয়াশার সঙ্গে হিমেল বাতাসে জেঁকে বসেছে শীত। দেশের প্রায় সবখানেই শীতের দাপট চরমে পৌঁছেছে। কুয়াশা আর শীতে কাঁপছে উত্তরের প্রায় সব এলাকা। মধ্যরাত থেকে যানবাহনসহ মানুষও বেশ অসুবিধায় পড়ছে চলাচলে। সন্ধ্যার পর থেকে দিনের মধ্যভাগ পর্যন্ত কুয়াশায় মোড়ানো থাকছে দেশের অধিকাংশ এলাকা। আগামী দুই-এক দিন এ পরিস্থিতি থেকে উন্নতির সম্ভাবনা নেই বলে জানাচ্ছে আবহাওয়া অফিস। এদিকে শীতের কারণে হাসপাতালগুলোতে প্রতিদিনই বাড়ছে ঠান্ডাজনিত রোগী। ঘন কুয়াশার কারণে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া, আরিচা-কাজিরহাট ও ধাওয়াপাড়া-নাজিরগঞ্জ নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রয়েছে। এতে মাঝ পদ্মায় আটকা পড়ছে ছোট-বড় সাতটি ফেরি; দুর্ভোগে পড়েছেন যানবাহনের শ্রমিক, ব্যবসায়ী ও যাত্রীরা। রবিবার রাত ১টার দিকে দুর্ঘটনা এড়াতে ওই তিন নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখেন কর্তৃপক্ষ। ঘাট কর্তৃপক্ষ জানান, রাত ১০টা থেকেই ওই তিনটি নৌ-রুটে কুয়াশা পড়তে শুরু করে। রাত ১টার দিকে কুয়াশার মাত্রা আরও ঘন হয়। এ সময় দুর্ঘটনা এড়াতে রাতে নৌরুটগুলোতে ফেরি চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ ঘোষণা করেন কর্তৃপক্ষ। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) আরিচা কার্যালয়ের উপ-মহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) শাহ মোহাম্মদ খালেদ নেওয়াজ জানান, কুয়াশার মধ্যে মাঝ নদীতে নোঙ্গর করে আছে সাতটি ফেরি।

পিরোজপুর : পিরোজপুরে ঘন কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহন। গতকাল ভোর থেকে কুয়াশার ঘনত্ব বেশি থাকায় যানবাহন চলাচলে অসুবিধা হয়। ফলে গাড়িগুলোকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলতে দেখা যায়। এ কারণে সকাল থেকে শহরসহ জেলার সঙ্গে বিভিন্ন উপজেলা ও দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল রয়েছে সীমিত। রিকশা, ভ্যান, অটোরিকশা চলাচলও রয়েছে সামান্য।

চুয়াডাঙ্গা : শীতের তীব্রতা কিছুটা কমলেও ঘন কুয়াশার আধিক্য বেড়েছে। রাত থেকে শুরু হওয়া কুয়াশা ভোরে বাড়ে। সকালে তীব্র আকার ধারণ করায় হেডলাইট জ্বালিয়ে ধীরগতিতে চলাচল করছে যানবাহন। আরও কয়েক দিন ঘন কুয়াশা থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন চুয়াডাঙ্গা আঞ্চলিক আবহাওয়া পর্যবেক্ষণাগারের জ্যেষ্ঠ পর্যবেক্ষক রকিবুল হাসান।

লালমনিরহাট : লালমনিরহাটে জেঁকে বসেছে শীত। তাপমাত্রা নেমেছে ১২.৮ ডিগ্রিতে। ফলে শীতের দাপটে কাবু হয়ে পড়েছে এ অঞ্চলের মানুষ। ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে আছে গোটা জনপদ। গতকাল দুপুর পর্যন্ত দেখা মিলেনি সূর্যের। লালমনিরহাটের সিভিল সার্জন ডা. নির্মলেন্দু রায় জানান, গত ৭২ ঘণ্টায় সদর হাসপাতালসহ অন্য ৫টি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ৮৫ জন ঠান্ডাজনিত রোগী ভর্তি হয়েছে। একই সময়ে ২৫৩ জন রোগী বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিয়েছে। শ্রমজীবী ও খেটে খাওয়া মানুষ শীত ও ঠান্ডার কারণে কাজে বের হতে পারছে না। শীতকষ্টে পড়েছে নদ-নদী তীরবর্তী চরের বাসিন্দারা। এদিকে রবিবার থেকে ঘন কুয়াশায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে থাকছে লালমনিরহাটের আশপাশ। রাতভর বৃষ্টির মতো কুয়াশা ঝরতে থাকে। সন্ধ্যা থেকে ঘন কুয়াশার কারণে মহাসড়কে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে যানবাহনগুলো। তবে বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে কমতে থাকে কুয়াশার পরিমাণ। দিনের বেলা খানিক সময়ের জন্য সূর্যের দেখা মিললেও কাক্সিক্ষত উত্তাপ ছড়াতে না পারার কারণে শীতের তীব্রতা অনুভূত হয় দিনজুড়ে। বিকাল গড়াতেই আবারও শীত অনুভূত হতে থাকে। কুড়িগ্রামের রাজারহাট কৃষি আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুবল চন্দ্র সরকার জানান, গতকাল সকাল ৬টায় লালমনিরহাট জেলায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা আগামীতে আরও কমতে পারে।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর