বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

খাল ভরাটে বন্ধ পানি নিষ্কাশন

রবিশস্য আবাদ করা যাচ্ছে না ৩০ হাজার হেক্টর জমিতে

রোকনুজ্জামান পারভেজ, শরীয়তপুর

খাল ভরাটে বন্ধ পানি নিষ্কাশন

শরীয়তপুরে খাল ভরাট করে নির্মাণ করা হয়েছে বড় বড় দালান ও অসংখ্য প্রতিষ্ঠান। পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় খাল শুকিয়ে গেছে। এর প্রভাবে বিল ও নিচু এলাকায় জলবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এতে রবিশস্য আবাদ করা যাচ্ছে না জেলার প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর আবাদি জমিতে। এ ছাড়া শরীয়তপুর পৌর এলাকায় পুকুর, খাল, বিল দখল হয়ে যাওয়াতে সামান্য বৃষ্টি হলেই রাস্তা-ঘাটে পানি জমে যায়। এর ফলে এখানে জনদুর্ভোগ চরমে পৌঁছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, কীর্তিনাশা নদী সংযুক্ত খালগুলো কোনো নিয়ম-নীতির তোয়াক্কা না করেই দখল করছেন প্রভাবশালী মহল। এসব জায়গায় তোলা হচ্ছে দোকানঘরসহ বিভিন্ন স্থাপনা। এতে পানি নিষ্কাশন বন্ধ হয়ে শহরের বিভিন্ন স্থানে অসময় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। পদ্মা-মেঘনা বেষ্টিত শরীয়তপুর জেলা, যেখান দিয়ে বয়ে গেছে ছোটবড় অসংখ্য নদী। নৌ-যোগাযোগ কৃষি সমৃদ্ধ দেশ গড়ার লক্ষ্যে জেলার বিভিন্ন অঞ্চল দিয়ে কাটা হয়েছিল নদীর সঙ্গে সংযোগ খাল। কিন্তু স্বার্থান্নেসী মহলের খাল ভরাট ও দখলের কারণে পানি প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় জেলার প্রায় ৩০ হাজার হেক্টর আবাদি জমিতে জলাবদ্ধতায় রবি মৌসুমে ফসল উৎপাদন করা যাচ্ছে না। এলাকাবাসী জানায়, জেলার নড়িয়া, ভেদরগঞ্জ, ডামুড্যা, জাজিরা উপজেলা, সদর উপজেলার কয়েকটি খাল বেদখল হয়ে গেছে। সদর উপজেলার আংগারীয়া থেকে বুরিরহাট, রাজগঞ্জ থেকে আটং, নড়িয়া উপজেলার পদ্মার শ্বুরেস্বর পয়েন্ট থেকে বের হয়ে আসা ১০টি খালের নদীর সঙ্গে সংযোগ মুখ থাকলেও পণ্ডিতসার, চাকধ, মুলফৎগঞ্জ, নড়িয়া বাজারের পূর্বপাশ দিয়ে বয়ে যাওয়া চৌধুরী খালের অস্তিত্ব এখন আর চোখে পড়ে না। বিভিন্ন স্থাপনা নির্মাণ করে ভেদরগঞ্জ থেকে গোলার বাজার সংযোগ খালটি দখল করেছে প্রভাবশালী মহল। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, এ কর্মকাণ্ডে সরকারি দফতরগুলোও পিছিয়ে নেই। সরকারি খাল দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে নিজস্ব দফতরে যাতায়াতের রাস্তা। সম্প্রতি খালটি খনন করা হলেও ফের দখল করায় খালটি সরু হয়ে গেছে। এসব কারণে অনেক আগে থেকেই নৌকা চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ভারী পণ্য পরিবহনে এলাকাবাসীকে পোহাতে হয় দুর্ভোগ। খালগুলো পুনরুদ্ধারের দাবি জেলার সাধারণ মানুষের। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক জানান, জমি জলাবদ্ধ হয়ে থাকায় রবিশস্য আবাদ করতে পারি না। এসব জমিতে একবারের বেশি ফসল ফলানো সম্ভব হয় না। বোরো মৌসমে খাল শুকিয়ে থাকে। তখন পানির অভাবে ইরি ধান ফলাতে সমস্যা হয়। যদিও রাবার ড্রাম ও বেড়ি বাঁধ নির্মাণ করে এসব জমি দুই ফসলির আওতায় আনার পরিকল্পনার কথা জানান জেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদফতর সংশ্লিষ্টরা। আর দখল হয়ে যাওয়া খালগুলো উদ্ধার ও পুনর্খননের মাধ্যমে পানিপ্রবাহ সচল করার আশ্বাস দিলেন শরীয়তপুর জেলা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ রাসেদুজ্জামান।

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর