বুধবার, ২৭ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

ড্রেন নির্মাণে যত্রতত্র খোঁড়াখুঁড়ি

ভোগান্তিতে জয়পুরহাট শহরবাসী

জয়পুরহাট প্রতিনিধি

ড্রেন নির্মাণে যত্রতত্র খোঁড়াখুঁড়ি

জয়পুরহাটে চার লেন সড়কের ড্রেন নির্মাণে যেখানে সেখানে খোঁড়াখুঁড়ি, রাবিশ ও মাটি ফেলে রাখায় শহরে ব্যস্ততম রাস্তায় সৃষ্টি হচ্ছে যানজট। দুই পাশে গর্ত, ধুলা ও নর্দমার ময়লা পানিতে একাকার শহরের একমাত্র সড়কটি। সড়ক থেকে ময়লা-আবর্জনার স্তূপ, পুরনো ড্রেনের রড আর মাটি অপসারণ না হওয়ায় এ অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম দুর্ভোগে পড়েছে শহরবাসী। জানা গেছে, জয়পুরহাট শহরের হারাইল থেকে রেলগেট পর্যন্ত আড়াই কিলোমিটার অংশ চার লেনে প্রশস্তকরণ কাজ উদ্বোধন করা হয় ২০১৮ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর। এর জমি অধিগ্রহণ, বিদ্যুৎ, টেলিফোন, পৌরসভার পানির লাইন সম্প্রসারণসহ সড়ক উন্নয়নে বরাদ্দ হয় ২০০ কোটি টাকার বেশি। এরই মধ্যে ভূমি অধিগ্রহণসহ অন্য দফতরের অর্থ পরিশোধও করা হয়েছে। জেলা শহরে যোগাযোগের একমাত্র ১৮ ফুট প্রস্থের সড়কটি ৬০ ফুটে সম্প্রসারণ হচ্ছে। এর মাঝখানে ৪ ফুটের আইল্যান্ড, উভয় পাশে ২৪ ফুট সড়ক এবং দুই পাশে ৩-৪ ফুট প্রশস্ত পৃথক দুটি ড্রেন নির্মাণ হওয়ার কথা। শহরের বাটা মোড়ের ওষুধ ব্যবসায়ী রোজ বলেন, ‘চার লেন সড়কের জন্য জুলাইয়ে ড্রেন নির্মাণে খোঁড়াখুঁড়ি শুরু হয়েছে। এর জন্য সাধারণ ক্রেতারা এ এলাকায় আসতে পারছেন না।’ পাঁচুর মোড় এলাকার ফুটপাতের ফল ব্যবসায়ী শাহিন আলম বলেন, ড্রেনের কাজ শুরু হওয়ার পর থেকে পাঁচ মাস ধরে ফুটপাতে ব্যবসা করতে পারিনি। দোকান নিয়ে তো বসতেই পারি না।’ মাইক্রোবাস চালক রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘খোঁড়াখুঁড়ির কারণে শহরে যানজট বেড়ে গেছে। গাড়ি নিয়ে প্রবেশ করতে ১০ কিলোমিটার অতিরিক্ত পথ ঘুরে আসতে হয়। এ কারণে সময় যেমন বেশি লাগে, গাড়ির তেল খরচও বেশি হয়।’ কাপড় ব্যবসায়ী মতিউর রহমান বলেন, ‘শহরের কমপক্ষে ১০টি পয়েন্টে ড্রেনের জন্য গর্ত খুঁড়ে মাসের পর মাস ফেলে রাখা হয়েছে। ধারাবাহিকভাবে কাজ শেষ করা হচ্ছে না। এভাবে কাজ করলে আগামী রমজানে আমরা ব্যবসা করতে পারব না।’ শামীম ইশতিয়াক জিম বলেন, ‘ঠিকাদার পাঁচ মাসেও ড্রেনের অর্ধেক কাজ শেষ করতে পারেননি। এতে আমরা যারা প্রতিনিয়ত শহরের চলাচল করি তাদের কষ্টের শেষ নেই। একদিকে যানজট, আরেক দিকে সড়কের পাশে দোকানে কেনাকাটা করতে পারছি না।’ ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নওগাঁর মেসার্স আমিনুল হকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবু ওয়াহেদ পলাশ বলেন, ‘জয়পুরহাট চার লেন ড্রেনের নকশা জটিলতায় আমরা এমনিতেই অনেক পিছিয়ে গেছি। জমির মালিকরা অধিগ্রহণ করা জায়গা ছাড়তে চাচ্ছেন না। এ ব্যাপারে সড়ক ও জনপথ বিভাগ, জেলা প্রশাসন ও পৌরসভায় বারবার যোগাযোগ করলেও তারা সুরাহা করতে পারছেন না। ফলে জায়গা বুঝে না পাওয়ায় ড্রেন নির্মাণে বিলম্ব হচ্ছে। এরই মধ্যে ৫ থেকে ৭০০ ফুট ড্রেন উন্মুক্ত অবস্থায় আছে। দৈর্ঘ্য অনুযায়ী জায়গা না ছাড়ার কারণে শ্রমিকরা কাজ করতে পারছেন না।  জেলার সড়ক ও জনপথ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. মনিরুজ্জামান বলেন, ‘উন্নয়নকাজে ভোগান্তি থাকবেই। নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করে কাজ করতে হচ্ছে। অধিগ্রহণ করেও অনেক জায়গায় পৌরসভার নকশা পাস করায় আমরা সঠিকভাবে বুঝে নিতে পারিনি। ফলে সেসব জায়গায় নকশা অনুযায়ী ঠিকাদার ড্রেন নির্মাণ করতে পারছেন না।’

 

 

এই বিভাগের আরও খবর

সর্বশেষ খবর