শনিবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৩ ০০:০০ টা

সরিষার বাম্পার ফলনের আশা

কুড়িগ্রামে বেড়েছে আবাদ

খন্দকার একরামুল হক সম্রাট, কুড়িগ্রাম

সরিষার বাম্পার ফলনের আশা

হলুদে ছেঁয়ে গেছে কুড়িগ্রামের সরিষা খেত -বাংলাদেশ প্রতিদিন

কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলায় এবার সরিষার বাম্পার ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। এ অঞ্চলে চলতি বছর বিভিন্ন নদনদীর চরেও তেল জাতীয় এ ফসলের আবাদ করা হয়েছে। এখন দিগন্তজুড়ে সরিষার ফুলের সমারোহ। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলার ৯ উপজেলায় ২৬ হাজার ৫৮৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। চলতি মৌসুমে আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। এতে কৃষকরা লাভবান হবেন, পাশাপাশি দেশে তেলের ঘাটতি মেটাতে সহায়তা করবে। জেলা সদরের মোগলবাসায় দেখা যায়, ওই এলাকায় অনেক কৃষক সরিষার আবাদ করেছেন। তারা নদীর চরেও এ ফসল চাষ করেছেন। ওই এলাকার চরের কৃষক নবিজ উদ্দিন জানান, ‘আমি গত বছরের চেয়ে ৫০ শতক বেশি জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। এ ফসল চাষে খরচ তেমন হয় না। লাভ বেশি হয়। গত বছর আমি অনেক লাভ করেছিলাম। তাই এবার একটু বেশি জমিতে সরিষা আবাদ করেছি। ভুরুঙ্গামারী উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় দেখা যায়, মাঠের পর মাঠজুড়ে আবাদ করা হয়েছে সরিষা। দিগন্তজুড়ে যেন হলুদ গালিচা বিছানো হয়েছে। চলতি মৌসুমে এ উপজেলায় সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ৭০০ হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে। উপজেলার দুধকুমার ও কালজানী নদীর চরেও কৃষকরা সরিষা আবাদ করেছেন। সেখানে মাঠজুড়ে সরিষা ফুলের মধ্যে মৌমাছির গুঞ্জনও শোনা যায়।

ভুরুঙ্গামারী উপজেলার আন্ধারীঝাড় ইউনিয়নের কৃষক মোজাহার, ইয়াকুব ও মফিজউদ্দিন বলেন, তারা দুই বিঘা করে জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। প্রতি বিঘা জমিতে ২ হাজার টাকা করে খরচ হয়েছে। সরিষার খেতে গেলে প্রাণটা ভরে যায়। একই উপজেলার ছিটপাইকের ছড়া গ্রামের কৃষক জয়নাল, দুলাল, মোস্তাফিজুর, ইসমাইল ও নজরুল বলেন, তারা আড়াই বিঘা করে জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। এই সরিষা বিক্রি করে বোরো ধান আবাদে তেল ও সার কেনার টাকা জোগাড় হবে তাদের। কুড়িগ্রাম জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর জানায়, চলতি মৌসুমে জেলার ৯ উপজেলায় ২৬ হাজার ৫৮৫ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ করা হয়েছে। কৃষি বিভাগ জানায়, জেলার নদনদী তীরবর্তী ও চরাঞ্চলের পলি মিশ্রিত জমি সরিষা চাষের অত্যন্ত উপযোগী। সেচ, সার ও অন্যন্য খরচ কম হওয়ায় সরিষা চাষে লাভ হয় বেশি। তাছাড়া সরিষার তেল সয়াবিন তেলের চেয়ে অধিক পুষ্টিগুণসম্পন্ন হওয়ায় এর চাহিদা দিন দিন বাড়ছে। জেলার বিভিন্ন উপজেলার বেশির ভাগ জমিতে কৃষকরা দুটি ফসল উৎপাদন করে থাকেন। কিন্তু ওই জমিতে সরিষা চাষ করলে সবমিলিয়ে তিনটি ফসল উৎপাদন হয়। কৃষকরা বলছেন, আমন ধান কাটা-মাড়াইয়ের পর তিন-চার মাস জমি পতিত থাকে। এই সময়ে ওই সব জমিতে বাড়তি লাভের আশায় সরিষা চাষ করেন তারা।

সর্বশেষ খবর