মঙ্গলবার, ২ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

দুই প্রান্ত জোড়া লাগেনি তিন বছরেও

সেতুর অভাবে দুর্ভোগে ২০ গ্রামের মানুষ

জামালপুর প্রতিনিধি

দুই প্রান্ত জোড়া লাগেনি তিন বছরেও

২০২০ সালের বন্যায় ভেঙে যায় সেতুর মাঝখান -বাংলাদেশ প্রতিদিন

জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে ঝিনাই নদীর ওপর ঝারকাটা ব্রিজের দুই প্রান্ত জোড়া লাগেনি সাড়ে তিন বছরেও। বন্যার পানির তোড়ে ২০২০ সালের ২১ জুলাই এর মাঝখান থেকে গার্ডার ও পিলার ভেঙে এ অবস্থার সৃষ্টি হয়। উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নে ঝিনাই নদীর ওপর এই সেতু লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের একমাত্র ভরসা। এটি ভেঙে যাওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে দুই উপজেলার ২০টি গ্রামের মানুষকে। বর্ষা মৌসুমে এলাকার শিশু শিক্ষার্থী, অসুস্থ, বয়োবৃদ্ধসহ সর্বসাধারণকে ঝুঁকি নিয়ে নৌকায় এ নদী পারাপার হতে হয়।

এলাকাবাসী জানায়, জামালপুরের সরিষাবাড়ী উপজেলার কামরাবাদ ইউনিয়নের চররৌহা, চরনান্দিনা, বড়বাড়িয়া, বীরবড়বাড়িয়া, হেলেঞ্চাবাড়ী, স্বাধীনাবাড়ী, চরহাটবাড়ী, সিধুলী, চুনিয়াপটল, সিংগুরিয়া, ডিগ্রীপাজবাড়ী, খন্দকারবাড়ী, চরছাতারিয়া, আদ্রা, শুয়াকৈর এবং মাদারগঞ্জ উপজেলার চরলোটাবর, শ্যামগঞ্জ কালিবাড়ী, সদরাবাড়ী, রায়েরছড়া গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের সরিষাবাড়ী উপজেলা শহরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগে ঝিনাই নদীর ওপর ঝারকাটা সেতু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ সেতু নির্মাণের আগ পর্যন্ত ঝিনাই নদী ওই এলাকার মানুষকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যাতায়াত, হাটবাজার, উৎপাদন করা কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য প্রাপ্তিসহ নানা ক্ষেত্রে বাধা হয়ে আসছিল। দুই উপজেলার লক্ষাধিক মানুষের দুর্ভোগ লাঘবে ২০০৩-০৪ অর্থবছরে শুয়াকৈর-হুদুরমোড় শাহাজাদাহাট এলাকায় ঝিনাই নদীর ওপর ২০০ মিটার ঝারকাটা ব্রিজ নির্মাণের উদ্যোগ নেয় এলজিইডি। ২০০৬ সালে ব্রিজটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত হলে দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ লাঘব হয় এ অঞ্চলের মানুষের। কিন্তু ২০২০ সালের ২১ জুলাই বন্যার পানির প্রবল তোড়ে এর দুটি পিলারসহ ২০ মিটার দৈর্ঘ্যরে দুটি গার্ডার ১ ফুট দেবে যায়। ওই রাতেই ব্রিজের মাঝের অংশে ৭ নম্বর পিলার এবং ৬ ও ৭ নম্বর স্প্যানের ৪০ মিটার ভেঙে যায়। এরপর প্রায় চার বছর কেটে গেছে। তখন থেকেই দুর্ভোগ আবারও ফিরে আসে এই অঞ্চলের মানুষের জীবনে। শুষ্ক মৌসুমে নদীর ওপর স্বেচ্ছাশ্রমে তৈরি কাঠের সাঁকো দিয়ে চলাচল করা হয়। বর্ষা মৌসুমে এপথে চলাচলের একমাত্র মাধ্যম নৌকা। এতে মাঝে মধ্যেই ঘটে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। বিশেষ করে বন্যার সময় নৌকায় চলাচল ঝুঁকিপূর্ণ হওয়ায় অভিভাবকরা সন্তানদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঠাতে চান না। এতে ক্রমেই কমে আসছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর শিক্ষার্থী। সরাসরি যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবে পণ্য আনা-নেওয়ায় বাড়তি খরচের পাশাপাশি চরে উৎপাদন হওয়া কৃষি পণ্যের ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন ওই এলাকার কৃষকরা। রোগী পরিবহনেও পোহাতে হয় চরম ভোগান্তি। স্থানীয়দের অভিযোগ, ব্রিজটি নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল। জামালপুর এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী সায়েদুজ্জামান সাদেক জানান, ব্রিজটির তথ্য প্রধান কার্যালয়ে পাঠানো হয়েছে। বরাদ্দ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর