সোমবার, ৮ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

সরিষায় ঝুঁকছেন চলনবিলের কৃষক

এস এ আসাদ, পাবনা

সরিষায় ঝুঁকছেন চলনবিলের কৃষক

সরিষা চাষে ঝুঁকছে চলনবিলের কৃষকরা। কৃষকরা বলছেন, দেশে ভোজ্য তেলের ঊর্ধ্বগতি, সয়াবিন তেল নিয়ে চলছে তেলেসমাতি। সরিষার তেল স্বাস্থ্যসম্মত, স্বল্প খরচ ও লাভজনক হওয়ায় এ ফসল আবাদে আগ্রহী হয়েছেন তারা। শস্য ভান্ডার খ্যাত চলনবিলের বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে এখন হলুদ সরিষা ফুলের সমারোহ। প্রকৃতি সেজেছে যেন এক হলুদ বর্ণের অপরূপ সাজে। শীতের সোনাঝরা রোদে মাঠজুড়ে যেন ঝিকিমিকি করছে সরিষার হলুদ ফুল। দিগন্তজুড়ে এখন হলুদ সরিষা ফুলে ছেয়ে গেছে। দেখা যায়, চলনবিল অধ্যুষিত পাবনার চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল, নিমাইচড়া, ছাইকোলা, বিলচলন, হরিপুর, ভাঙ্গুড়া উপজেলার খানমরিচ, মন্ডুতোষ, ফরিদপুর উপজেলার পুঙ্গুলী, আরকান্দি, কেনাইসহ প্রভৃতি ইউনিয়নের মাঠে মাঠে সরিষার হলুদ ফুলে ছেয়ে গেছে। দুই চোখ যেদিকে যায় শুধু হলুদ। এসব এলাকার মাঠ যেন সেজেছে আপন রূপে। এমন নয়নাভিরাম সরিষা ফুলের দৃশ্য, ফুলের গন্ধ, পাখির কিচিরমিচির শব্দ আর মৌমাছির গুঞ্জন মনকে বিমোহিত করে। দিগন্তজুড়ে হলুদ সরিষা ফুলে কৃষক যেন এক নতুন স্বপ্ন বুনছে।

সরিষা গাছে ধরেছে ফুল, আর কিছুদিন পরেই আসবে ফল। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে ও পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষা পেলে সরিয়ায় ভালো ফলনের আশা করছেন কৃষকরা। বিগত বছরের চেয়ে তুলনামূলক এ বছর সরিষার আবাদ অনেক বেশি হয়েছে। তাছাড়া সময়মতো সার-কীটনাশক ব্যবহারের কারণে সরিষার আবাদ করতে এবার কৃষকদের কোনো বেগ পেতে হয়নি। চাটমোহর উপজেলার হান্ডিয়াল পাকপাড়া গ্রামের কৃষক আবদুল আলীম বলেন, বিল থেকে দ্রুত পানি নেমে যাওয়ায় ও আবহাওয়া ভালো থাকায় আমি পাঁচ বিঘা সরিষার আবাদ করেছি। ভালো ফলন হবে আশা করছি। নিমাইচড়ার সমাজ গ্রামের কৃষক জয়নাল আবেদীন জানান, এ বছর তিনি সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে সরিষার আবাদ করেছেন। ভালো দাম পেলে লাভের মুখ দেখবেন তিনি। উপজেলার দরাপপুর গ্রামের কৃষক আমজাদ হোসেন ৫ বিঘা জমিতে সরিষা চাষ করেছেন। তিনি বলেন সরিষা চাষ এখন লাভজনক। এলাকায় দিন দিন সরিষা চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কৃষকরা জানান, আবহাওয়া ভালো থাকলে প্রতি বিঘা জমিতে ৬-৭ মণ হারে সরিষা ঘরে তুলতে পারবে। ভালো দাম পাওয়ার আশা করছেন তারা। এবার এ অঞ্চলে উন্নত ফলনশীল জাতের বারী-৯, ১১, ১৪, ১৫, ১৭, ১৮, বিনা-৪, টরি-৭ জাতের ও স্থানীয় জাতের সরিষার চাষ হয়েছে। চাটমোহর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা এ মাসুম বিল্লাহ জানান, উপজেলায় কয়েক দফা বন্যার পানি এলেও দ্রুত মাঠ থেকে তা নেমে যায়। বিল জলাবদ্ধ না থাকায় অনেকেই সরিষা বীজ ফেলেছে। এ বছর সরিষা আবাদ গত বছরের চেয়ে অনেক বেশি হয়েছে। উপজেলায় এ বছর ৮ হাজার ১৫০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। গত মৌসুমে চাষ হয়েছিল ৬ হাজার ৭৫০ হেক্টর। গত বছরের চেয়ে এ বছর ১ হাজার ৪০০ হেক্টর সরিষা চাষ বেশি হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে উপজেলার ৪ হাজার ৫০০ কৃষককে সরিষা বীজ ও সার বিনামূল্যে দেওয়া হয়েছে। সরিষা চাষে কৃষককে সচেতন করা হয়েছে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর