মঙ্গলবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

পাঁচ কারণে ছয় আসনে স্বতন্ত্রের জয়

সৈয়দ নোমান, ময়মনসিংহ

পাঁচ কারণে ছয় আসনে স্বতন্ত্রের জয়

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ময়নসিংহের ১১টি আসনের মধ্যে ছয়টিতেই স্বতন্ত্র প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন। নৌকার প্রার্থীরা জয় পেয়েছেন চারটি আসনে। স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীসহ সাধারণ মানুষ মনে করেন বেশকিছু কারণে ওইসব আসনে স্বতন্ত্ররা জয়ী ও নৌকার প্রার্থীরা হেরেছেন। তারা পাঁচটি কারণকে দায়ী করেন। এর মধ্যে রয়েছে নৌকার প্রার্থীদের জনবিচ্ছিন্নতা, নানা বিতর্কিত কর্মকান্ডে সম্পৃক্ততা, সরকারের উন্নয়ন তুলে না ধরা, নেতা-কর্মীদের দূরে ঠেলে দেওয়া ও এলাকায় উন্নয়ন কার্যক্রম না করা। কেন স্বতন্ত্রের জয় ও নৌকার প্রার্থীদের হার? এমন প্রশ্নে ময়মনসিংহ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল বলেন, সবার আমলনামা জনগণের কাছে আছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সেই অনুযায়ী রায় দেওয়ার সুযোগ করে দিয়েছেন। জনগণ তাদের আমলনামার ওপর রায় দিয়েছেন। যা ভোটের ফলে দৃশ্যমান। ময়মনসিংহ-১ : সংসদ নির্বাচনের সপ্তাহখানেক আগে ধোবাউড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় উপজেলা যুবলীগের আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান আকন্দ সাগর নৌকার প্রার্থী জুয়েল আরেং-এর সামনেই প্রকাশ্যে ঘোষণা দেন নৌকা ঠেকানোর। এর কারণ হিসেবে তিনি উল্লেখ করেন উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে নৌকার বিরোধিতার কথা। শুধু তাই নয়, জুয়েল আরেং-এর বিরুদ্ধে আরও অভিযোগ জনবিচ্ছিন্নতা, সরকারের উন্নয়ন তুলে না ধরা, নেতা-কর্মীদের দূরে ঠেলে দেওয়া ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন না করা। ময়মনসিংহ-৫ : সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদের সঙ্গে অনেক আগে থেকেই বিরোধ মুক্তাগাছার সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হাই আকন্দের। প্রতিমন্ত্রী এবার আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পাননি। আর নৌকার টিকিট পেয়েও প্রত্যাহার করেন আবদুল হাই আকন্দ। সমঝোতার ভিত্তিতে এই আসনে জাতীয় পার্টির সাবেক সংসদ সদস্য সালাহ উদ্দিন আহমেদ মুক্তি লাঙল প্রতীক পান। তাকে সমর্থন দেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রীর সমর্থকরা। অন্যদিকে স্বতন্ত্র প্রার্থী কৃষিবিদ নজরুল ইসলামকে সমর্থন দেয় আবদুল হাই আকন্দ গ্রুপ। মূলত প্রতিমন্ত্রীর কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থান নিয়ে মাঠে থাকায় তৃণমূলে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন আবদুল হাই। ময়মনসিংহ-৭ : স্থানীয় সড়কগুলোর বেহাল দশা, জনসম্পৃক্ততা ও নেতা-কর্মীদের দূরত্ব; এ তিন কারণেই এখানে নৌকা হেরেছে, মনে করেন স্থানীয়রা। ময়মনসিংহ-৬ : ফুলবাড়িয়া আসনে পাঁচবার এমপি ও একবারের গণপরিষদ সদস্য মো. মোসলেম উদ্দিন নৌকা ও তার মেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী সেলিমা বেগম ঈগল প্রতীক নিয়ে মাঠে থাকায় মোসলেমের কপাল পুড়েছে বলে মনে করেন সাধারণ ভোটাররা। ময়মনসিংহ-৮ : জাতীয় পার্টির ফখরুল ইমাম এই আসনে আওয়ামী লীগের কাঁধে ভর করে দুই মেয়াদে এমপি হন। এমপি হবার পরও ছিলেন জনবিচ্ছিন্ন। এলাকার কোনো ধরনের উন্নয়ন কর্মকান্ডে তার হাত দৃশ্যমান নয়। বসন্তের কোকিলের মতো তিনি এলাকায় আসতেন বলে অভিযোগ অজস্র ভোটারের। ময়মনসিংহ-১১ : এমপি কাজিম উদ্দিন ধনুর ভাই, ভাতিজা, ভাগিনা, স্ত্রী, জামায়াত-শিবির ও বিএনপির চিহ্নিত ক্যাডারদের নিয়ে গড়ে তোলা ‘আত্মীয় লীগ’-এর অত্যাচারে অতিষ্ঠ ছিল ভালুকাবাসী। আওয়ামী লীগ ও দলীয় এমপির নাম ভাঙিয়ে ‘আত্মীয় লীগে’র অপকর্ম ছিল ওপেন সিক্রেট।

সর্বশেষ খবর