দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বগুড়ায় আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ জয় পেয়েছে। শহরজুড়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী, সমর্থক ও ভোটারদের মধ্যে এ নিয়ে মাতামাতি চলছে। এখন বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চলে আরও উন্নয়ন এবং এগিয়ে নেওয়ার দাবি তুলেছেন এলাকাবাসী। জেলার উন্নয়নে সরকার ও নবনির্বাচিত সংসদ সদস্যদের কাছে বিমানবন্দর, দ্বিতীয় বিসিক শিল্পনগরী, বগুড়া থেকে সিরাজগঞ্জের বঙ্গবন্ধু সেতুতে রেলপথ স্থাপন, সবজি হিমাগার, সরকারি উচ্চবিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের দাবি তাদের। এ ছাড়া যমুনা নদীতে ট্যুরিস্ট স্পট নির্মাণ, সারকারখানা স্থাপন, পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আধুনিকায়ন, করতোয়া নদী পুনর্খনন, শহরের যানজট নিরসন, কাঁচা সড়ক কার্পেটিং করা, পর্যাপ্ত আলোর ব্যবস্থা চান তারা। বগুড়া শহীদ চান্দু স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ম্যাচ ফিরিয়ে আনা, পৌরসভাকে সিটি করপোরেশন ঘোষণা, খেলাধুলার জন্য আধুনিক স্টেডিয়াম, বিনোদন স্পট, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে মঞ্চ নির্মাণ, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণসহ মডেল জেলা গড়ে তোলা হোক সেটাও চান তারা। জানা যায়, উত্তরাঞ্চলের রাজধানী খ্যাত বগুড়া। জেলার সাতটি সংসদীয় আসনের মধ্যে পাঁচটি আসনে জয় পেয়েছে আওয়ামী লীগ। বাকি দুই আসনে মহাজোট সমর্থিত ও আওয়ামী লীগ নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে জয়ী হয়েছেন। সেদিক থেকে বিবেচনা করলে আওয়ামী লীগ ছয়টি আসনে এবং মহাজোট সমর্থিত প্রার্থী একটিতে জয়ী হয়েছেন। এলাকাবাসীর দাবি, জেলার সামগ্রীক উন্নয়নে নির্বাচিত সংসদ সদস্যরা কাজ করে যাবেন। শস্য উৎপাদনে বগুড়া জেলা অন্যতম। প্রতি বছর জেলায় ২০ লাখ টন সবজি উৎপাদন হয়। সংরক্ষণের অভাবে চাষিরা দাম পান না। সময়মতো বিক্রি করতে পারেন না বলে অনেক সবজি নষ্ট হয়ে যায়। এ কারণে জেলায় আধুনিকমানের সবজি হিমাগার স্থাপনের দাবি তুলেছেন তারা। সম্ভাবনা থাকার পরেও এখানে বাণিজ্যিকভাবে উড়ছে না বিমান। এতে বগুড়াবাসী আশাহত। উত্তরের ১৬ জেলার অর্থনীতির গতি বাড়াতে বিমানবন্দর চালু করা অত্যন্ত জরুরি। বগুড়া বিসিককে নতুন প্লট বরাদ্দ বন্ধ হয়ে আছে দুই দশক ধরে। কলকারখানা ও শিল্পের জায়গা সংকট এ জন্য দ্বিতীয় শিল্প নগরী গড়ে তোলা জরুরি। বগুড়া থেকে সরাসরি সিরাজগঞ্জ জেলার সঙ্গে রেলপথ স্থাপন না হওয়ায় ৮ ঘণ্টা ঘুরে ঢাকায় পৌঁছাতে হয়। রেলপথ স্থাপন হলে ৩ থেকে ৪ ঘণ্টায় ঢাকা পৌঁছাতে পারবে বগুড়াবাসী। আরও অন্তত দুটি সরকারি উচ্চবিদ্যালয় নির্মাণ করা হলে কিছুটা দুর্ভোগ কমে যাবে। বগুড়াসহ উত্তরাঞ্চল কৃষিপ্রধান এলাকা। এখানে কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপন করে বিভিন্ন প্রশিক্ষণ ও শিক্ষা প্রদান করলে ফলন বৃদ্ধি পাবে। অর্থনৈতিক গতি বৃদ্ধি করতে বগুড়ার সারিয়াকান্দি উপজেলায় যমুনা নদী ঘিরে আধুনিক ট্যুরিস্ট স্পট নির্মাণ জরুরি। বগুড়ার সমাজসেবক ডা. এস এম মিল্লাত হোসেন বলেন, বগুড়াকে এগিয়ে নিতে সদ্য নির্বাচিত সংসদ সদস্যদের অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে হবে। বিমানবন্দর, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, শিশুদের বিনোদন কেন্দ্র, কৃষির উন্নয়নে কাজ করতে হবে। বগুড়া সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি তৌফিক হাসান ময়না বলেন, বগুড়ায় উন্নয়ন কর্মকান্ড বাস্তবায়ন করতে হবে। খেলাধুলার জন্য আধুনিক স্টেডিয়াম, সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডে র জন্য আধুনিক হল, বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের আরও আধুনিকায়ন করা জরুরি। বগুড়ার বিভিন্ন পর্যায়ের শ্রেণি পেশার মানুষরা বলছেন, উন্নয়ন কর্মসূচির মাধ্যমে বগুড়াকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। পৌরসভাকে সিটি করপোরেশন ঘোষণা, জেলাকে মডেল জেলা হিসেবে গড়া তোলার দাবি জানানো হয়েছে। বগুড়া জেলা আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আল রাজী জুয়েল জানান, বগুড়ার আরও কিছু উন্নয়ন প্রয়োজন।