শিরোনাম
রবিবার, ১৪ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

শীতের পোশাকে সম্ভাবনার হাতছানি

মৌসুমে ১০ কোটি টাকা বেচাকেনার আশা

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

শীতের পোশাকে সম্ভাবনার হাতছানি

দিনাজপুরে কারখানায় পোশাক তৈরিতে ব্যস্ত শ্রমিক -বাংলাদেশ প্রতিদিন

দিনাজপুরের রানীরবন্দরে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে গড়ে উঠেছে বেশ কিছু সংখ্যক ছোট ছোট পোশাক কারখানা। যেখানে হয়েছে শত শত মানুষের কর্মসংস্থান। পাশাপাশি গ্রামীণ অর্থনীতিকে করছে শক্তিশালী। এবার শীত মৌসুমেই ১০ কোটি টাকার পোশাক বেচাকেনার আশা করছেন এখানকার পোশাক ব্যবসায়ীরা। জানা গেছে, এখানকার তৈরি পোশাক সরবরাহ করা হয় নীলফামারী, ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়, রংপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, টাঙ্গাইলসহ বিভিন্ন জেলার পাইকারি বাজারে। ঢাকা থেকে কাপড়সহ অন্যান্য কাঁচামাল এনে এসব পোশাক তৈরি করেন কারখানামালিকসহ এ খাত সংশ্লিষ্টরা। এসব কারখানায় শ্রমিকদের তৈরি পোশাকে বিভিন্ন রকমের আকর্ষণীয় ডিজাইন থাকে। এ ছাড়া এখানকার শ্রমিকদের মেশিনে সেলাই এবং হাতের কাজে সুনাম রয়েছে। এসব কারখানায় সারা বছরই কাজ থাকে। তবে গরমের চেয়ে এখানকার তৈরি শীতের পোশাকের চাহিদা বেশি। সরেজমিন বিভিন্ন কারখানায় দেখা যায়, ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র এই পোশাক কারখানাগুলোতে শ্রমিকদের কর্মব্যস্ততা। শীত মৌসুম ঘিরে কারখানাগুলোতে ব্যস্ততা অনেক বেড়েছে। কারখানায় কেউ কাপড় কাটছেন, কেউবা মেশিনে সেলাই করছেন। আবার কেউ বোতাম ও চেইন লাগাচ্ছেন। কেউবা তৈরি পোশাক ক্যালেন্ডার বা অ্যাম্ব্রয়ডারির কাজ করছেন। গ্রাহকদের চাহিদানুযায়ী এসব পোশাক তৈরি করছেন তারা। শিশুদের বাহারি ডিজাইনের জ্যাকেট থেকে শুরু করে মেয়েদের হাল ফ্যাশনের শীতের পোশাকও তৈরি হচ্ছে এখানে। যা শোভা পাচ্ছে দেশের বিভিন্ন শো-রুমে। চিরিরবন্দরের রানীরবন্দরের বিভিন্ন স্থানে গড়ে ওঠা এসব মিনি কারখানার একজন শ্রমিক দৈনিক ৮-১০টি জ্যাকেট তৈরি করতে পারেন। এতে তারা দৈনিক ৮০০-১০০০ টাকা আয় করেন। একজন দক্ষ শ্রমিক প্রতি মাসে ২৫-৩০ হাজার টাকা আয় করতে পারেন। অনেক নারী শ্রমিক বাড়িতে বসেও এ কাজ করে আয় করছেন। শীতের পোশাকের চাহিদা বৃদ্ধি পাওয়ায় শ্রমিকরাও ভালো মজুরি পাচ্ছেন। তাছাড়া এখানে মুসলমানদের দুই ঈদ, শীত মৌসুম এবং গরমেও তৈরি করা হয় বিভিন্ন ডিজাইনের পোশাক। রানীরবন্দরে সুমাইয়া গার্মেন্টস ও মা গার্মেন্টসে পলাশ মহন্ত, মনির হোসেন, অহিদুল ইসলাম ও আনোয়ারসহ একাধিক শ্রমিক জানান, তারা শীতবস্ত্র তৈরিতে ব্যস্ত। বর্তমানে শার্ট-প্যান্ট, রেডিমেট শার্টসহ অন্যান্য পোশাক তৈরি ছেড়ে দিয়ে শীতের পোশাক তৈরি করছেন। সুমাইয়া গার্মেন্টসের স্বত্বাধিকারী মো. শাহজাহান আলী ও মা গার্মেন্টসের স্বত্বাধিকারী মো. আতিয়ার রহমান জানান, সময়মতো শীতবস্ত্র মার্কেটে পৌঁছানোর জন্য এত ব্যস্ততা। বিভিন্ন কারখানায় বিভিন্ন ধরনের দেশি-বিদেশি কাপড়ে শীতবস্ত্র তৈরি হচ্ছে। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে পাইকাররা শীতবস্ত্র ক্রয় করতে আসছেন। এই শীত মৌসুমে রানীরবন্দর থেকে পাইকারি দৈনিক ৮-১০ লাখ টাকার শীতবস্ত্র বিক্রি হচ্ছে। এ মৌসুমে প্রায় ১০ কোটি টাকার কেনাবেচা হবে, আশা করছেন তারা। সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা ও স্বল্প সুদে ঋণ পেলে এসব ক্ষুদ্র কারখানার পরিধি বাড়তে পারে। পোশাক শিল্পের অপার সম্ভাবনাময় হয়ে উঠতে পারে এবং বেকারদের তরুণ কর্মসংস্থানের ব্যাপক সুযোগ সৃষ্টি হতে পারে। অঞ্চলটি হয়ে উঠতে পারে সম্ভাবনাময় পোশাক তৈরির গ্রামীণ শিল্প এলাকা। কর্মসংস্থানের পাশাপাশি অর্থনৈতিক উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখতে পারবে, এমনটাই বললেন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী, শ্রমিকসহ সংশ্লিষ্টরা।

সর্বশেষ খবর