বুধবার, ১৭ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

কোমর বেঁধে মাঠে বোরো চাষিরা

কৃষি অধিদফতর বলছে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে

নাটোর প্রতিনিধি

কোমর বেঁধে মাঠে বোরো চাষিরা

ঘন কুয়াশা, হিমেল হাওয়া, কনকনে শীত উপেক্ষা করে সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বোরো ধানের চারা রোপণে মেতে উঠেছেন কৃষকরা। নাটোরের গুরুদাসপুরে নারী-পুরুষ সবাই ব্যস্ত জমিতে পানি দেওয়া, চাষ করা, আগাছা পরিষ্কার, মই টেনে জমি সমান করা, সার দেওয়াসহ বীজতলা হতে চারা তোলার কাজে। গুরুদাসপুরের বিভিন্ন এলাকার মাটি বোরো চাষের জন্য উপযোগী। এখানকার অধিকাংশ কৃষক কোমর বেঁধে মাঠে নেমেছেন বোরো চারা রোপণে। অন্যান্য বছরের তুলনায় আবহাওয়া ভালো থাকায় উপজেলায় এবার বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে মনে করছে কৃষি অধিদফতর। গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৭০ শতাংশ জমিতে চারা রোপণ শেষ হয়েছে। এখানে ব্রি-২৯, ব্রি-৫৮, ব্রি-৭৪, ব্রি-৮১, ব্রি-৮৪, ব্রি-৮৬, ব্রি-৮৮, ব্রি-৮৯সহ বিভিন্ন জাতের ধানের চারা রোপণ করা হচ্ছে।

গুরুদাসপুরের নাজিরপুর গ্রামের কৃষক আমিরুল ইসলাম বলেন, এলাকায় শ্রমিক সংকটে বেশি মজুরি দিয়ে কাজ করতে হচ্ছে। দিনরাত পরিশ্রম করে নিয়মিত পরিচর্যাও করা হচ্ছে। এ ছাড়া গত বছরের চেয়ে এ বছর খরচ বেশি হচ্ছে। কারণ তেল-সারের দাম বৃদ্ধি, তারপরও যদি ন্যায্য দাম না পাওয়া যায় তাহলে ক্ষতির মুখে পড়তে হবে। বিভিন্ন এলাকার মাঠ ঘুরে দেখা গেছে, কেউ কেউ তীব্র শীত উপেক্ষা করে বীজতলা থেকে চারা তুলছেন। কেউ পাওয়ার টিলার দিয়ে চষে জমি তৈরি করছেন। কোথাও কৃষকরা জমিতে ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণ করছেন। কোথাও গভীর অথবা অগভীর সেচযন্ত্র দিয়ে জমিতে পানি তুলছেন। স্থানীয় কৃষকরা জানিয়েছেন, শীতের তীব্রতা একটু কমে গেলেই তারা পুরো দমে নেমে যাবেন মাঠে। সেই হিসাবে আগামী ১০-১৫ দিনের মধ্যে শতভাগ জমিতে ইরি-বোরো ধানের চারা রোপণ সম্পন্ন হবে। বোরে চাষিরা যেন সঠিকভাবে ফসল চাষাবাদ ও পরিচর্যা করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রেখে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর থেকে কৃষি উপসহকারী কর্মকর্তারা তৃণমূল পর্যায়ে মাঠে গিয়ে সার্বিক পরামর্শ দিচ্ছেন। উপজেলার বিলসা গ্রামের চাষি আকমল হোসেন বলেন, এ বছর তিনি ৪ বিঘা জমিতে বোরো আবাদ করছেন। সাধারণত প্রতি বিঘা জমিতে ১০ থেকে ১২ হাজার টাকা খরচ হয়। তবে বর্গাচাষিদের ক্ষেত্রে ১৮ থেকে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। ভালো ফলন হলে প্রতি বিঘায় ২৫-৩০ মণ ধান হবে। গুরুদাসপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. হারুনুর রশীদ বলেন, চলতি মৌসুমে ৪ হাজার ৮৭০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান রোপণ হচ্ছে। উপজেলার কৃষককে বোরো ধান চাষে সব ধরনের পরামর্শ ও সহযোগিতা দেওয়া হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে আগামী সপ্তাহের মধ্যে বাকি জমিতে চারা রোপণ কাজ শেষ হবে। চলতি মৌসুমে লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে অধিক জমিতে ধান আবাদ হবে বলে তিনি আশা করেন।

সর্বশেষ খবর