শুক্রবার, ২৬ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

♦ খসে পড়ছে ভবনের পলেস্তারা ♦ বের হয়ে গেছে রড

জাকারিয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ

খোলা আকাশের নিচে পাঠদান

টঙ্গীরঘাট প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে চলছে শ্রেণিকার্যক্রম

হবিগঞ্জ সদর উপজেলার তেঘরিয়া ইউনিয়নের টঙ্গীরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ভবনটি দুই বছর আগে ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। সম্প্রতি সেটি আরও জরাজীর্ণ হয়ে পড়লে সেখানে শিক্ষার্থীদের পাঠদান বন্ধ করা হয়। এখন তা চলছে স্কুল মাঠে খোলা আকাশের নিচে। প্রচণ্ড শীতের মধ্যে খোলা আকাশের নিচে পাঠদান চলায় ভোগান্তির শিকার হচ্ছে খুদে শিক্ষার্থীরা। জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর বলছে, বরাদ্দ সাপেক্ষে অস্থায়ী ঘর নির্মাণের মাধ্যমে আপাতত ক্লাস নেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, টঙ্গীরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভবনটি ১৯৯৪ সালে নির্মাণ করে শিক্ষা প্রকৌশল অধিদফতর। এরপর থেকে ওই ভবনে পাঠদান চলছিল। তবে দুই বছর আগে এটি ঝুঁকিপূর্ণ ঘোষণা করা হয়। বিদ্যালয়টিতে বর্তমানে পড়ালেখা করছে ১৮১ শিক্ষার্থী। শিক্ষক রয়েছেন চারজন। সরেজমিনে দেখা গেছে, স্কুল ভবনের বিভিন্ন অংশের রড বের হয়ে গেছে, খসে পড়ছে পলেস্তারা। ছাদের বিভিন্ন অংশেও ভাঙন দেখা দিয়েছে। শিক্ষার্থীরা বলছে, স্কুলের ছাদ থেকে কংক্রিট ভেঙে ভেঙে পড়ে। তাই ভিতরে ক্লাস করতে ভয় হয় আমাদের। শিক্ষার্থীরা আরও জানায়, আমাদের স্কুল দীর্ঘদিন ধরে জরাজীর্ণ অবস্থায় রয়েছে। আমরা ভবনের ভিতরে ক্লাস করতে পারছি না। আমাদের ভয় হয় কখন যেন ওয়াল ভেঙে আমাদের ওপর পড়ে যায়। তারা জানায়, এখন প্রচণ্ড শীতের মধ্যে আমাদের স্কুলের মাঠে ক্লাস করতে হচ্ছে। শীতে আমাদের কষ্ট হয়। আর অভিভাবকরা বলছেন, ছোট ছোট বাচ্চাদের স্কুলে পাঠিয়ে আমরা খুবই ভয়ে থাকি কখন কোন দুর্ঘটনা ঘটে। আমরা বাধ্য হয়ে তাদের স্কুলে পাঠাই। তারা বলেন, আমাদের একটাই দাবি দ্রুত যেন স্কুলের নতুন ভবন নির্মাণ করে দেওয়া হয় অথবা আপাতত পড়ালেখার জন্য বিকল্প ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। টঙ্গীরঘাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নেপাল চন্দ্র তালুকদার জানান, আমরা বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে আরও আগেই অবগত করেছি। তারা কয়েকবার পরিদর্শনও করে গেছেন। কিন্তু কোনো সমাধান হয়নি। তিনি বলেন, শিশুদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করেই আমরা খোলা আকাশের নিচে পাঠদান কার্যক্রম চালাচ্ছি। হবিগঞ্জ জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার গোলাম মাওলা জানান, বিষয়টি আমাদের নজরে আছে। আপাতত বিল্ডিং নির্মাণ করতে না পারলেও একটি টিনশেড ঘর নির্মাণ করে ক্লাসের কার্যক্রম চালিয়ে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। বরাদ্দ পাওয়া মাত্রই কাজ শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর