দিনাজপুরের বীরগঞ্জে বাণিজ্যিক ভিত্তিতে চাষ হচ্ছে শীতকালীন সবজি শিম। কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এ অঞ্চলের কৃষকরা দিন দিন এ সবজি চাষে ঝুঁকছেন।

সরেজমিনে দেখা যায়, বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে মাচায় শিমবাগান। এর সবুজ পাতার ফাঁকে ফাঁকে উঁকি দিচ্ছে ফুল। আবার ফুলের মাঝে উঁকি দিচ্ছে সবুজ শিম। পাশ দিয়ে হেঁটে যাওয়া অনেকের মনে হবে প্রকৃতির নান্দনিক ফুলের বাগান। মন জুড়িয়ে যাবে। এ অবস্থা দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার পাল্টাপুর ইউপির কাজল গ্রামের কৃষক বুলবুল ইসলামের মাচায় ওঠা শিমের বাগানেও। অন্যান্য ফসলের তুলনায় কম খরচে বেশি লাভ হওয়ায় এ অঞ্চলে এ সবজির বাণিজ্যিক আবাদে ঝুঁকছেন কৃষকরা। এবার শিমের ফলন হয়েছে বাম্পার, জানান তারা। কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, বীরগঞ্জ উপজেলায় আবাদি জমির পরিমাণ ৩২ হাজার ৮০৯ হেক্টর। এবার ১ হাজার ৮০০ হেক্টর জমিতে শাকসবজি চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ১০ হেক্টর জমিতে শিম চাষ করেছেন চাষিরা। বিগত কয়েক বছরে বীরগঞ্জের প্রায় প্রত্যেকটি ইউনিয়নে বাণিজ্যিক চাষ হচ্ছে এ শীতকালীন সবজি। চাষি বুলবুল ইসলাম জানান, এ বছর দেড় বিঘা জমিতে শিম চাষ করেছি। এতে জমি তৈরি, হালচাষ, রাসায়নিক সার, জৈব সার, কীটনাশক, মাচায় ও শ্রমিকের মজুরিসহ ৫০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। তবে শিমের ফলন ভালো হয়েছে। ফুলে ও ফলে ভরপুর। ভালো দামে শিম বিক্রি করেছি। শুরুর দিকে প্রতি কেজি শিম পাইকারি বাজারে ১২০-১৫০ টাকা বিক্রি করেছি। কিন্তু বর্তমানে বাজারে পর্যাপ্ত শিম আসায় প্রতি কেজি ৪০-৪৫ টাকায় বিক্রি করছি। এখন পর্যন্ত ২ লাখ টাকার শিম বিক্রি করেছি। আরও রয়েছে বিক্রির জন্য। তিনি বলেন, শিমবাগানে কয়েকজন শ্রমিক কাজ করে। ২-৩ দিন পর পর খেত থেকে শিম সংগ্রহ করে বাজারজাত করি। ৪-৫ দিন পর কীটনাশক স্প্রে করতে হয়। মাঝে মধ্যে পোকার আক্রমণ দেখা যাচ্ছে। শিমগাছের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে অধিকাংশ পাতা হলুদ হয়ে যাচ্ছে। এরপরেও বাম্পার ফলন হয়েছে এবং দামও ভালো পাচ্ছি। বীরগঞ্জ উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. শরিফুল ইসলাম জানান, উপজেলায় ১০ হেক্টর জমিতে আগাম শিমচাষ করেছেন চাষিরা। কম খরচে অধিক লাভ হওয়ায় কৃষকরা শিম চাষে ঝুঁকছেন। রোগবালাই, পোকার আক্রমণ থেকে রক্ষায় বিভিন্ন ফাঁদ ব্যবহারসহ কৃষকদের বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ প্রদানে মাঠপর্যায়ে কাজ চলছে।