নেত্রকোনায় কুকুর বিড়ালের কামড়ে জলাতঙ্ক আতঙ্ক বেড়েছে। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আক্রান্তরা জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকা নিতে ভিড় করছেন নেত্রকোনা জেলা সদর হাসপাতালে। আক্রান্তদের মাঝে শিশুর সংখ্যাই বেশি। গত এক সপ্তাহে হাসপাতালে দেখা গেছে, প্রতিদিন ১০ থেকে ১২ নারী-পুরুষ-শিশু জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকা নিতে আসছেন। তাদের কেউ কুকুড়ের কামড় খেয়ে আবার কেউ বিড়ালের। অনেকেই নিজেদের বাড়িতে থাকা বিড়ালের আঁচড়ে বা থাবায় রক্তাক্ত হয়েছেন। যত্ন করে খাবার দিলেও একপর্যায়ে সেই বিড়ালই খামছে দিয়েছে এমন অভিযোগ টিকা নিতে আসা অনেকের। সাতপাই এলাকার মুরিদা রহমান জানান, একটি বিড়ালের বাচ্চা বাসায় আশ্রয় নিলে সেটিকে নিয়মিত খাবার দিতেন। এখন এটি বড় হয়েছে। সেই বিড়াল প্রথমে তার স্বামীকে খামচি দিয়ে রক্তাক্ত করে। পরে তাকেও খামচি দিয়েছে। এ জন্য তারা দুজনই টিকা নেন। কলমাকান্দার সিধলী থেকে রহিমা আক্তার তার পাঁচ বছরের সন্তানকে টিকা দিতে নিয়ে এসেছেন হাসপাতালে। তিনি জানান, ছেলে উঠানে খেলছিল। কিন্তু হঠাৎ একটি কুকুর এসে তার হাতে কামড় দেয়। টিকাদানকারী সিনিয়র স্টাফ নার্স হাজেরা জানান, চলতি মাসে বুধবার পর্যন্ত এ হাসপাতালে জলাতঙ্ক প্রতিষেধক টিকা নিয়েছেন ২৪১ জন। এর মধ্যে ১২৯ জনই শিশু। তার সহকর্মী এলিজা আক্তার জানান, জেলার সদর, আটপাড়া, কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, পূর্বধলা, কেন্দুয়াসহ বিভিন্ন উপজেলা থেকে নারী-পুরুষ-শিশু প্রতিষেধক নিতে আসছেন।
হাসপাতালের জলাতঙ্ক বিভাগের ইনচার্জ আফসানা আক্তার জানান, গত অক্টোবর মাসে ৩৮৫ জন, নভেম্বর মাসে ৩২০ জন ও ডিসেম্বর মাসে ৩৩৩ জন জলাতঙ্ক প্রতিষেধক নিয়েছেন। জানুয়ারি মাসের ২৫ তারিখ পর্যন্ত ২৬২ জন টিকা নিয়েছে। তবে এসব প্রাণীর বিষয়ে কথা বলতে জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তার কার্যালয়ে দুই দিন ঘুরে এবং খোঁজ করেও তাকে পাওয়া যায়নি। জেলা সদর হাসপাতালের সহকারী সার্জন ডাক্তার মো. হাবিবুর রহমান লাভলু জানান, প্রতিদিন আক্রান্তরা আসছে। এর প্রবণতা বাড়লেও কারণ বলতে পারছেন না। তিনি বলেন আগে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ কুকুর-বিড়ালের উৎপাত নিয়ন্ত্রণ করতেন। এখন তা দেখি না। তবে মানুষ সচেতন তাই টিকা নিতে আসছে। বাড়িতে পালন করা হলেও এরা বাইরেরগুলোর সঙ্গে মিশে সংক্রমিত হয় ও জলাতঙ্ক ছড়ায়।
পৌরসভার প্যানেল মেয়র এস এম মহসীন আলম জানান, তিন বছর ধরে কুকুর নিধনে সরকারি নিষেধাজ্ঞা রয়েছে।