বুধবার, ৩১ জানুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

দুই বছর ড্রেজিং বন্ধ মোংলায়

নৌ চ্যানেলে হুমকির মুখে জাহাজ চলাচল

বাগেরহাট প্রতিনিধি

দুই বছর ড্রেজিং বন্ধ মোংলায়

বালু রাখার জায়গা নিয়ে জটিলতায় প্রায় দুই বছর ধরে মোংলা বন্দরের নৌ চ্যানেলে ড্রেজিং বন্ধ রয়েছে। এতে এ বন্দরে দেশি-বিদেশি বড় জাহাজ প্রবেশে বাধা সৃষ্টির আশঙ্কা করছেন বন্দর ব্যবহারকারী ব্যবসায়ীরা। নাব্য সংকটে বন্দর জেটিতে আসতে পারছে না ৯ মিটার গভীরতার জাহাজ। বন্দর কর্তৃপক্ষ বলছে, ড্রেজিংয়ের বালু বা পলিমাটি রাখতে নতুন জায়গা পেতে সময় লাগবে। তবে আপাতত পুরনো জায়গায় মাটি ফেলে সংকট দূর করা হবে। বিষয়টি খুবই গুরুত্ব সহকারে দেখা হচ্ছে। এদিকে পুরনো জায়গা মোংলার জয়মণি এলাকায় বালু ফেলার নীতিগত সিদ্ধান্ত নেওয়া হলেও তা নিয়ে সংশয় রয়েছে। এ অবস্থায় ড্রেজিং প্রকল্পটির ব্যয় বেড়েছে প্রায় ২০০ কোটি টাকা।

মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষ সূত্রে জানা গেছে, এ বন্দরের পশুর নদের (নৌ চ্যানেল) হাড়বাড়িয়া এলাকা থেকে বন্দর জেটি পর্যন্ত এলাকার নাম ‘ইনার বার’। এর ২৩ দশমিক ৪ কিলোমিটার এলাকায় ক্যাপিটাল ড্রেজিংয়ের উদ্বোধন করা হয় ২০২১ সালের ১৩ মার্চ। ওই বছরের ১০ এপ্রিল ৭৯৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ড্রেজিং শুরু হয়। ড্রেজিং করা বালু বা পলি মাটি ফেলার জন্য মোংলা উপজেলায় ৭০০ একর জমি ও খুলনার দাকোপ উপজেলায় বানিশান্তা এলাকায় ৩০০ একর জমি হুকুম দখল করা হয়। মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়নের জয়মণি এলাকার জমিতে বালু ফেলা হয়। কিন্তু পশুর নদের পাশে খুলনার বানিশান্তায় তিন ফসলি জমিতে বালু ফেলা ঠেকাতে আন্দোলন শুরু করেন এলাকাবাসী ও বিভিন্ন সংগঠন। তাদের আপত্তির মুখে সেখানে বালু ও মাটি ফেলা বন্ধের সিদ্ধান্ত নেয় বন্দর কর্তৃপক্ষ। সেই থেকে এখন পর্যন্ত প্রায় দুই বছর ধরে ড্রেজিং বন্ধ রয়েছে। এ অবস্থায় মোংলা উপজেলার বুড়িরডাঙ্গা ইউনিয়নের শানবান্ধা মৌজায় ২৬২ একর জমিতে বালু ফেলার একটি প্রস্তাবনা বাগেরহাট জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে ভূমি মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে এরই মধ্যে প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হয়ে গেছে ২০২২ সালের জুন মাসে। এ পর্যন্ত কাজ সম্পন্ন হয়েছে ৩৪ শতাংশ। নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ করতে না পারায় প্রকল্প ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৯৯২ কোটি টাকায়, যা গত বছরের ৪ এপ্রিল একনেক সভায় অনুমোদন পায়। মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী শেখ শওকত আলী বলেন, ইনার বারের গভীরতা সাড়ে ৫ থেকে ৬ মিটার। ড্রেজিং করে সাড়ে ৮ মিটার করার কথা। ড্রেজিং করা স্থান থেকে যে পরিমাণ পলি অপসারণ করা হয়েছিল, প্রায় দুই বছরে তার ৭০ ভাগ আবার জমা হয়েছে। এ অবস্থায় ড্রেজিং প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। পুরনো জায়গা জয়মণি এলাকায় আপাতত বালু ফেলা হবে। এ কার্যক্রম আগামী সপ্তাহের মধ্যে শুরু হবে।

সর্বশেষ খবর