মাদারীপুরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে ইটভাটার মাটি, বালু ও ইট বহনকারী ট্রাক্টর (টলি), মাহেন্দ্রা এবং শ্যালো ইঞ্জিনচালিত অবৈধ যানবাহন। এতে একদিকে নষ্ট হচ্ছে সড়ক, অন্যদিকে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা। হচ্ছে মারাত্মক শব্দদূষণ। বাতাসে উড়া ধুলাবালুর প্রভাব পড়ছে পরিবেশের ওপর। প্রশাসনের নাকের ডগায় এ ধরনের অবৈধ যানবাহন চলাচল করছে। এতে ক্ষুব্ধ সাধারণ নাগরিকরা। প্রশাসনের কাছে এসব গাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন স্থানীরা। জানা গেছে, ২৮ জানুয়ারি অবৈধ মাহিন্দ্রের ধাক্কায় মাদারীপুরের কালকিনিতে মো. নেছার উদ্দিন হাওলাদার (৩৮) নামে এক আইনজীবী সহকারী নিহত হন। একটি অবৈধ মাহিন্দ্র এসে পেছন থেকে নেছার উদ্দিনের মোটরসাইকেলকে ধাক্কা দেয়। এতে মারা যান নেছার। এর প্রতিবাদে নিহতের স্বজন ও স্থানীয় জনতা সড়ক অবরোধ করে। তারা ওই ঘাতক মাহিন্দ্র আগুন দিয়ে পুড়িয়ে দেয়। এর আগে ডাসার থানার বালিগ্রাম ইউনিয়নের ধুলগ্রাম নামকস্থানে রেজাউল করিম বারেক নামে এক বীর মুক্তিযোদ্ধা ইটবাহী নছিমনের ধাক্কায় নিহত হন। শুধু মুক্তিযোদ্ধা বারেক ও নেছারের প্রাণহানি নয়। প্রতিনিয়তই ঘটছে এমন দুর্ঘটনা। এর পরও পুলিশের নাকের ডগা দিয়েই চলছে এসব অবৈধ যানবাহন। সরেজমিন দেখা গেছে, জেলার বিভিন্ন এলাকায় সড়ক-মহাসড়ক দিয়ে প্রতিনিয়ত কয়েক শ বালু ও ইটবাহী মাহেন্দ্রা, ট্রাক্টর, শ্যালো ইঞ্জিনচালিত গাড়ি চলছে। মাটি, ইট ও বালুবাহী অতিরিক্ত ওজনের এসব গাড়ির কারণে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা পাকা সড়কগুলোর কার্পেটিং উঠে যাচ্ছে। সড়কে খানাখন্দের সৃষ্টি হচ্ছে। বাড়ছে জনদুর্ভোগ। ঘটছে দুর্ঘটনা। এসব যানবাহন চালকদের ড্রাইভিং লাইসেন্স নেই। স্থানীয় বাসিন্দা সামসুল হক বলেন, মাদারীপুরের বিভিন্ন সড়ক-মহাসড়কে প্রতিনিয়ত অবৈধ যানবাহন চলাচল করে। আমরা শুনেছি এসব অবৈধ যানবাহন থেকে ট্রাফিক পুলিশ নিয়মিত অবৈধ সুবিধা পেয়ে থাকেন। এ কারণে বন্ধ করা যাচ্ছে না অবৈধ যানবাহন। মাদারীপুর উন্নয়ন সংগ্রাম পরিষদের সভাপতি অ্যাডভোকেট মাসুদ পারভেজ বলেন, ইটভাটার মাটি, বালু ও ইট বহনের ট্রাক্টরের চাকায় কোটি কোটি টাকার সড়ক নষ্ট হচ্ছে। মারাত্মক শব্দদূষণ ও ধুলাবালুর প্রভাব পড়ছে পরিবেশের ওপর। প্রাণহানিও ঘটছে প্রতিনিয়ত। এসব যানবাহন ও চালকদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানান তিনি। মাদারীপুরের অতিরিক্তি পুলিশ সুপার মো. আলাউল হাসান বলেন, অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। পুলিশের মাসোহারা গ্রহণের অভিযোগ অস্বীকার করে তিনি বলেন, অবৈধ যানবাহনকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না।