সোমবার, ৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

লেট ব্লাইট আতঙ্কে আলুচাষিরা

লক্ষ্যমাত্রার বেশি আবাদ লালমনিরহাটে

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

লেট ব্লাইট আতঙ্কে আলুচাষিরা

খেত রক্ষায় ছিটানো হচ্ছে ওষুধ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঠান্ডার সঙ্গে প্রকৃতিতে এখন ঘন কুয়াশার দাপট। টানা ঘন কুয়াশায় খেতে লেট ব্লাইট রোগ দেখা দিতে পারে এমন শঙ্কায় দিশাহারা লালমনিরহাটের আলুচাষিরা। আলুর রোগ প্রতিরোধে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে কৃষকদের পরিমিত স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ। লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের তথ্যমতে, এবার জেলায় আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৬ হাজার ১৮০ হেক্টর জমিতে। অর্জিত হয়েছে ৬ হাজার ৯৩০ হেক্টর। এবার লক্ষ্যমাত্রার থেকে ৮০০ হেক্টরের বেশি জমিতে আলুর চাষ হয়েছে উত্তরের এ জেলায়। সরেজমিনে দেখা যায়, আলু খেতে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা। খেত দেখে ভালো মনে হলেও শঙ্কায় আছেন তারা। নিয়মিত কুয়াশা কাটাতে স্প্রে করায় খরচ বাড়ছে তাদের। ঘন কুয়াশার সঙ্গে যুদ্ধ করে ভরা আলুর মাঠ রক্ষা করে চলেছেন কৃষক। আদিতমারীর কমলাবাড়ি এলাকার আলুচাষি দীন ইসলাম বলেন, যদি কোনো আলু খেতে ‘লেট ব্লাইট’ রোগ দেখা দেয়, রাতারাতি পুরো খেত নষ্ট করে দেয়। তখন পুরো পরিশ্রম আর বিনিয়োগ মাটি হয়ে যাবে। যদিও এখনো রোগ ধরেনি, তবে আরও কয়েকদিন ঘন কুয়াশা হলে যে কোনো সময় আক্রান্ত হতে পারে। লালমনিরহাটে যে পরিমাণ কুয়াশা পড়ছে তাতে খেতের ক্ষতির আশঙ্কাই করছি। এ জন্য আগাম সতর্কতা অবলম্বন করছি। হারাটি এলাকার হারুন জানান, আলু খেতে আগাম প্রস্তুতি হিসেবে পরিমিত ছত্রাকনাশক স্প্রে করছি। তবু ভয় কাটছে না। আল্লাহর রহমতে বৃষ্টি হয়নি। বৃষ্টি হলে ক্ষতির শঙ্কা আরও বাড়বে। একই কথা জানান তছলিম উদ্দিন। তিনি এবার জমি লিজ নিয়ে ১২ বিঘায় আলু চাষ করেছেন। অনেক খরচ হয়েছে। খেত দেখে ফলন ভালো হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন। তবে ঘন কুয়াশার কারণে সেই স্বপ্ন বাস্তবে পরিণত হওয়া নিয়ে শঙ্কা তৈরি হয়েছে। তছলিম উদ্দিন বলেন, রাতে ঘুম হয় না। আলু খেতেই রাত্রীযাপন করছি। তবে বৃষ্টি না হলে খুব বেশি ক্ষতির আশঙ্কা নেই। কেননা নিয়মিত কৃষি অফিসের পরামর্শে পরিচর্চা চলছে। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর লালমনিরহাটের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) সৈয়দা সিফাত জাহান বলেন, আলু খেতের জন্য সবচেয়ে বেশির শঙ্কার কারণ হলো ঘন কুয়াশা। এই ঘন কুয়াশা দীর্ঘদিন থাকলে খেতে লেট ব্লাইট হতে পারে। আমরা কৃষি অফিস থেকে এ নিয়ে চাষিদের নিয়মিত আগাম প্রস্তুতি হিসেবে পরিমিত ছত্রাকনাশক স্প্রে করার পরামর্শ দিচ্ছি। সেই সঙ্গে আমাদের কর্মকর্তারা মাঠে গিয়ে পরামর্শসহ খেত পরিদর্শন করছেন। কোথাও কোনো সমস্যা মনে হলে সঠিক পরিচর্চার পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। এখন পর্যন্ত কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। তিনি আলুচাষিদের লেট ব্লাইট থেকে সজাগ থাকার আহ্বান জানান।

সর্বশেষ খবর