মঙ্গলবার, ৬ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

সরিষার ফলন নিয়ে শঙ্কা

ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি

সরিষার ফলন নিয়ে শঙ্কা

ঠাকুরগাঁওয়ের সরিষা খেত -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঠাকুরগাঁওয়ে গতবারের তুলনায় এ বছর প্রায় সাড়ে ৩ হাজার হেক্টর বেশি জমিতে আবাদ হয়েছে সরিষা। গত বছর ফলন ও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষক তেলজাতীয় এ ফসল চাষে আগ্রহী হয়েছেন। কিন্তু এবার সরিষা গাছের গ্রোথ ও ফুল ভালো এলেও অতিরিক্ত ঠান্ডা ও ঘন কুয়াশায় গাছে ফল কম ধরায় এর ফলন নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন তারা। যদিও এ বিষয়ে চাষিদের সার্বক্ষণিক পরামর্শ দেওয়ার কথা বলছেন কৃষি বিভাগের কর্মকর্তারা।  সরেজমিনে দেখা যায়, জেলায় প্রায় প্রতিটি মাঠসহ আনাচেকানাচে সরিষা চাষ করা হয়েছে। সর্বত্রই গাছের ডগায় ডগায় হলুদ ফুলের মনোমুগ্ধকর ও নয়নাভিরাম দৃশ্য। ফুলের ঘ্রাণ ও হলুদ রঙের সমারোহ মন কাড়ছে সবার। তবে এর ফলন নিয়ে চরম শঙ্কায় রয়েছেন বেশির ভাগ চাষি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের দেওয়া তথ্য মতে, জেলায় এবার ১৯ হাজার ৭৯০ হেক্টর জমিতে সরিষা আবাদ হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরে সরিষার আবাদ হয়েছিল ১৫ হাজার ৯২৩ হেক্টর জমিতে। ওই বছর ফলন ও বাজার মূল্য ভালো পাওয়ায় এবার কৃষকরা বেশি করে চাষ করেন সরিষা। জেলায় ফেব্রুয়ারি মাসে ঘন কুয়াশা ও ঠান্ডার প্রকোপ কিছুটা কমলেও জানুয়ারি মাসে সরিষা গাছে ফুল আসার সময় অতিরিক্ত ঠান্ডা ও কুয়াশা ছিল। এ কারণে গাছে ফল ধরেছে কম দাবি করে কৃষকরা বলছেন, নানা ওষুধ ব্যবহার করেও মেলেনি প্রতিকার। এবার সরিষার ফলনে আবাদের খরচটুকুও উঠে আসবে কি না তার নিশ্চয়তা নেই। সদর উপজেলার আকচা ইউনিয়নের মুন্সিপাড়া গ্রামের ইসমাইল হোসেন বলেন, ৩ বিঘা জমিতে সরিষার চাষ করেছি। গতবার ফলন ও ভালো দাম পাওয়ায় খরচ বাদে ৩ বিঘা জমিতে প্রায় ৭০-৮০ হাজার টাকা পেয়েছিলাম। এবারও সেই আশায় সরিষা চাষ করি। কিন্তু এবার হামারতি খুব কুয়াশা ও ঠান্ডার কারণে গাছত তেমন ফল আসেনি। ৩০ হাজার টাকা খরচ করে মনে হয় ধরা খাইলাম। এবার খরচটাও উঠে আসিবেনি। খালি মুইহে না হায় হামারতি এইবার যারা যারা সরিষা করছে সবাই ধরা খাইছে। সবার ফসলের একই অবস্থা। দবিরুল ইসলাম নামে চাষি বলেন, গতবারের চেয়ে এবার হামারতি কমবেশি সবাই সরিষা আবাদ করছে। কিন্তু কুয়াশায় গাছত ফল ধরেনি। জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের অতিরিক্ত উপপরিচালক আলমগীর কবির বলেন, ভোজ্য তেল সয়াবিনের দাম বেশি হওয়ায় কৃষকরা সরিষা আবাদ করে নিজেদের উৎপাদন করা তেল ব্যবহারে ঝুঁকছেন। সরিষার অপজাত খইল ও গাছ বিভিন্ন কাজে ব্যবহার হয়। তাই জেলায় সরিষার আবাদ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ ছাড়াও সরিষার চাষ আরও বৃদ্ধি করতে স্বল্প মেয়াদি আমন ধানের জাত চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করছে কৃষি বিভাগ।

সর্বশেষ খবর