রবিবার, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

ছয় বছরেও শেষ হয়নি কাজ

সদর হাসপাতালের ২৫০ শয্যার ভবন নির্মাণ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি

ছয় বছরেও শেষ হয়নি কাজ

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের নির্মাণাধীন ভবন -বাংলাদেশ প্রতিদিন

লালমনিরহাট সদর হাসপাতালের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নতুন ভবন নির্মাণকাজ শুরুর ছয় বছর পরও সম্পন্ন হয়নি। এ ভবন নির্মাণকাজের মেয়াদও শেষ হয়েছে চার বছর আগে। এখানে চালু করা যায়নি চিকিৎসা কার্যক্রম। অন্যদিকে জায়গা সংকটে আগের স্থানের ভবনেই প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্যসেবা দিতে হিমশিম খাচ্ছেন চিকিৎসক-নার্সরা। লালমনিরহাট গণপূর্ত বিভাগ ও সদর হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়কের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, এ হাসপাতালের ১০ তলা ভিতযুক্ত আট তলা ভবন নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায় ঢাকার মিরপুর এলাকার ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স সাজিন এন্টারপ্রাইজ (জেভি)। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ৩৬ কোটি ৯০ লাখ টাকার এ প্রকল্প বাস্তবায়ন করছে গণপূর্ত বিভাগ। চুক্তি অনুযায়ী ১৮ মাসে নির্মাণকাজ সম্পাদনের সময়সীমায় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানটি কার্যাদেশ পায় ২০১৭ সালের ১৬ আগস্ট। একই বছরের ২২ অক্টোবর নির্মাণকাজ শুরু করে ২০১৯ সালের ২১ আগস্ট শেষ করার কথা ছিল এতে। কিন্তু মেয়াদ শেষ হওয়ার পরও চার বছর পেরিয়ে গেছে। এখন পর্যন্ত নির্মাণকাজ শেষ হয়নি। যদিও ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের স্থানীয় প্রতিনিধির দাবি, ওই ভবনের নির্মাণকাজ শেষ হয়েছে। শিগগিরই শেষ হবে সরঞ্জামাদি বসানো। রঙের কাজ করে বুঝিয়ে দেওয়া হবে ভবন। লালমনিরহাট গণপূর্ত বিভাগের এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, সদর হাসপাতাল ১০০ শয্যা থেকে ২৫০ শয্যায় উন্নীতকরণ প্রকল্পে ১০ তলা ভিতযুক্ত ভবনের আট তলা নির্মাণ করা হচ্ছে। এতে স্যানিটারি, পানি সরবরাহ, আন্তবিভাগ এবং বহির্বিভাগের বৈদ্যুতিক লাইন, ভূগর্ভস্থ জলাধার, পাম্প হাউস, গভীর নলকূপ, সীমানাপ্রাচীর, শীতাতপ নিয়ন্ত্রণ যন্ত্র, পিএবিএক্স, লিফট, জেনারেটর, সাবস্টেশন বিল্ডিং অ্যান্ড ইকুইপমেন্টস, অগ্নিনির্বাপক, অ্যাপ্রোচ রোড, কার পার্কিং, কম্পাউন্ড লাইটিং অ্যান্ড অরবোরিকালচার করার বিষয়ে শিডিউলে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু উল্লেখ ছিল না সার্ভিস বিল্ডিং। পরে সার্ভিস বিল্ডিংয়ের কাজ যুক্ত করা হয়েছে। সদর হাসপাতালের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. মো. আবদুল বাসেত বলেন, ‘বহির্বিভাগে চিকিৎসা নিতে প্রতিদিন এ জেলার ৮০০ থেকে ১৪০০ রোগী আসে। জায়গার অভাবে তাদের সঠিকভাবে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এ ছাড়া আন্তবিভাগে শয্যা ও কেবিন সংকটে অনেক রোগীকে এ হাসপাতাল থেকে রংপুরে পাঠানো হচ্ছে। হাসপাতালের নির্মাণকাজ শেষ করা হলে সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। নির্মাণকাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমরাও রোগীদের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে পারছি না। সদর ১০০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. রমজান আলী বলেন, ‘নতুন ভবনের কাজ এখনো শেষ না হওয়ায় জায়গা সংকটে রোগী, নার্স, চিকিৎসকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। বিষয়টি তিনি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে একাধিকবার অবহিত করেছেন’। লালমনিরহাট গণপূর্ত উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী হাসান মাহমুদ বলেন, ‘করোনা সংকট মোকাবিলা ও ডিজাইন পরিবর্তনজনিত সমস্যায় নির্ধারিত সময় ২০১৯ সালের ২১ আগস্টের মধ্যে নির্মাণকাজ শেষ করতে পারেনি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এ ছাড়া হাসপাতালের টেন্ডার শিডিউলে সার্ভিস বিল্ডিং ধরা ছিল না। তিনি আশা প্রকাশ করেন, চলতি মাসেই ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান নির্মাণকাজ বুঝিয়ে দিতে পারবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর