সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

অবৈধ ইটভাটায় পুড়ছে কাঠ

উজাড় হচ্ছে বন, হুমকিতে জীববৈচিত্র্য

মনিরুল ইসলাম মনি, সাতক্ষীরা

অবৈধ ইটভাটায় পুড়ছে কাঠ

সাতক্ষীরার একটি ইটভাটায় পোড়ানোর জন্য রাখা কাঠ -বাংলাদেশ প্রতিদিন

পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র ও সরকারি লাইসেন্স ছাড়াই চলছে সাতক্ষীরার অধিকাংশ ইটভাটা। এর মধ্যে ৯৬টি ইটভাটায় নিয়ম-নীতি না মেনে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। অবাধে কাঠ পোড়ানোয় একদিকে যেমন উজাড় হচ্ছে বন অন্যদিকে ধ্বংস হচ্ছে জীববৈচিত্র্য। এ ছাড়া ফসলি জমির ওপরিভাগের মাটি কেটে তৈরি করা হচ্ছে ইট। এতে কমছে জমির উর্বরাশক্তি। ইট পোড়ানোর কালো ধোঁয়ায় বাড়ছে পরিবেশ দূষণ। মাঝেমধ্যে জেলা প্রশাসকের সহায়তায় পরিবেশ অধিদফতর দু-একটি ভাটায় অভিযান চালালেও প্রতিকার মিলছে না।

জেলা পরিবেশ অধিদফতরের তথ্যমতে, সাতক্ষীরায় ৯৬টি ইটভাটার মধ্যে ঝিঁকঝাঁক ভাটা রয়েছে ৮৩টি। বাকিগুলো সনাতনী পদ্ধতির। ঝিঁকঝাঁক ভাটার ৬৭টিরই পরিবেশ অধিদফতরের ছাড়পত্র নেই। পরিবেশের ছাড়পত্রবিহীন এসব ইটভাটার সরকারি লাইসেন্সও নেই। শুধু উচ্চ আদালতে রিটের মাধ্যমে রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে বছরের পর বছর মালিকরা অবৈধভাবে চালাচ্ছে এসব ভাটা। জানা যায়, সম্প্রতি উচ্চ আদালত এক আদেশে দেশের সব অবৈধ ইটভাট বন্ধের নির্দেশ দিয়েছেন। এক রিটের প্রাথমিক শুনানি শেষে গত ১৩ নভেম্বর এ আদেশ দেন। পরিবেশবাদী সংগঠন হিউম্যান রাইটস অ্যান্ড পিস ফর বাংলাদেশের পক্ষে ১০ নভেম্বর উচ্চ আদালতে এই রিট করা হয়েছিল। উচ্চ আদালতের নির্দেশনা উপেক্ষা করে জেলার ৯৬টি ইটভাটায় নির্বিচারে পোড়ানো হচ্ছে কাঠ। অভিযোগ রয়েছে, অবৈধ ইটভাটাগুলো পুরোদমে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে পরিবেশ অধিদফতর ও স্থানীয় প্রশাসনের যথাযথ নজরদারি না থাকায়। সাতক্ষীরা পরিবেশ অধিদফতরের সহকারী পরিচালক সরদার শরীফুল ইসলাম জানান, অবৈধ ইটভাটা বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। লাইসেন্স না থাকায় গত ডিসেম্বর মাসে সদর উপজেলার বাবুলিয়া বিডি ব্রিকস গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ছাড়া পরিবেশের ছাড়পত্র না থাকায় জানুয়ারি মাসে আটটি ইটভাটাকে জরিমানা করা হয়েছে। কলারোয়া তামিম ব্রিকস ও কালিগঞ্জ উপজেলার রূপা ব্রিকস সিলগালাসহ মালিকদের কাছ থেকে জরিমানা আদায় করা হয়েছে ৭ লাখ টাকা।

সাতক্ষীরার জেলা প্রশাসক মোহম্মদ হুমায়ুন কবির এই প্রতিবেদককে জানান, অবৈধ ইটভাটা বন্ধে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। লাইসেন্স ও পরিবেশের কাগজপত্র না থাকায় ইতোমধ্যে বেশকিছু ইটভাটায় অভিযান চালিয়ে জরিমানাসহ ভাটা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। পর্যায়ক্রমে মোবাইল কোর্ট পরিচালনা করে সাতক্ষীরার সব অবৈধ ইটভাটার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

সর্বশেষ খবর