সোমবার, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

পিঁয়াজে হাসছে যমুনার চর

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

পিঁয়াজে হাসছে যমুনার চর

বগুড়ায় পিঁয়াজ খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত কৃষক -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বগুড়ার সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনট উপজেলায় যমুনার বিস্তীর্ণ চরে হয়েছে পিঁয়াজ আবাদ। ভালো ফলনের স্বপ্ন দেখছেন চাষিরা। কৃষকরা বলছেন, আগে চরাঞ্চলে পিঁয়াজ চাষ কম হতো। এখন বেড়ে কয়েক গুণ হয়েছে। বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে জেলায় পিঁয়াজ আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে ৩ হাজার ৭৭৫ হেক্টর জমিতে। উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৭৫৪ মেট্রিক টন। এ পর্যন্ত জেলায় পিঁয়াজ আবাদ হয়েছে ৩ হাজার ২৩৫ হেক্টর জমিতে। চারা রোপণ চলমান রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে। এ ছাড়া জেলায় ৮০৫ হেক্টর জমি থেকে আগাম জাতের পিঁয়াজ তোলা হয়েছে।

জানা যায়, সারিয়াকান্দি, সোনাতলা ও ধুনটের শতাধিক কৃষক চরে পেঁয়াজ চাষ করে আর্থিকভাবে লাভবান হওয়ার আশা করছেন। বাজারে দাম বেশি হওয়ায় চরাঞ্চলের কৃষকরা অন্য ফসলের চেয়ে পিঁয়াজ চাষে বেশি আগ্রহী। ন্যায্যমূল্যের নিশ্চয়তা পেলে চরে পিঁয়াজ চাষ আরও বাড়বে জানিয়েছেন কৃষকরা।  সাধারণত নভেম্বর মাস থেকে যমুনা নদীতে পানি কমতে শুরু করে। তখন চর পিঁয়াজ চাষের উপযোগী করে তোলার জন্য কাজে নেমে পড়েন কৃষকরা। পৌষ মাস থেকে চারা রোপণ শুরু করেন। চৈত্র মাসে শুরু হয় পিঁয়াজ তোলা। চরে পিঁয়াজ চাষে বিঘাপ্রতি খরচ হয় ১৩-১৫ হাজার টাকা। এক বিঘায় গড়ে ৪০-৫০ মণ ফলন হয়। খরচ বাদে প্রতি বিঘায় ৪০-৪৫ হাজার টাকা লাভের হিসাব গুনছেন কৃষকরা। দেড় থেকে দুই মাস পরই পিঁয়াজ ঘরে তুলবেন চাষিরা। এখন খেত পরিচর্যায় ব্যস্ত তারা।সারিয়াকান্দি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, আগে চরের জমি পতিত পড়ে থাকত। তেমন চাষাবাদ হতো না। এখন সেখানে বিভিন্ন ফসল ফলছে। চলাঞ্চলে শতকরা ২০-২৫ ভাগ জমিতে পিঁয়াজ আবাদ হয়। জেলার চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে যায় চরাঞ্চলের পিঁয়াজ। সারিয়াকান্দি চরঘাগুয়া এলাকার কৃষক মইফুল ইসলাম জানান, আগে সারা বছর যমুনায় পানিপ্রবাহ থাকত। এখন শীত মৌসুমে নদীতে পানি থাকে না। বিশাল এলাকায় ধু ধু চর পড়েছে। তীরবর্তী ভূমিহীন ও প্রান্তিক চাষিরা চরে চাষাবাদ করেন। তিনি বলেন, ভরা বর্ষায় চরে অনেক পলি জমে। পলি পিঁয়াজ খেতে সার হিসেবে কাজ করে। ওষুধ-সারে খরচ কম হয়।

বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক মতলুবর রহমান জানান, জেলায় পিঁয়াজ চারা রোপণ চলমান রয়েছে। আবহাওয়া অনুকূল থাকলে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়াবে। বগুড়ায় স্থানীয়ভাবে ৬০ থেকে ৬৫ ভাগ পিঁয়াজের চাহিদা পূরণ হয়ে থাকে। বাকিটা আমদানির ওপর নির্ভর করে। তিনি আরও জানান, গত বছরের তুলনায় পিঁয়াজ আবাদে লক্ষ্যমাত্রা বেড়েছে। ভালো ফলন হলে স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে অন্য এলাকাও সরবরাহ করা সম্ভব হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর