শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

অজ্ঞাত রোগে টমেটোয় পচন

ওষুধেও মিলছে না প্রতিকার ♦ দিশাহারা চাষিরা

ভোলা প্রতিনিধি

অজ্ঞাত রোগে টমেটোয় পচন

ভোলায় চলতি মৌসুমে টমেটো খেতে অজ্ঞাত রোগ দেখা দিয়েছে। এতে শত শত একর জমির টমেটো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। নানান রকমের কীটনাশক বা বালাইনাশক দিয়েও কোনো কাজ হচ্ছে না। এখন লোকসানের আশঙ্কায় দিশাহারা হয়ে পড়েছেন এখানকার কৃষক। কৃষি বিভাগ বলছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন টমেটো চাষিরা। দ্বীপজেলা ভোলার বোরহানউদ্দিন উপজেলার ছোট মানিকা গ্রামের কৃষক ফরিদুল ইসলাম জানান, তিনি এক একর জমিতে টমেটো চাষ করেছেন। এতে ইতোমধ্যে তার ২ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। ফুলে ফলে ভরে উঠেছিল খেত। ৫ লক্ষাধিক টাকার টমেটো বিক্রি করার আশা ছিল। কিন্তু হঠাৎ টম্যাটোয় কালো দাগ পড়ছে এবং শক্ত হয়ে যাচ্ছে দেখতে পান। এরপর তা পচে যাচ্ছে। সেই সঙ্গে গাছের পাতা, ডগাও শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে। দেখে মনে হয় গোটা খেত পুড়ে গেছে। এরপর তিনি কৃষি কর্মকর্তা, বিভিন্ন ওষুধ কোম্পানির লোকজনের সঙ্গে পরামর্শ করেছেন। কৃষিবিদরা মাঠে সরেজমিনে দেখেছেন, যে ওষুধ দিতে বলেছেন তা-ই দিয়েছেন। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এক একর জমির পুরো টম্যাটোই নষ্ট হয়ে গেছে। একটি টম্যাটোও বিক্রি করতে পারেননি তিনি। শুধু ফরিদের নয়, একইভাবে নষ্ট হয়ে গেছে কৃষক আলম, জাকির, আল আমিন, শাহাবুদ্দিন, জহিরসহ ওই এলাকার প্রায় সব চাষির খেতের টম্যাটো। জাকির হোসেন জানান, তিনি দেড় একর জমিতে টমেটো চাষ করেছেন। মাত্র ২২ কেজি টমেটো বিক্রি করতে পেরেছেন। এখন দাম বেশ ভালো। ফসল নষ্ট না হলে ৫ থেকে ৬ লাখ টাকার টমেটো বিক্রি করতে পারতেন। এখন তিনি এই লোকসান কীভাবে কাটিয়ে উঠবেন তা ভেবে পাচ্ছেন না। কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে বোরহানউদ্দিন উপজেলায় ৯৫ হেক্টর জমিতে উন্নত জাতের টমেটো আবাদ হয়েছে। কৃষকরা জানান, প্রায় সব টমেটো খেতই এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে। বিভিন্ন কোম্পানির কীটনাশক, ছত্রাকনাশক দিয়েও ফসল রক্ষা করতে পারেননি কৃষকরা। বোরহানউদ্দিন উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা গোবিন্দ মন্ডল জানান, বৃষ্টি এবং কুয়াশার কারণে টমেটো খেতে রোগের আক্রমণ হয়েছে। কৃষকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। যারা পরামর্শ মেনে ওষুধ প্রয়োগ করেছে তাদের ক্ষতি কিছুটা কম হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের          কারণে টমেটো খেতে এই রোগের আক্রমণ হয়েছে বলে মনে করছেন পরিবেশবিদ মো. শেখ ফরিদ।

জেলা কৃষি কর্মকর্তা হাসান ওয়ারিসুল কবীর বলেন, দিন-রাতের তাপমাত্রার পার্থক্য এবং কুয়াশার কারণে টমেটো খেতে বলাইট রোগ হয়েছে। নিয়মিত পরিচর্যা এবং ছত্রাকনাশক প্রয়োগের ফলে রোগের আক্রমণ কিছুটা কমেছে।  বাজার দর ভালো, আশা করা যাচ্ছে কৃষকরা ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে পারবেন।

সর্বশেষ খবর