শুক্রবার, ২৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

সমলয় পদ্ধতিতে আগ্রহ কৃষকের

♦ কাটবে শ্রমিক সংকট ♦ বাঁচবে খরচ ও সময়

খন্দকার একরামুল হক সম্রাট, কুড়িগ্রাম

সমলয় পদ্ধতিতে আগ্রহ কৃষকের

কুড়িগ্রামে প্রচলিত পদ্ধতি বাদ দিয়ে আধুনিক যন্ত্রের সাহায্যে ধানের বীজতলা তৈরি করা হয়েছে। কৃষি বিভাগের মতে, এটিকে ‘সমলয়’ পদ্ধতি বলে। এ পদ্ধতিতে ধান চাষে শ্রমিক সংকট নিরসন, অতিরিক্ত খরচ ও সময় বেঁচে যাবে। এ পদ্ধতিতে বীজতলা তৈরি ও চারা রোপণে এ অঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে সাড়া ফেলেছে। জেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, সমলয় পদ্ধতিতে বিশেষ কৃষি যন্ত্রের মাধ্যমে বেলে মাটিতে জৈব সার সংমিশ্রণে প্লাস্টিকের ট্রেতে বোরো ধানের বীজ বপন করা হয়। ৩০-৪০ দিনের মধ্যে সেখানে জন্ম নেওয়া চারা রোপণ উপযোগী হয়ে ওঠে। এতে বাড়তি সারের প্রয়োজন হয় না। জেলার ভূরুঙ্গামারী, উলিপুর, নাগেশ্বরী, চিলমারীসহ বিভিন্ন উপজেলার কৃষকরা এ পদ্ধতিতে চাষাবাদ করছেন। এতে তাদের সময় ও শ্রম সাশ্রয় হচ্ছে। এ পদ্ধতিতে সরিষা, ভুট্টাসহ অন্যান্য ফসলও আবাদ করা হচ্ছে। কৃষি বাণিজ্যিকীকরণে সরকার বিভিন্ন ধরনের প্রণোদনা দিচ্ছে। কৃষি কাজ সহজ ও সাশ্রয়ী করতে কৃষকদের হাতের নাগালে নিয়ে আসা হচ্ছে ধানের চারা রোপণের মেশিন রাইস ট্রান্সপ্লান্টার। রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে চারা রোপণে ধানের প্রতিটি গোছা নির্দিষ্ট ও সমান দূরত্বে থাকে, প্রতিটি গোছায় নির্দিষ্ট পরিমাণ চারা থাকে। এতে ফলনও ভালো হয়। সূত্রমতে, চলতি মৌসুমে কুড়িগ্রামের ৯ উপজেলার ২২টি স্পটে সমলয়ে পদ্ধতিতে চাষাবাদ করা হয়েছে। ভূরুঙ্গামারী উপজেলা কৃষি বিভাগের উদ্যোগে ২০২৩-২৪ অর্থবছরে রবি মৌসুমে কৃষি প্রণোদনা কর্মসূচির আওতায় রাইস ট্রান্সপ্লান্টারে চারা রোপণ করা হচ্ছে। উলিপুরে ধরনীবাড়ী ইউনিয়নের মধুপুর বামনেরহাট এলাকায় দেখা যায়, সেখানে ৩৫ শতক জমিতে ৪ হাজার ৫০০ প্লাস্টিকের ট্রেতে বোরো ধানের বীজ বপন করা হয়েছে। কৃষকরা জানান, কৃষি বিভাগের সহযোগিতা ও দিক নির্দেশনায় সমলয় পদ্ধতিতে বোরো চাষে আগ্রহ বাড়ছে তাদের। তারা ধান কর্তনও করতে চান কম্বাইন হার্ভেস্টারে। ধরনীবাড়ী এলাকার কৃষক চন্দন সরকার (৫০) ও অমরেন্দ্র নাথ (৬১) জানান, সমলয় পদ্ধতিতে বীজ বপন করেছি আমরা। এ পদ্ধতিতে খরচ তেমন নেই বললেই চলে। সারের ব্যবহার না থাকায় আমরা নিশ্চিন্ত। ভূরুঙ্গামারীর কৃষক আশরাফুল বলেন, আগে এক বিঘা জমিতে চারা রোপণ করতে মজুরি খরচ পড়ত ২ থেকে আড়াই হাজার টাকা। কাটতেও একই খরচ হতো। এখন খরচ অনেক কম, সময়ও খুব কম লাগে। কুড়িগ্রাম কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক বিপ্লব কুমার মোহন্ত জানান, উপজেলা কৃষি অফিসাররা ৯ উপজেলায় এ পদ্ধতি নিয়ে কাজ করছেন। ২২টি স্পটে এ সমলয় পদ্ধতিতে ৫০০ হেক্টর জমিতে চারা রোপণ করা হয়েছে।

 

সর্বশেষ খবর