শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

প্রবেশ পথে ভাঙা কালভার্ট, নেই দর্শনার্থী

নয়নাভিরাম সিংড়া ফরেস্ট

রিয়াজুল ইসলাম, দিনাজপুর

প্রবেশ পথে ভাঙা কালভার্ট, নেই দর্শনার্থী

দীর্ঘদিন ভেঙে পড়ে আছে বীরগঞ্জের সিংড়া ফরেস্টে ঢোকার রাস্তার কালভার্ট -বাংলাদেশ প্রতিদিন

নিরিবিলি, গাছ-গাছালির নয়নাভিরাম দিনাজপুরে বীরগঞ্জের সিংড়া ফরেস্ট। তবে এর প্রবেশ পথে কালভার্টটি ছয় মাস ধরে ভাঙা অবস্থায় পড়ে আছে। বীরগঞ্জ সিংড়া জাতীয় উদ্যানের মধ্য দিয়ে বয়ে চলা নর্ত নদীর ওপর সেতুটির সৌন্দর্যহীন দশা। সেতুর অনেক রেলিং হারিয়ে গেছে। নর্ত নদী সজীব রাখতে খনন হলেও এর দুই পাশে বালুর উঁচু ঢিবি হয়ে আগোছোলা অবস্থায় রয়েছে। শালবনের ভিতরে পর্যটকদের জন্য নেই নিরাপত্তা কিংবা উন্নতমানের বিশ্রামাগার। হাতেগোনা যা বিশ্রামাগার আছে সেখানে পানি, পয়নিষ্কাশনসহ দর্শনার্থীদের সুযোগ-সুবিধা কম। অবকাঠামোগত সুবিধা নেই। এসব কারণে দিন দিন কমছে এখানে দর্শনার্থীর সংখ্যা। সংশ্লিষ্টরা জানান, ২০১০ সালের ১০ অক্টোবর বীরগঞ্জের ভোগনগর ইউনিয়নে ৭৫৫.৫০ একর ভূমির ওপর অবস্থিত এ বনকে জাতীয় উদ্যান ঘোষণা করে বনবিভাগ। বিলুপ্ত প্রায় শকুন রক্ষা ও প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষায় ২০১২ সালে উত্তরবঙ্গে একমাত্র শকুন উদ্ধার ও পরিচর্যা কেন্দ্রটি সিংড়া ফরেস্টে স্থাপন করা হয়।

দিনাজপুর শহর থেকে সড়ক পথে ৪০ কি.মি. উত্তরে বীরগঞ্জ উপজেলায় অবস্থিত। বীরগঞ্জ শহর থেকে এর দূরত্ব ৪ কি.মি.। দিনাজপুর থেকে বীরগঞ্জ হয়ে সড়ক পথে আসা যায়।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, নর্ত নদী বারোমাস সজীব রাখা, এর ওপর ঝুলন্ত সেতু, একটি টাওয়ার স্থাপন, শিশু পার্ক তৈরি, সুন্দর একটি ফটক নির্মাণসহ কিছু সংস্কারমূলক কাজ করা হলেই দর্শনার্থী বৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে। এতে রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি সিংড়া শালবন হয়ে উঠতে পারে পর্যটকদের অন্যতম দর্শনীয় স্থান; বললেন বনে আসা আবদুর রাজ্জাক, ফরহাদ হোসেন, লালুসহ কয়েকজন স্থানীয় পর্যটক।

তারা বলছেন, একসময়ে বন্য জীবজন্তুর অভায়রণ্য ছিল সিংড়া ফরেস্ট। এখন আর সেই বাঘ, নীল গাই নেই। কোনো পর্যটক যদি বনভোজন উৎসব করতে চায় আসতে হবে শীতকালে। অন্য সময়েও অনেকে আসেন। বনের সবুজময় ভরা যৌবন ও নদীর উচ্চলতা দেখতে চাইলে আসতে হবে বর্ষাকালে। সারি সারি আকাশ ছোঁয়া দীর্ঘ সুউচ্চ শাল গাছের সবুজ আচ্ছাদন পর্যটকদের দূর থেকে যেন হাতছানি দিয়ে যায়। বনের মধ্য দিয়ে একাকী হাঁটতে হাঁটতে হয়ত মনে পড়তে পারে পুরনো দিনের গান। বনে প্রবেশেই শোনা যাবে পাখির কিচিরমিচির শব্দ। দেখা যাবে তিলা ঘুঘু, রাজঘুঘু, কাঠঠোকরা, বুলবুলি, হাঁড়িচাচা পাখি, শকুনসহ অনেক পাখি। বীরগঞ্জ সিংড়া জাতীয় উদ্যানের বিট কর্মকর্তা গয়া প্রাসাদ জানান, ভ্রমণ পিপাসুদের জন্য রয়েছে ছোট রেস্ট হাউস। দুটি পিকনিক স্পট। বনের সব রাস্তা পাকা করা হচ্ছে। নদীর পাড়ের বালু সরানো হবে শিগগিরই। এ জন্য টেন্ডার করা হয়েছে। সেতুর রেলিং চুরি রোধ করা যাচ্ছে না। প্রবেশ পথের কালভার্টটি গত বছরের সেপ্টেস্বর মাসের দিকে ভেঙে গেছে। এতে অসুবিধা হচ্ছে। এটি নির্মাণের বিষয় জানানো হয়েছে, শিগগিরই হবে আশা করছি। সিংড়া ফরেস্ট জাতীয় উদ্যানকে আরও আকর্ষণীয় করতে বিভিন্ন প্রস্তাব রয়েছে। এরই মধ্যে এর বাউন্ডারির জন্য সার্ভে করা হচ্ছে।

সর্বশেষ খবর