শনিবার, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

দুই দিন পড়ে ছিল গণপূর্তের সাবেক কর্মচারীর লাশ

গাইবান্ধা প্রতিনিধি

মৃত্যুর পর দুই দিন মোতাহার আলী মুন্সি (৭০) নামে এক ব্যক্তির দাফন আটকে রাখার অভিযোগ পাওয়া গেছে। বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তার লাশ ফেলে রেখে দুদিন ধরে চলে দফায়-দফায় বৈঠক। পরে জমি বিক্রির ৬০ লাখ টাকার চেক হাতে পেয়ে রাত ১০টার দিকে নিঃসন্তান ওই ব্যক্তির দাফন করতে দেয় স্বজনরা। গাইবান্ধার পলাশবাড়ী উপজেলার বেতকাপা ইউনিয়নের সাকোয়া মাঝিপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মৃত মোতাহার আলী মুন্সি গণপূর্ত বিভাগের সাবেক হেড ক্লার্ক। ইউপি চেয়ারম্যান, মৃতের স্বজন ও স্থানীয়রা জানান, মোতাহার আলী মুন্সি ও তার স্ত্রী মাসুমা বেগম নিঃসন্তান ছিলেন। মারজিয়া (১৫) নামে তাদের এক পালিত মেয়ে রয়েছে। মোতাহার আলী গণপূর্তের চাকরির সুবাদে ঢাকার কলাবাগান এলাকায় বসবাস করতেন।

তিনি দীর্ঘদিন ধরে অ্যাজমাসহ ক্যান্সারে আক্রান্ত ছিলেন। বুধবার ভোর ৫টার দিকে রাজধানীর আনোয়ার খান মডার্ন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মৃত্যুবরণ করেন। ওইদিনই স্ত্রী মাসুমা বেগম, পালিত মেয়ে মার্জিয়া ও স্ত্রীর বড়ভাই নূরুল ইসলাম কাজী দাফনের জন্য লাশ নিয়ে গ্রামের বাড়ি পলাশবাড়িতে পৌঁছেন। এরপর মৃতের চাচাতো ভাই-বোন, ভাতিজাদের সঙ্গে শুরু হয় জমি বিক্রির টাকার ভাগ নিয়ে দ্বন্দ্ব-দরবার। এক পর্যায়ে স্ত্রী মাসুমা বেগম জনতা ব্যাংক লিমিটেড গাইবান্ধা শাখার অনুকূলে ৬০ লাখ টাকার চেকসহ মুচলেকা লিখে দেওয়ার পর লাশ দাফন করা হয়।

মৃতের ছোট ভাই নজরুল ইসলাম মুন্সি বলেন, তারা লাশ নিয়ে এলেও সঙ্গে চেক নিয়ে আসেনি। পরে ঢাকা থেকে চেক নিয়ে আসতে লাশ দাফনে বিলম্ব হয়েছে।

মৃতের জ্যাঠাতো ভাই সেকেন্দার আলী মুন্সি ও ভাতিজা মানিক দাবি করেন, মোতাহার আলী মুন্সির এলাকায় কিছু ঋণ ছিল। তিনি জীবিত থাকতে এলাকায় মসজিদ-মাদরাসা করার জন্য টাকা দানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সেসব বিষয়ে সিদ্ধান্তে পৌঁছতে লাশ দাফনে কিছুটা দেরি হয়েছে।

এদিকে, মৃতের স্ত্রী মাসুমা বেগম বলেন, তার স্বামী মসজিদ-মাদরাসা নির্মাণের জন্য ১৫ থেকে ২০ লাখ টাকা দানের অসিয়ত করে গেছেন। ঘটনাস্থল থেকে বেতকাপা ইউপি চেয়ারম্যান মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তা ও পলাশবাড়ী থানার উপপরিদর্শক (এসআই) মাহফুজ আলম লাশ দাফনের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। লাশ দাফনের পরই মৃতের স্ত্রী তার পালিত মেয়েকে নিয়ে রাতেই ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেন।

 

সর্বশেষ খবর