রবিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ০০:০০ টা

‘সমঝোতায়’ বিপুল রাজস্ব ক্ষতি

সুনামগঞ্জের যাদুকাটা বালুমহাল

সুনামগঞ্জ প্রতিনিধি

‘সমঝোতায়’ বিপুল রাজস্ব ক্ষতি

সুনামগঞ্জের যাদুকাটা নদীর বালুমহাল -বাংলাদেশ প্রতিদিন

সুনামগঞ্জের যাদুকাটা বালুমহাল ইজারা প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া পক্ষগুলোর মধ্যে ‘সমঝোতা’ হওয়ায় সরকারের ২৮ কোটি টাকার বেশি রাজস্ব কম পাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। বছর বছর এই মহালের ইজারামূল্য প্রায় দ্বিগুণ হারে বাড়লেও এবার গত বছরের তুলনায় কমেছে প্রায় অর্ধেক। ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতা ও জনপ্রতিনিধিরা এই সমঝোতার পেছনে রয়েছেন বলে অভিযোগ আছে। সূত্রমতে, ১৪২৮ বাংলা সনে যাদুকাটা নদীর দুটি বালুমহাল ১২ কোটি, ১৪২৯ সনে ৩২ কোটি এবং চলতি ১৪৩০ বাংলা সনে ৫৪ কোটি ৯২ লাখ টাকায় ইজারা দেয় জেলা প্রশাসন। ভ্যাট ও আয়করসহ ১৪৩০ সনে যার মূল্য ছিল ৬৮ কোটি ৬৫ টাকা। আসছে ১৪৩১ বাংলা সনে দুটি মহাল ৩১ কোটি ২০ লাখ টাকায় সর্বোচ্চ দরদাতা হয়েছেন ইজরাদার। ভ্যাট ও আয়করসহ যার মূল্য দাঁড়াবে ৪০ কোটি ৫৬ লাখ টাকা। গত বছরের তুলনায় প্রায় ২৮ কোটি টাকা কম দিয়েছে সর্বোচ্চ দরদাতা দুটি প্রতিষ্ঠান। তাদের দেওয়া ইজারামূল্য চূড়ান্ত ধরে মহাল দুটি ইজারা দিলে বিপুল রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হবে সরকার। জেলা প্রশাসন সূত্রমতে, ১৪৩১ বাংলা সনের জন্য যাদুকাটা-১ বালুমহালের জন্য ১২ কোটি ৯০ লাখ এবং যাদুকাটা-২ এর জন্য ১৮ কোটি ৩০ লাখে সর্বোচ্চ দরদাতা হন সোহাগ এন্টারপ্রাইজের রতন মিয়া ও রিহান এন্টারপ্রাইজের মজিবুর রহমান। জানা যায়, জেলার বৃহৎ এই দুটি মহালের বিপরীতে অনেকগুলো দরপত্র বিক্রি হয়েছে। প্রতিদ্বন্দ্বীরা দরপত্র দাখিলের আগে নিজেদের মধ্যে সমঝোতা করে নেন। প্রতিটি মহালের বিপরীতে আপস-মীমাংসায় দুটি করে শিডিউল দাখিল করেন তারা। এতে বিগত বছরের তুলনায় প্রায় অর্ধেক মূল্য দিয়েও সর্বোচ্চ দরদাতা নির্বাচিত হন সমঝোতায় ইজারা প্রক্রিয়ায় অংশ নেওয়া দুজন ঠিকাদার। স্থানীয় হাওর বাঁচাও আন্দোলনের সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায় বলেন, যাদুকাটা নদীটি এমনিতেই ইজারাদারের বোমা মেশিন ও ড্রেজার মেশিনে ক্ষতবিক্ষত। এর মধ্যে বিগত বছরের তুলনায় অর্ধেক মূল্যে ইজারা দিলে এই ধ্বংস প্রক্রিয়াকে পরোক্ষভাবে উৎসাহিত করা হবে। সরকারও বঞ্চিত হবে মোটা অঙ্কের রাজস্ব থেকে। সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) বিজন কুমার সিংহ বলেন, সরকারি বিধিবিধান ও নিয়ম মেনেই ইজারা প্রক্রিয়ায় সর্বোচ্চ দরদাতা নির্ধারণ করা হয়েছে। তিন বছরের গড় মূল্যের সঙ্গে শতকরা ১০ ভাগ বৃদ্ধি করে যে ইজারামূল্য নির্ধারণ করা হয়েছে সেটা সরকার পেয়েছে। পেছনে কে কী করল বা না করল সেটা আমাদের দেখার বিষয় নয়।

সর্বশেষ খবর