মঙ্গলবার, ৫ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

শুকনা মৌসুমে প্রবাহ থাকছে না যমুনায়

মানচিত্র থেকে হারিয়ে যাচ্ছে সুখদহ

আবদুর রহমান টুলু, বগুড়া

শুকনা মৌসুমে প্রবাহ থাকছে না যমুনায়

নাব্য সংকটে পথচারীরা হেঁটে পার হচ্ছে যমুনা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বগুড়ায় যমুনা নদীর গতিপথ পরিবর্তন হয়েছে। এ ছাড়া জেলার প্রধান প্রধান নদীগুলো দিন দিন মরে যেতে বসেছে। পানি প্রবাহ কমে যাওয়া, দূষণ, পলি পড়ে ভরাট, দীর্ঘদিন খনন না হওয়া, বাঁধ দিয়ে চাষাবাদ করা, জনবসতির ড্রেনের পানি ফেলা, দুই পাড় ইচ্ছেমতো দখলের কারণে নদীগুলো মরে যাচ্ছে। যমুনা, বাঙ্গালি ও সুখদহসহ অন্যান্য নদী মানচিত্র থেকে হারিয়ে যেতে শুরু করেছে।

সংশ্লিষ্টরা জানান, বর্ষাকালে নদী ভরাট থাকায় গতিপথ তেমন বোঝা যায় না। তবে শুকনা মৌসুমে মূল প্রবাহ থাকছে না যমুনায়। সারিয়াকান্দি উপজেলার কালিতলা গ্রোয়েন বাঁধ থেকে পূর্ব দিকে প্রায় এক কিলোমিটার দূরে মূল প্রবাহ সরে গেছে। নতুন নতুন চর জাগতে শুরু করেছে নদীটিতে। শুকনো মৌসুমে পানি কমে যাওয়ায় চরের মানুষ যমুনা নদী হেঁটে পার হচ্ছে। নদীর কোথাও কোথাও হাঁটু পানি। অনেকেই যমুনায় জেগে ওঠা চরে বিভিন্ন ফসল ফলাচ্ছে। চাষাবাদ হচ্ছে মরিচ, মাষকলাই, ভুট্টা, কাউন, পিঁয়াজ ও বোরো ধান। এ ছাড়া সুখদহ নদীতে এখন আর মাছ দেখা যায় না। ময়লা-আবর্জনা জমে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সুযোগ সন্ধানীরা ধান চাষ করে আবার কেউ কেউ বিভিন্ন এলাকায় পাড় দখল করে রেখেছে। নদীটি প্রায় ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ হলেও তা খালে পরিণত হয়েছে।

বগুড়া জেলার সারিয়াকান্দি উপজেলা যমুনা, বাঙ্গালি, ইছামতী এবং সুখদহ নদী বিধৌত। এর মধ্যে যমুনা নদী ভরা মৌসুমে প্রবল বন্যাসহ তার খরস্রোতা থাকে। তবে বাঙ্গালি, ইছামতী এবং সুখদহ নদীতে শুধু বর্ষা মৌসুমে পানি থাকে। সারিয়াকান্দি পৌর এলাকার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ব্যবসায়ী আপেল মাহমুদ লাভলু জানান, যমুনা নদীর নাব্য সংকটে নদীপথে নৌকায় যেতে অনেক সময় লাগছে। বর্ষাকালে নদী ভরা থাকায় গতিপথ তেমন বোঝা না গেলেও শুকনা মৌসুমে নদীর মূল প্রবাহ থাকছে সারিয়াকান্দির কালিতলা গ্রোয়েন বাঁধ থেকে পূর্ব দিকে প্রায় দুই কিলোমিটার দূরে। মূল প্রবাহ সরে যাওয়ায় নতুন নতুন চর জাগতে শুরু করেছে। বর্ষাকালে পানি দেখা গেলেও সারা বছর থাকে না। উজান থেকে বয়ে আসা পলিজমে উপজেলার চালুয়াবাড়ী, হাটশেরপুর, কাজলা, কর্ণিবাড়ী এবং সারিয়াকান্দি সদরের মৌজায় বিশাল আয়তনের চরাভূমির সৃষ্টি হয়েছে। নদী শাসনের কাজ বাস্তবায়ন করায় যমুনা গতিপথ পরিবর্তন করে এখন বাম তীর ঘেঁষে জামালপুরের সীমানার কাছাকাছি অবস্থান করছে।

সারিয়াকান্দি সদর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল কাফি মণ্ডল জানান, যমুনার গতিপথ পরিবর্তনের ফলে চারটি ইউনিয়নের মৌজার জমি পুনরায় জেগে উঠেছে। বগুড়া পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী মো. নাজমুল হক জানান, ১৯৮৫ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত গত আড়াই দশকে সারিয়াকান্দি এলাকায় যমুনা নদীর ডান তীরে প্রায় ৫৬০ মিটার ভেঙেছে। তবে প্রতি বছর উজান থেকে হাজার হাজার টন পলি নদীর তলদেশে জমা হয়ে নদীর গভীরতা কমে যাচ্ছে। যে কারণে নদীগুলো মরে যাচ্ছে।

 

সর্বশেষ খবর