শনিবার, ৯ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

মহাসড়কে দাপট নিষিদ্ধ যানবাহনের

প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা

জাকারিয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ

মহাসড়কে দাপট নিষিদ্ধ যানবাহনের

হবিগঞ্জে মহাসড়কে এভাবেই চলছে সিএনজিচালিত অটোরিকশা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের হবিগঞ্জ অংশে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে তিন চাকার নিষিদ্ধ সব যানবাহন। অভিযোগ রয়েছে, সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করেই মহাসড়কে চলছে নসিমন, করিমন, সিএনজি অটোরিকশা, ভ্যান, ভটভটিসহ তিন চাকার যানবাহন। এসব যানবাহন চলাচলের কারণেই প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা, প্রাণহানি। এ ছাড়া অঙ্গহানি হচ্ছে অসংখ্য মানুষের। গত বছর হবিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় শতাধিক মানুষ মারা গেছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করেই চালানো হচ্ছে সিএনজি অটোরিকশা, টমটম, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ভ্যান, নসিমন, করিমন, ভটভটির মতো যানবাহন। তবে হাইওয়ে পুলিশ বলছে, মহাসড়কে অবৈধ যানবাহন ঠেকাতে তৎপর রয়েছে তারা। দিনরাত কাজ করছে টহল পুলিশ। সংশ্লিষ্টরা জানান, জেলার মাধবপুর থেকে নবীগঞ্জের শেষ সীমানা পর্যন্ত প্রায় ৮২ কিলোমিটার মহাসড়ক রয়েছে। মহাসড়কের এ অংশটুকুতে প্রায় প্রতিদিনই ঘটছে কোনো না কোনো দুর্ঘটনা। প্রাণ যাচ্ছে পথচারীসহ সাধারণ মানুষের। ২০২৩ সালে হবিগঞ্জে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে নারী-শিশুসহ অন্তত ১২০ জন। যার বেশির ভাগ দুর্ঘটনা ঘটেছে ঢাকা-সিলেট মহাসড়কে। সবচেয়ে বেশি মৃত্যু হয়েছে মাধবপুর, বাহুবল, শায়েস্তাগঞ্জ ও নবীগঞ্জ অংশে। এ চার উপজেলায় মৃত্যু হয়েছে প্রায় ৮০ জনের। যার জন্য অবৈধ যানবাহন চলাচলকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা। সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের শায়েস্তাগঞ্জ নতুন ব্রিজ গোলচত্বরটি যেন অবৈধ যানবাহন চলাচলের অন্যতম একটি পয়েন্ট। চত্বরটি থেকে সিএনজি অটোরিকশা, টমটম, ব্যাটারিচালিত রিকশা, ভ্যান, নসিমন, করিমন, ভটভটি ছড়িয়ে পড়ছে জেলাজুড়ে। আর এসব গাড়ির বেশির ভাগেরই নেই ফিটনেস কিংবা অনুমোদন। সচেতন মহল বলছে, সংশ্লিষ্টদের ম্যানেজ করে এমনকি মাসহারা দিয়ে এসব যানবাহন চলাচল করছে। অভিযোগ রয়েছে, প্রতিটি সিএনজি নির্দিষ্ট টোকেনের মাধ্যমে প্রতি মাসে ৩ থেকে ৪ হাজার টাকার বিনিময়ে মহাসড়ক দিয়ে চলাচল করে। মাস শেষে টাকা না দিলে বা টোকেন দেখাতে না পারলেই সেগুলো অভিযান হিসেবে দেখিয়ে আটক করে দেওয়া হয় মামলা। সিএনজি অটোরিকশা চালক ফারুক মিয়া বলেন, ‘আমরা পেটের দায়ে সিএনজি চালাই। অনেক সময় বাধ্য হয়ে মহাসড়ক দিয়ে যাই। তবে হাইওয়ে পুলিশকে ম্যানেজ না করতে পারলে আমাদের গাড়ি আটক করে তারা মামলা দিয়ে দেয়।’ চালক সুজ মিয়া বলেন, ‘মহাসড়কের পাশ দিয়ে চলাচলের জন্য আলাদা কোনো লেন নেই। তাই সময় বাঁচাতে বিকল্প পথ হিসেবে আমরা মহাসড়ক ব্যবহার করি।’ টমটম চালক রাসেল মিয়া বলেন, ‘আমরা সাধারণত মহাসড়ক ব্যবহার করি না। তবে বিশেষ প্রয়োজনে ব্যবহার করি।’ রাজু আহমেদ বলেন, ‘সড়কে চলাচল করলে এমনিতেই হাইওয়ে পুলিশ আমাদের টাকার জন্য চাপ দেয়। তাই মাসিক টোকেনের মাধ্যমেই গাড়ি চালাই।’ শায়েস্তাগঞ্জ হাইওয়ে থানা পুলিশের ওসি বদরুল কবির বলেন, ‘হাইওয়েতে কোনো প্রকার অবৈধ যানবাহন যেন চলাচল করতে না পারে সেজন্য আমরা কাজ করছি। চালকদের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির পাশাপাশি অবৈধ যানবাহনের বিরুদ্ধে দেওয়া হচ্ছে মামলা। হাইওয়ে পুলিশের টাকা নেওয়ার অভিযোগ সঠিক নয়।’

সর্বশেষ খবর