বৃহস্পতিবার, ১৪ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

কলাপাড়ায় জমজমাট গোলের গুড়ের বাজার

বাণিজ্যিক প্রসার হচ্ছে, এই গুড়ে জীবিকা ৩০০ পরিবারের

কলাপাড়া (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি

কলাপাড়ায় জমজমাট গোলের গুড়ের বাজার

গোলের গুড়ের পিঠা-পায়েসের স্বাদই আলাদা। তাই দিন দিন এ গুড়ের চাহিদা বাড়ছে। ক্রেতারা গোলের গুড় কিনতে বাজারে ভিড় করেছেন। পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় গোলের গুড়ের বাজার এখন জমজমাট। এ গুড়ের পরিচিতি এক সময় এলাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। বর্তমানে এর বাণিজ্যিক প্রসার বাড়ছে। এখানকার গোলের গুড় খুবই সুস্বাদু। ক্রেতাদের চাহিদা মেটাতে তাই ব্যস্ত সময় কাটছে ব্যবসায়ী ও গুড়ের কারিগরদের। সংশ্লিষ্টরা জানায়, গোল গাছের রস থেকে গুড় তৈরি হয়। বছরে এ উপজেলা থেকে প্রায় ৩ কোটি টাকার গুড় বিক্রি হয়। এ উপজেলার অন্তত ৩০০ পরিবার গোলের গুড় উৎপাদন করে জীবিকা নির্বাহ করে। গুড় প্রস্তুতকারকরা বলছেন, সুষ্ঠু বাজার ব্যবস্থাপনা না থাকার কারণে তারা ন্যায্যমূল্য থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন। স্থানীয়রা জানান, পতিত জমিতে বেড়ে ওঠা গোল গাছ থেকে শীত মৌসুমের শুরু থেকে রস সংগ্রহ শুরু হয়। প্রতিদিনই সূর্য ওঠার সঙ্গে সঙ্গে কলস নিয়ে বাগানে গোল গাছে রস সংগ্রহ করতে বেরিয়ে পড়ে চাষিরা। এরপর সেই রস টিনের তাপালে আগুনে ফুটিয়ে তৈরি করে গুড়। এ উপজেলার নীলগঞ্জ, মিঠাগঞ্জ, চাকামইয়া ইউনিয়নের ৩০০ পরিবার এ গুড় উৎপাদনে জড়িত রয়েছেন। তাদের জীবিকা গোলের গুড় থেকে আসে। এখানকার গোলের গুড় খুবই সুস্বাদু এবং চাহিদাসম্পন্ন। স্থানীয়রা এ গোলের গুড় তৈরি করে মৌসুমভিত্তিক বাড়তি উপার্জনের সুযোগ পান। এখন খেজুর গাছসহ তাল ও গোলের গাছের সংখ্যা কমে গেছে। তাই গুড় উৎপাদন কম হচ্ছে এমনটাই জানিয়েছেন গোল চাষিরা।

নীলগঞ্জ ইউনিয়নের নবীপুর গ্রামের সুনীতি বলেন, বিয়ের পর থেকেই বছরের এ সময়ে রস ফুটিয়ে গুড় তৈরি করি। আগে অনেক বেশি গুড় হতো। এখন কমে গেছে। গোল চাষি নিঠুর হাওলাদার বলেন, এখন বাজারে গিয়ে গুড় বিক্রি করতে হয় না। একশ্রেণির ব্যবসায়ী বাড়ি এসেই গুড় নিয়ে যান। প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা দরে বিক্রি করা হচ্ছে। চাষি পরিমল হাওলাদার জানান, তার প্রায় ৩০০ গোল গাছ থেকে প্রতিদিন ৮-১০ কলস রস সংগ্রহ করা হয়। সেখান থেকে দৈনিক ২৫ থেকে ৩০ কেজি গুড় তৈরি করে তিনি স্থানীয় বাজারে বিক্রি করেন।

গুড় ক্রেতা আনসার উদ্দিন বলেন, অন্য গুড়ের চেয়ে গোলের গুড় আলাদা স্বাদযুক্ত। সাশ্রয়ী হওয়ায় এবং দীর্ঘদিন সংরক্ষণ করা যায় বলে গোলের গুড়ের ব্যাপক চাহিদা। বাজারে গুড় ক্রয় করতে আসা মরিয়ম বেগম বলেন, গোলের গুড়ের পিঠা, পায়েস খুব সুস্বাদু। কলাপাড়া ব্যবসায়ী সমিতির নেতা মো. নুরুজ্জামান খালাশি বলেন, গোলের গুড়ের চাহিদা ব্যাপক। বাজারে ক্রেতাদের ভিড় থাকে। বন বিভাগের মহিপুর ভারপ্রাপ্ত রেঞ্জ কর্মকর্তা আবুল কালাম জানান, পরীক্ষামূলকভাবে বেশ কয়েকটি স্থানে গোলগাছের বীজ রোপণ করা হয়েছে। এতে ব্যাপক সাফল্য পাওয়া গেছে।

সর্বশেষ খবর