রবিবার, ১৭ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

স্কুল আছে, রাস্তা নেই

যাতায়াতে দুর্ভোগ শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের

দিনাজপুর প্রতিনিধি

স্কুল আছে, রাস্তা নেই

ঝোপঝাড়ের ভিতর দিয়ে স্কুলে আসা-যাওয়া করে শিশুরা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

দিনাজপুরের খানসামা উপজেলার ‘ফরিদাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়’। এ স্কুলের চারপাশে ফসলি জমি, বনজঙ্গল ও বসতবাড়ি। এসব জমির আইল ও বাঁশঝাড়ের ভিতর দিয়ে কিংবা আশপাশের মানুষের বাড়ির উঠান দিয়ে স্কুলে যাওয়া-আসা করে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। স্কুলের অবকাঠামোসহ শিক্ষার্থী-শিক্ষক ও খেলার মাঠ সবই আছে। কিন্তু স্কুলে যাওয়ার নেই কোনো নির্ধারিত রাস্তা। এতে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ভোগান্তির শিকার হতে হয়। বর্ষা মৌসুমে এ ভোগান্তি চরম পর্যায়ে ওঠে। বিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৮ সালে এ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে প্রতিষ্ঠিত হয়। জাতীয়করণ হয় ২০১৩ সালে। এখানে শিশু শ্রেণি থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী রয়েছে ৯৬ জন। প্রধান শিক্ষকসহ শিক্ষক রয়েছেন ছয়জন। এ বিদ্যালয়ের রাস্তার জন্য ওই এলাকার হরিপদ অধিকারী, সোলেমান আলী ও রবি সেনের দেওয়া জমি দিয়ে ১৯৯০ সালের দিকে চলাচলের রাস্তা নির্মাণ হয়। কিন্তু পরে তা জমির সীমানা জটিলতার জেরে কেটে ফেলা হয়।

পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী মোখলেছুর রহমান জানায়, খেতের মধ্যদিয়ে যাতায়াত করতে খুব অসুবিধা হয়। বর্ষাকালে আরও সমস্যা তখন কাঁদা পানি পার হয়ে আসতে হয়। একই শ্রেণির জ্যোতি সরকার জানায়, রাস্তা না থাকায় ভুট্টা খেত ও বাঁশঝাড় দিয়ে স্কুলে যেতে ভয় লাগে। তখন শিক্ষকরা দাঁড়িয়ে স্কুলে যেতে সহায়তা করে। যাতায়াতে রাস্তা হলে ভালো হয়।

বিদ্যালয় এলাকার বাসিন্দা নুর ইসলাম, শামসুল আলম ও মোহেন সেন বলেন, বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার পরে চলাচলের রাস্তা থাকলেও পরে তা কেটে ফেলা হয়েছে। এ জন্য শিক্ষার্থীদের স্কুলে যাওয়া-আসায় কষ্ট হয়। তারা এ স্কুলের জন্য সরকারি উদ্যোগে রাস্তা নির্মাণের দাবি জানান। কষ্ট ও দুর্ভোগের কথা উল্লেখ করে স্কুলের প্রধান শিক্ষক আনছার আলী বলেন, রাস্তা না থাকায় শিক্ষার্থীসহ সবারই বিদ্যালয় আস-যাওয়ায় খুব ভোগান্তি পোহাতে হয়। এতে অভিভাবকরা স্কুলে শিক্ষার্থী পাঠাতে নিরুৎসাহিত হয়। তবুও আমরা শিক্ষার্থী উপস্থিতি নিশ্চিত ও শিক্ষার পরিবেশ ঠিক রাখতে কাজ করছি। তবে সবার সদিচ্ছায় এখানে রাস্তা নির্মাণ হলে বিদ্যালয় ও শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো হবে। সহকারী উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা সাখাওয়াত হোসেন বলেন, এর আগে একাধিকবার এখানে রাস্তা নির্মাণের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু জমি মালিকের অনিচ্ছায় সেটি সম্ভব হয়নি। খানসামার ইউএনও তাজ উদ্দিন বলেন, ওই স্কুলের শিক্ষার্থী ও শিক্ষকদের দুর্ভোগের বিষয়টি জেনেছি। সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এই রকম আরও টপিক

সর্বশেষ খবর