মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

রাবার ড্যাম পাল্টে দিয়েছে কৃষিচিত্র

বেড়েছে সেচ সুবিধা, কমেছে উৎপাদন খরচ

নালিতাবাড়ী (শেরপুর) প্রতিনিধি

রাবার ড্যাম পাল্টে দিয়েছে কৃষিচিত্র

শেরপুরের নালিতাবাড়ীতে রাবার ড্যাম প্রকল্প এলাকায় মজুত সেচের পানি -বাংলাদেশ প্রতিদিন

শেরপুরের সীমান্তবর্তী উপজেলা নালিতাবাড়ীর ভোগাই ও চেল্লাখালী নদীতে রাবার ড্যাম প্রকল্প পাল্টে দিয়েছে এ এলাকার কৃষিচিত্র। পাহাড়ি এ জনপদে এখন আগের চেয়ে অর্ধেকেরও কম খরচে আবাদ করা যাচ্ছে বোরো। রাবার ড্যামের কারণে এখানে চলতি মৌসুমে একদিকে যেমন অনাবাদি জমি কমেছে, তেমনি জ্বালানি ব্যয় নেমেছে শূন্যের কোঠায়। উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ১৯৯৬ সালে নালিতাবাড়ীর জামিরাকান্দায় ভোগাই নদীতে ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ১০০ মিটার দৈর্ঘ্যরে রাবার ড্যাম ও সেতু নির্মাণ করা হয়। শুষ্ক মৌসুমে এ বাঁধের মাধ্যমে ৮ কিলোমিটার নদীর উজানে মজুত করা হয় পানি। এই পানি ১১টি খালের মাধ্যমে পৌরসভাসহ উপজেলার সাতটি ইউনিয়নের প্রায় ১০ হাজার একর জমি পায় সেচসুবিধা। ২০১৬ সালে বাঘবেড় ইউনিয়নের চেল্লাখালী নদীর ওপর সন্ন্যাসীভিটায় বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) জলবায়ু পরিবর্তন ট্রাস্ট তহবিল থেকে ১৪ কোটি টাকায় নির্মাণ করে রাবার ড্যাম। পরবর্তীতে ড্যামের সামান্য উজানে ১ কোটি ৩৮ লাখ ৫৯ হাজার টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় হাইড্রোলিক স্ট্রাকচারের ওপর ৫ কিউসেক ক্ষমতাসম্পন্ন সোলার ইরিগেশন পাম্পিং সিস্টেম। এ বাঁধের মাধ্যমে ৮ কিলোমিটার নদীর উজানে পানি মজুত করা হয়। এতে প্রায় ১ হাজার ৫০০ একর জমিতে স্বল্প খরচে সেচসুবিধা পেয়ে কৃষকের হাসি ফুটেছে। পাহাড়ি অঞ্চলে বোরো আবাদের ব্যাপক সম্ভাবনা দেখছে কৃষি বিভাগও। ভারতের মেঘালয় থেকে আসা ভোগাই ও চেল্লাখালী নদী বর্ষার সময় প্রমত্তা থাকলেও শুকনো মৌসুমে পানি কমে যাওয়ায় বাঁধ দিয়ে কিংবা শ্যালো মেশিনে সেচের ব্যবস্থা করতেন কৃষকরা। বাঁধ নির্মাণে খরচ হতো লাখ লাখ টাকা, যা কখনো কখনো ভেসে যেত ঢলের সঙ্গে। এখন বাঁধের সঙ্গে সেতু হওয়ায় দুই পাড়ের মানুষ কম খরচে উৎপাদিত কৃষিপণ্য বাজারে নিতে পারছেন। কোন্নগর গ্রামের কৃষক নুরুজ্জামান বলেন, রাবার ড্যাম ও সেতু হওয়ায় ভোগাই নদীর পূর্ব পাশের মানুষের অনেক উপকার হয়েছে। বোরো আবাদে অল্প খরচে খেতে পানি দিতে পারছি। সন্ন্যাসীভিটা গ্রামের কৃষক আহসান আলী বলেন, চেল্লাখালী নদীর ওপর নির্মিত রাবার ড্যামসংলগ্ন  সোলার প্ল্যান্ট হওয়ায় সেচ কাজে আমাদের খরচ অর্ধেকে নেমে এসেছে। আগে যেখানে প্রতি একর জমিতে সেচ খরচ হতো ৬-৭ হাজার, এখন তা ৩-৪ হাজারে শেষ করতে পারছি। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আবদুল ওয়াদুদ বলেন, সোলার পাম্প ও রাবার ড্যামের জমা পানি পাওয়ায় কৃষকরা স্বল্প খরচে সেচসুবিধা পাচ্ছেন। অনাবাদি অনেক জমি আবাদের আওতায় এসেছে। এতে পাল্টে গেছে সীমান্ত এলাকার কৃষিচিত্র।

সর্বশেষ খবর