বুধবার, ২৭ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

ছড়িয়ে পড়ছে মরা জেলিফিশ

জেলেরা আগ্রহ হারাচ্ছেন মাছ শিকারে, পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা

কলাপাড়া ও পাথরঘাটা প্রতিনিধি

পটুয়াখালীর পর্যটন কেন্দ্র কুয়াকাটা এবং বরগুনার পাথরঘাটা-সংলগ্ন বঙ্গোপসাগরে ছড়িয়ে পড়েছে অসংখ্য মরা জেলিফিশ। এক সপ্তাহ ধরে এর পরিমাণ বেড়েছে আশঙ্কাজনক হারে। কুয়াকাটার বিস্তীর্ণ সৈকতজুড়ে পড়ে থাকা মৃত জেলিফিশ দ্রুত অপসারণ করা না হলে পরিবেশ বিপর্যয়ের আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। সাগরে জেলিফিশ বেড়ে যাওয়ায় স্বাচ্ছন্দ্যে মাছ শিকার করতে পারছেন না জেলেরা। প্রচুর জেলিফিশ আটকে পড়ায় জাল কেটে দিতে বাধ্য হচ্ছেন কেউ কেউ। প্রতি বছর এমন পরিস্থিতি তৈরি হলেও এবার বেশি পরিমাণ জেলিফিশ সাগরে দেখা যাচ্ছে, জানান কলাপাড়ার জেলেরা। সমুদ্রে কচ্ছপ কমে যাওয়া অথবা সাগরের গভীরে অক্সিজেন হ্রাসের সঙ্গে তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ায় জেলিফিশ বাড়তে পারে জানিয়েছেন গবেষকরা। জেলেরা জানান, জাল ফেললেই জেলিফিশ উঠে আসে। এগুলো শরীরে লাগলে অসহনীয় চুলকানি হয়। ফলে অনেকে মাছ ধরা বন্ধ রেখেছেন। কুয়াকাটার জেলে আতিকুর রহমান জানান, তার জালে জেলিফিশ আটকা পড়ায় অন্তত ১০০ মিটার কেটে দিতে বাধ্য হয়েছেন। এ রকম অনেক জেলের জাল কেটে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পাথরঘাটার ট্রলারমাঝি আনোয়ার হোসেন জানান, সাগর উপকূলের বিভিন্ন এলাকায় কয়েক মাস ধরে অসংখ্য জেলিফিশ ভেসে আসছে। এগুলো শরীরে লাগলে চুলকানি হচ্ছে। সৈকতে পচে-গলে দুর্গন্ধ ছড়াচ্ছে। সাগরে মাছ ধরার সময় জালে জেলিফিশ আটকা পড়লে তা ছাড়াতেও অনীহা জেলেদের।

কলাপাড়া উপজেলা সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহা জানান, প্রতি বছর এ সময়ে সাগরে জেলিফিশের উপস্থিতি লক্ষ্য করা যায়। বিগত বছরগুলোর তুলনায় এবার এর সংখ্যা অনেক বেশি। পাথরঘাটার সিনিয়র মৎস্য কর্মকর্তা জয়ন্ত কুমার অপু বলেন, জেলিফিশের জন্য জেলেরা সাগরে যাচ্ছেন না শুনেছি। অনাবৃষ্টির কারণে লবণাক্ততা সৃষ্টি হয়ে এ প্রাণীর জন্ম, ধারণা তার।

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের একোয়াকালচার বিভাগের চেয়ারম্যান মীর মোহাম্মদ আলী বলেন, আমাদের দেশে অখাদ্য বা ব্যবহার অনুপযোগী সামুদ্রিক প্রাণী হিসেবে দেখা হলেও, বিশ্বে জেলিফিশের ৫ দশমিক ৬০ বিলিয়ন ডলারের বাজার রয়েছে। এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যবহার হয় খাদ্য হিসেবে। চীন, জাপান ও কোরিয়ায় বহু বছর ধরে জেলিফিশ জনপ্রিয় খাবার হিসেবে প্রচলিত। এ প্রাণীর বহুবিধ ব্যবহারের মধ্যে রয়েছে জেলিফিশ থেকে সার, কীটনাশক, ওষুধ, কসমেটিকস, ডায়াপার ইত্যাদি তৈরি করা।

সর্বশেষ খবর