শুক্রবার, ২৯ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

কেমিক্যাল সংকটে পাদুকা কারখানা

‘২৬টি অটোমেশিন কারখানায় কেমিক্যাল সংকটে কাজ বন্ধ। এসব কারখানায় প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক কাজ করে’

মোশাররফ হোসেন বেলাল, ব্রাহ্মণবাড়িয়া

কেমিক্যাল সংকটে পাদুকা কারখানা

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় উৎপাদন বন্ধ হওয়া একটি পাদুকা কারখানা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

কেমিক্যাল সংকটে তিন সপ্তাহের বেশি বন্ধ রয়েছে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার অটোমেশিন নির্ভর পাদুকা কারখানাগুলোর উৎপাদন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদুল ফিতরে সাধারণত চরম ব্যস্ত সময় পার করে দেশের পাদুকাশিল্পের মালিক ও শ্রমিকরা। এ সময় কোটি কোটি টাকার বাণিজ্য করার কথা। তারা বলছেন, বছরের আট-নয় মাস কাজের তেমন চাপ না থাকলেও রমজানসহ দুই ঈদে চাপ বহুগুণ বেড়ে যায়। গভীর রাত পর্যন্ত চলে পাদুকা কারিগরদের কর্মযজ্ঞ। ঈদ মৌসুমে অটোমেশিন দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার জোড়া জুতা উৎপাদন হওয়ার কথা। আর সেখানে কারখানাগুলোয় উৎপাদনই চলছে না।

ব্যবসায়ীরা জানান, জেলায় ২৬টি অটোমেশিন জুতা কারখানা রয়েছে। প্রতিদিন প্রতিটি কারখানায় অন্তত ১০ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন ধরনের জুতা তৈরি হয়। অথচ তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কেমিক্যাল সংকটে পড়েছে তাদের কারখানা। এখন অধিকাংশ কারখানায় উৎপাদন বন্ধ। হাতেগোনা যা একটি-দুটি চলছে, তাদেরও রসদ ফুরিয়ে আসছে, দু-তিন দিনের মধ্যে বন্ধ হবে উৎপাদন। এক্টিভ ফুটওয়্যার কারখানার মালিক রাকিব আহমেদ বলেন, ‘আমদানিকারকদের কাছ থেকে জুতার সোল তৈরিতে বিশেষ জাতের পিউ কেমিক্যালের সরবরাহ মিলছে না। মূলত আমদানি করা কেমিক্যাল চট্টগ্রাম বন্দরে আটকে আছে। সঠিক সময়ে কেমিক্যাল না পাওয়ায় আমাদের প্রতিদিন লাখ লাখ টাকা লোকসান হচ্ছে।’

সেভেন স্টার কারখানার মালিক মো. হানিফ মিয়া বলেন, ‘বছরে আট মাস কাজের চাপ না থাকলেও রমজান আসার ঠিক ১৫ দিন আগে থেকে চাপ বেড়ে যায়। অথচ এখন জুতার সব উপকরণ থাকলেও কেমিক্যালের সংকটে তৈরি করা যাচ্ছে না।’

সরেজমিন অটোমেশিন পাদুকা কারখানাগুলোয় গিয়ে দেখা যায়, শ্রমিকরা অলস সময় পার করছেন। জুতার সব উপকরণ তৈরি করে রাখা। তবে কেমিক্যালের অভাবে ফিটিং করতে পারছেন না। একাধিক শ্রমিক বলেন, সারা বছর কাজ করে যা আয় করেন এ সিজনে তিন মাসে তার দ্বিগুণ টাকা পান। যা দিয়ে পরিবার-পরিজন নিয়ে তাদের সারা বছর চলতে হয়। এবারের মৌসুমে তাদের অবস্থা খুবই খারাপ। টানা এত দিন কাজ নেই। এখন তাদের মালিক চলবেন কীভাবে, তারাও বা বেতন পাবেন কীভাবে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া পিউ ফুটওয়্যার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি মো. আমানউল্লাহ বলেন, ‘২৬টি অটোমেশিন কারখানায় কেমিক্যাল সংকটে কাজ বন্ধ। এসব কারখানায় প্রায় ৭ হাজার শ্রমিক কাজ করে। তাদের কোনো কাজ দিতে পারছি না। কবে নাগাদ কেমিক্যাল সরবরাহ মিলবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তায় আছি।’

 

 

সর্বশেষ খবর