শনিবার, ৩০ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

সেতু নির্মাণ ১৩ মাস বন্ধ

♦ কাজ শুরুর পরই লাপাত্তা ঠিকাদার ♦ ভোগান্তি লক্ষাধিক মানুষের

দেবাশীষ বিশ্বাস, রাজবাড়ী

সেতু নির্মাণ ১৩ মাস বন্ধ

রাজবাড়ীর কোলারহাটে কুমার নদের ওপর নির্মাণাধীন সেতু -বাংলাদেশ প্রতিদিন

কুমার নদের ওপর সেতু দিয়ে এক সময় চলাচল করত যাত্রীবাহী বাস, পণ্যবাহী ট্রাকসহ ছোট-বড় সব ধরনের যানবাহন। সেই সেতু ভেঙে নতুন সেতু নির্মাণকাজ শুরু হওয়ায় স্বস্তির নিঃশ্বাস ছেড়েছিলেন রাজবাড়ী সদর, বালিয়াকান্দি ও ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে সেতু নির্মাণকাজ শুরু হয়। বরিশালের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স রূপালি কনস্ট্রাকশন কাজ শুরু করে। কিন্তু প্রকল্পের মেয়াদ শেষ হলেও সেতু নির্মাণকাজ শুরুই হয়নি। পুরাতন সেতু ভেঙে তার পাশ দিয়ে একটি সরু কাঁচা রাস্তা করা হয়েছে। কাজের মধ্যে অগ্রগতি এতটুকই।

দীর্ঘদিন ধরে সেতু নির্মাণকাজ বন্ধ থাকায় চরম ভোগান্তিতে পড়েছে রাজবাড়ী সদর, বালিয়াকান্দি ও ফরিদপুরের মধুখালী উপজেলার লক্ষাধিক মানুষ। সেতুর কাজ বন্ধ ও পাশের বিকল্প সড়কটি সরু হওয়ায় বন্ধ রয়েছে বাস, ট্রাক, মিনিট্রাক, কাভার্ডভ্যান, অ্যাম্বুলেন্স, প্রাইভেটকার চলাচল। রাজবাড়ী সদর উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে ১ কোটি ৮০ লাখ টাকা ব্যয়ে কুমার নদের ওপর ২০ মিটার দৈর্ঘ্য ও ৭.৩৩ মিটার প্রস্থ সেতু নির্মাণকাজের অনুমোদন দেওয়া হয়। বরিশালের মেসার্স রূপালি কনস্ট্রাকশন সেতুটির নির্মাণকাজের দায়িত্ব পায়। ২০২৩ সালের জানুয়ারিতে কাজ শুরু হয়। এ সময় পুরাতন সেতুটি ভাঙা ও সরু কাঁচা রাস্তা তৈরি ছাড়া আর কোনো কাজ করেনি প্রতিষ্ঠানটি। মার্চেই কাজ বন্ধ করে চলে যায় তারা।

২০২৩ সালের জানুয়ারিতে কাজ শুরু হয়। এ সময় পুরনো সেতুটি ভাঙা ও সরু কাঁচা রাস্তা তৈরি ছাড়া আর কোনো কাজ করেনি প্রতিষ্ঠানটি
সরেজমিনে দেখা যায়, রাজবাড়ীর বালিয়াকান্দি উপজেলার জামালপুর থেকে নিমতলা সড়কের কোলারহাট এলাকায় কুমার নদের ওপর নতুন সেতু নির্মাণের জন্য পুরাতন সেতুটি ভেঙে ফেলা হয়েছে। তবে সেখানে সেতু নির্মাণ কাজ বন্ধ তেমন কোনো নির্দেশনা দেওয়া নেই। নেই কোনো ব্যারিকেডও। অপরিচিত কেউ বিষয়টি বুঝতে না পারায় মাঝেমধ্যেই ঘটছে দুর্ঘটনা। অনেক যানবাহন এই রাস্তা দিয়ে এসে ফিরে যেতে বাধ্য হচ্ছে। বিকল্প সড়ক ব্যবহারে ভোগান্তি বেড়েছে। সেখানকার স্থানীয় ও বাজারের ব্যবসায়ীরা জানান, পুরাতন সেতু ভাঙার পর থেকে দুর্ভোগ শুরু হয়েছে। ব্রিজের দুই পাড়ে কোলারহাট বাজার। সেতুর পূর্বপাশে শতাধিক এবং পশ্চিম পাশে ৫ শতাধিক দোকান রয়েছে। সেতুটির কাজ বন্ধ থাকায় কোলারহাট বাজারের একপাশে প্রায় অর্ধশত দোকান বন্ধ হয়ে গেছে। সামান্য বৃষ্টি হলেই পাশের সরু সড়ক চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায়। অনেক মানুষ গর্তেও পড়ে যায়।

সেতুটির ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান রূপালি কনস্ট্রাকশনের সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

রাজবাড়ী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. ইউসুফ হোসেন বলেন, রূপালি কনস্ট্রাকশন কাজ করবেন না বলে জানিয়েছেন। বিধি মেনে তাদের শাস্তির আওতায় আনা হয়েছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে নতুন করে টেন্ডার আহ্বান করে আবার কাজ শুরু করা হবে।

সর্বশেষ খবর