রবিবার, ৩১ মার্চ, ২০২৪ ০০:০০ টা

বালু তোলার মহোৎসব

‘জোরগাছা সেতুর ১০০ মিটারের মধ্যে বোরিং করে ৮০ ফুট নিচ থেকে তোলা হচ্ছে মোটা বালু’

নিজস্ব প্রতিবেদক, বগুড়া

বালু তোলার মহোৎসব

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বাঙালি নদী থেকে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে বালু -বাংলাদেশ প্রতিদিন

বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে বাঙালি ও যমুনা নদী থেকে অবৈধ বালু উত্তোলন চলছে। যত্রতত্র বালু তোলা ও পয়েন্টের কারণে এর বন্যা নিয়ন্ত্রণ স্পার এবং গুরুত্বপূর্ণ জোরগাছা সেতু এখন হুমকির সম্মুখীন। এদিকে অবৈধ বালু উত্তোলন করায় চারজনকে বুধবার জেলহাজতে দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। তারপরও থামছে না বালু উত্তোলন। প্রশাসনের চোখ ফাঁকি দিয়ে অনেকেই রাতে বালু তোলা চালিয়ে যাচ্ছে, বলছেন এলাকাবাসী।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, বালু উত্তোলনের কারণে হুমকিতে রয়েছে নদী পাড়ের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা, জনপদ ও কৃষিজমি। অবৈধ বালু উত্তোলনকারীরা শুরু থেকেই বেপরোয়া। এর মাধ্যমে তারা কোটিপতি বনে গেছে। প্রভাবশালী হওয়ায় অনেকেই তাদের বিরুদ্ধে মুখ খুলতে সাহস পায় না। অবৈধ বালু তোলার ফলে উপজেলার হাটশেরপুর ইউনিয়নের হাসনাপাড়া স্পারটি গত বন্যার সময় ভাঙনের কবলে পড়ে।

এলাকাবাসী জানায়, উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়নে বাঙালি নদীর ওপর নির্মিত জোরগাছা সেতু এ এলাকার একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা। সেতুটি দিয়ে পূর্ব বগুড়ার লাখো মানুষ চলাচল করেন। সেতুর উত্তর-পশ্চিম কোণায় অবৈধ বালু উত্তোলনের পয়েন্ট চালু করা হয়েছে নতুন করে। জোরগাছা সেতুর ১০০ মিটারের মধ্যে বোরিং করে ৮০ ফিট নিচ থেকে তোলা হচ্ছে মোটা বালু। যা ট্রাক বা ট্রাক্টরের সাহায্যে জেলার বিভিন্ন এলাকায় বিক্রি করা হচ্ছে। এভাবে সেতুর কাছ থেকে বালু উত্তোলনের ফলে যে কোনো সময় সেতুটি নদী ভাঙনে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। একই ইউনিয়নে ভেলাবাড়ী এলাকায় পাঁচটি বালুর পয়েন্ট চালু করা হয়েছে। এখানে বাঙালি নদীর ৮০ ফিট নিচ থেকে বোরিং করে অবৈধভাবে তোলা হচ্ছে বালু। এসব বালুও ট্রাক্টরে বিভিন্ন এলাকায় নিয়ে বিক্রি করা হচ্ছে। ট্রাক্টরের বড় চাকায় এখানে মাটির রাস্তায় গভীর খত সৃষ্টি হয়েছে। আশপাশে শতশত বিঘা কৃষিজমি এখন ভাঙনের হুমকিতে। গত বছরগুলোর ন্যায় উপজেলার সদর ইউনিয়নের পারতিত পরল গ্রামের সুইচ গেটের পূর্ব পাশে যমুনা নদী থেকে বালু উত্তোলনের একটি পয়েন্ট আবারও নতুন করে চালু হয়েছে। সেখানে বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধের ১০০ মিটার এলাকা থেকে উত্তোলন করা হচ্ছে বালু। এতে ভাঙন হুমকিতে রয়েছে সারিয়াকান্দির একমাত্র বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ। উপজেলার কাজলা, কর্ণিবাড়ী এবং বোহাইল ইউনিয়নের দুর্গম চরাঞ্চলের একাধিক স্থানে বোরিং করে অবৈধ বালু তোলা হচ্ছে। স্থানীয়রা জানান, বালুর ট্রাক্টর চলাচল করার ফলে মাটির সংযোগ সড়কটি নষ্ট হয়ে একেবারেই চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান জানান, অবৈধ বালু উত্তোলনকারীদের বিরুদ্ধে বুধবার ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে চারজনকে জেলে পাঠানো হয়েছে। এ অভিযান চলমান রয়েছে।

সর্বশেষ খবর