সিলেট-আখাউড়া রেলপথের মৌলভীবাজারের লাউয়াছড়ায় প্রায়ই ইঞ্জিন বন্ধ হয়ে ট্রেন আটকা পড়ছে। ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট থেকে ছেড়ে আসা আন্তনগর উপবন, পারাবত, কালনী, পাহাড়িকা, উদয়ন এক্সপ্রেস এবং মালবাহী ট্রেনও বনের ভিতরে পাহাড়ি উঁচু এলাকা অতিক্রম করার সময় আটকা পড়ছে। পরে ট্রেনগুলো আবার পেছন দিকে শ্রীমঙ্গল ও কমলগঞ্জ রেলস্টেশনে নিয়ে আসা হয়। কখনো হুইল স্লিপ বা চাকা ঘুরিয়ে উঁচু এলাকা পার করে দেওয়া হয়। এতে দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। অনেক যাত্রীকে ঘণ্টার পর ঘণ্টা ট্রেনে বসে থেকে পরে সড়কপথে গন্তব্য পৌঁছাতে হয়। রেলের দায়িত্বশীলরা জানান, লাউয়াছড়া বনে ট্রেন আটকে পড়ার প্রধান কারণ দুর্বল ইঞ্জিন। এ ছাড়া রেলপথে গাছের পাতা পড়ে লাইন পিচ্ছিল হয়ে যায়। কখনো বনের গাছপালা ভেঙে রেললাইনে পড়ে থাকে। তখন আর ট্রেন এগোতে পারে না। সর্বশেষ ৩১ মার্চ ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা সিলেটগামী কালনী এক্সপ্রেস ট্রেন রাত সাড়ে ৮টায় লাউয়াছড়া বন অতিক্রম করার সময় ফ্যানের ফিউজ জ্বলে গিয়ে ইঞ্জিন বিকল হয়ে বনের ভিতর আটকে যায়। আখাউড়া থেকে ইঞ্জিন আসার পর রাত সাড়ে ১১টায় ট্রেনটি সিলেটের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। এর আগে ২৪ মার্চ ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা কালনী এক্সপ্রেস, ২২ মার্চ রাত ৩টায় সিলেটগামী উপবন এক্সপ্রেস, ১৯ মার্চ পারাবত এক্সপ্রেস, ১৮ মার্চ ঢাকাগামী উপবন এক্সপ্রেস, গত বছরের ৪ ডিসেম্বর সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস, ২৬ নভেম্বর সিলেট থেকে ছেড়ে আসা পারাবত এক্সপ্রেস ট্রেন আটকা পড়ে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক রেলওয়ের কর্মকতারা জানান, এই রেলপথে আন্তনগর উপবন, পারাবত, কালনী, পাহাড়িকা ও উদয়ন ট্রেন ২৯শ সিরিজের ইঞ্জিন দিয়ে চালানো হচ্ছে। যেগুলো ২০০৬ সালে আমদানি করা হয়েছে। ১৮ বছরে অনেক ইঞ্জিন দুর্বল হয়ে শক্তি কমে গেছে। অথচ একই রেলপথে তেলবাহী ট্রেন চলছে ৩ হাজার সিরিজ ইঞ্জিন দিয়ে। যেগুলো ২০১৭ সালে আমদানি করা। তাই তেলবাহী গাড়িগুলো খুব দ্রুতগতিতে বনের উঁচু এলাকা পার হতে পারছে। কমলগঞ্জ রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মো. জামাল উদ্দিন বলেন, দুর্বল ইঞ্জিনের কারণে ঘন ঘন ট্রেন আটকা পড়ে। আমরা নতুন ইঞ্জিন লাগানোর জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।’ লোকোমাস্টার আশরাফ মো. আবু তালেব বলেন, ‘এই রেলপথে ২৯শ সিরিজের ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেন চলছে। ৩ হাজার সিরিজের নতুন ইঞ্জিন দিয়ে ট্রেন চলিয়ে দেখা যেতে পারে- এই সমস্যার সমাধান হয় কি না।’