দিনাজপুরের খানসামায় খরস্রোতা আত্রাই নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে বালুর সঙ্গে পলিমাটির স্তরের কারণে এখন উর্বর আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে। এখানে ধান, পিঁয়াজ, মিষ্টিকুমড়াসহ বিভিন্ন রকমের ফসল আবাদ খুবই ভালো হচ্ছে। এসব চরে এখন সবুজ ফসলের সমারোহ। নানা ধরনের ফসল চাষে স্বপ্ন বুনছেন কৃষক-কৃষানিরা। আত্রাই নদীতে জেগে ওঠা এসব চরে বিভিন্ন ফসলের চাষাবাদ শস্যপ্রধান এই অঞ্চলের কৃষি অর্থনীতিতে নতুন মাত্রা যোগ করেছে, বলছেন সংশ্লিষ্টরা।
খানসামা উপজেলার গোবিন্দপুর, বেলপুকুর ও কায়েমপুর এলাকায় দেখা যায়, নদীর বুকে জেগে ওঠা চরে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষক-কৃষানিরা। সেখানে চাষ হচ্ছে ধান, পিঁয়াজ, গম, ভুট্টা, সরিষা, মিষ্টিকুমড়াসহ নানা ধরনের শাকসবজি। চাষিরা বলছেন, এসব চর এখন পলিমাটি মিশ্রিত উর্বর আবাদি জমিতে পরিণত হয়েছে।
জানা যায়, নদীতে চর জেগে ওঠার পর ওই এলাকার কৃষক নিজেদের মধ্যে সমন্বয় করে চাষাবাদ করে আসছে। খানসামা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, চলতি মৌসুমে আত্রাই নদীর চরে আলোকঝাড়ী, বাসুলী, গোবিন্দপুর, বেলপুকুর, কায়েমপুর, জোয়ার, শুড়িগাও, আগ্রা ও চাকিনিয়া এলাকায় ৫৫ হেক্টর জমিতে ফসল চাষ হয়েছে। এর মধ্যে বোরো ধান ৪৫ হেক্টর, পিঁয়াজ ৩ হেক্টর, মিষ্টিকুমড়া ১ হেক্টর, ভুট্টা ৪ হেক্টর ও সরিষা ২ হেক্টর জমিতে আবাদ হয়েছে। কৃষি বিভাগের উৎসাহে গত মৌসুমের চেয়ে চাষাবাদ বেড়েছে।গোবিন্দপুর চরের চাষি ছমির উদ্দিন বলেন, নিজের কোনো চাষের জমি নেই। নদীর চরে ফসল আবাদ করেছি। ধানের পাশাপাশি পিঁয়াজ ও বিভিন্ন প্রকার শাক-সবজিও চাষ করেছি। এসব ফসল চাষ সংসারের কাজে লাগছে, পাশাপাশি বাড়তি আয় হচ্ছে।
এনামুল ইসলাম নামে আরেক চাষি বলেন, চরে প্রায় বিঘাখানেক জমিতে ধান চাষ করেছি। অন্য জমির চেয়ে চরে ফসলের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বেশি। ভালো ফলনও পাওয়া যায়।
খামারপাড়া ইউপির উপ-সহকারী কৃষি কর্মকর্তা শ. ম. জাহেদুল ইসলাম বলেন, চরে ধান ও পিঁয়াজ আবাদ অনেক ভালো হয়। সেই সঙ্গে চরে চাষাবাদ উপযোগী ফসলের ফলন বৃদ্ধিতে কৃষকদের সহায়তা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
খানসামার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা হাবিবা আক্তার বলেন, অন্য আবাদি জমির সঙ্গে চরে চাষাবাদে যেমন কৃষকরা লাভবান হচ্ছেন তেমনি খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এর ধারাবাহিকতা ও সফলতা বজায় রাখতে উপজেলা কৃষি বিভাগ সর্বদা কৃষকের পাশে রয়েছে।