উত্তরের পর্যটন সমৃদ্ধ জেলা পঞ্চগড়ে বেড়েছে নিষিদ্ধ পলিথিনের ব্যবহার। এতে পরিবেশের পাশাপাশি স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে সাধারণ মানুষ।
সচেতন মহল ও পরিবেশবাদীরা বলছেন, একবার ব্যবহারের পর যেখানে সেখানেই ফেলে দেওয়া হচ্ছে এসব পলিথিন। পরিত্যক্ত এসব পলিথিন ভেঙে মাইক্রোপ্লাস্টিকে পরিণত হচ্ছে। ওই মাইক্রোপ্লাস্টিক মাটি ও পানিতে মিশে বিভিন্ন সবজি, ফল ও প্রাণীর শরীরে প্রবেশ করছে। তারপর প্লাস্টিকের বিভিন্ন ক্ষতিকর উপাদান খাবার এবং বাতাসের মাধ্যমে ঢুকে পড়ছে মানবশরীরে। পলিথিনের কারণে কৃষি জমি হারিয়ে ফেলছে উর্বরতা। বিষাক্ত হয়ে উঠছে পরিবেশ। ক্যান্সারসহ নানা ধরনের ভয়ংকর রোগে আক্রান্ত হচ্ছে মানুষ। চিকিৎসকরা বলছেন, নিষিদ্ধ পলিথিন ব্যবহারে সাধারণ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়েছে। বেড়েছে বিকলাঙ্গ শিশুর জন্মহার। পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের এনেস্থেসিয়া বিশেষজ্ঞ ডা. মনসুর আলম জানান, পলিথিন ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়েছে পঞ্চগড়ের কয়েক লাখ মানুষ। যেখানে সেখানে পলেথিন ফেলে দেওয়া হচ্ছে। পৌরসভার ড্রেনগুলোতে পলিথিন ফেলায় সেগুলো প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। এতে বর্ষাকালে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। দূষিত পানির মাধ্যমে মাইক্রোপ্লাস্টিক ছড়িয়ে পড়ছে জেলা শহরে।
বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)-এর পঞ্চগড় জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আজহারুল ইসলাম জুয়েল বলেন, পলিথিনের ব্যবহার হঠাৎ বেড়ে গেছে। হাতেগোনা অসাধু কয়েকজন ব্যবসায়ী সারা জেলায় পলিথিন ছড়িয়ে দিচ্ছেন। তারা পৌর এলাকাসহ গ্রামের হাটবাজারে দোকানে দোকানে গিয়ে পলিথিন বিক্রি করে। প্রশাসন এবং পরিবেশ অধিদফতরের সামনেই তারা ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে। এ ব্যাপারে এ দুই সংস্থারও কার্যক্রম চোখে পড়ার মতো নয়। নিষিদ্ধ ওই পলিথিন ব্যাগের বিরুদ্ধে এখনই কার্যকর কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করা না হলে ভবিষ্যতে পঞ্চগড়ের পরিবেশ বিপর্যয়ের মুখে পড়বে বলে মনে করেন তিনি।
পঞ্চগড় পরিবেশ অধিদফতরের উপপরিচালক ইউসুফ আলী জানান, আমরা কয়েকজন ব্যবসায়িকে জরিমানা করেছি। এ ব্যাপারে সচেতনতা সৃষ্টিতে কাজ চলছে।