রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

দৌলতদিয়া প্রান্তে ভোগান্তির শঙ্কা

♦ যাত্রী হয়রানি ♦ অতিরিক্ত ভাড়া ♦ ছিনতাই

দেবাশীষ বিশ্বাস, রাজবাড়ী

দৌলতদিয়া প্রান্তে ভোগান্তির শঙ্কা

ঈদযাত্রায় পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ঘাটের দৌলতদিয়া প্রান্তে ভোগান্তির শঙ্কা -বাংলাদেশ প্রতিদিন

‘পদ্মা সেতু চালুর পর দৌলতদিয়া প্রান্তে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কমেছে। তবে ঈদ উপলক্ষে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পায় কয়েক গুণ। এ সময় দৌলতদিয়া প্রান্তে কয়েকটি ছিনতাইকারী চক্র সোচ্চার হয়। এদের সঙ্গে রিকশাচালকদের যোগসাজশ থাকে’

 

আসন্ন ঈদযাত্রায় দৌলতদিয়া প্রান্তে ভোগান্তির শঙ্কা রয়েছে। দৌলতদিয়া প্রান্তে সাতটি ঘাটের মধ্যে চারটি বন্ধ। ফেরিগুলোর যাত্রী-যানবাহন লোড-আনলোডের ক্ষেত্রে অধিক সময় লাগা, ফেরিঘাট থেকে যাত্রী হয়রানি,  অতিরিক্ত ভাড়া, ছিনতাইয়ের শঙ্কা করছেন সংশ্লিষ্টরা। দৌলতদিয়া ফেরিঘাটের ব্যবসায়ী, যাত্রী ও যানবাহন চালকদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে। সংশ্লিষ্টরা জানান, দৌলতদিয়া প্রান্তে সাতটি ফেরিঘাট রয়েছে। আসন্ন ঈদযাত্রায় এর মধ্যে তিনটি ফেরিঘাট সচল থাকবে। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মাণ করা চারটি ঘাট বন্ধ থাকছে। এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন যাত্রীরা। তাদের মতে, পদ্মা সেতু চালুর পর দৌলতদিয়া প্রান্তে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ কমেছে। তবে ঈদ উপলক্ষে যাত্রী ও যানবাহনের চাপ বৃদ্ধি পায় কয়েক গুণ। এ ছাড়া এ সময় দৌলতদিয়া প্রান্তে কয়েকটি ছিনতাইকারী চক্র সোচ্চার হয়। এদের সঙ্গে রিকশাচালকদের যোগসাজশ থাকে। ছিনতাইকারীদের টার্গেট মূলত নারী যাত্রীদের ব্যাগ ও মোবাইল ফোন। ঈদের দু-তিন দিন আগে এই চক্রটি বেশি সক্রিয় হয়। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিসি) দৌলতদিয়া প্রান্তের ব্যবস্থাপক মো. সালাহউদ্দীন বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে বর্তমানে ১৩টি ফেরি চলাচল করছে। ঈদের তিন দিন আগে আরও দুটি রো-রো ফেরি (বড় ফেরি) বহরে যুক্ত হবে। দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে এবারের ঈদযাত্রায় ১৫টি ফেরি চলাচল করবে। ঘাট সমস্যায় ফেরি অপারেশনে কোনো সমস্যা হবে না, দাবি তার। রাজবাড়ীর পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, আসন্ন ঈদযাত্রা নির্বিঘ্ন করতে আমরা পরিকল্পনা নিয়েছি। আমরা ঘাট এলাকা থেকে চাঁদাবাজি বন্ধ করে দিয়েছি। টার্মিনাল চার্জ নামে গাড়ি থেকে টাকা নেওয়া হতো। আমরা বলেছি মহাসড়ক ব্যবহার করা গাড়িগুলো টার্মিনালে প্রবেশ না করলে কেন চাঁদা দেবে। আমরা সেগুলো বন্ধ করে দিয়েছি।  এদিকে ২৮ মার্চ রাজবাড়ী জেলা প্রশাসনের আয়োজনে আসন্ন ঈদুল ফিতর  উপলক্ষে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া রুটে ফেরি সার্ভিস, নৌপথে সুষ্ঠু লঞ্চসহ অনান্য জলযানের সুষ্ঠুভাবে চলাচল নিশ্চিতকল্পে ঘাটের সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা ও যাত্রীদের যাতায়াত নির্বিঘ্ন করতে সমন্বয় সভায় চাঁদাবাজির বিষয়টি আলোচনায় ওঠে। দৌলতদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুর রহমান প্রকাশ্যে দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে বিআইডব্লিউটিসির চঁাঁদাবাজির অভিযোগ করেন। তিনি দাবি করেন, দৌলতদিয়ার কাউন্টার থেকে বিআইডব্লিউটিসির কর্মকর্তারা অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। মাসিক কয়েক লাখ টাকা চাঁদা উত্তোলন করা হয় কাউন্টার থেকে। এর সঙ্গে কয়েকজন আনসার সদস্য জড়িত। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বাসের সহকারী বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, দৌলতদিয়া থেকে ছেড়ে যাওয়া বাসগুলোকে ৫০ থেকে  ২০০ টাকা পর্যন্ত টার্মিনালে চাঁদা দিতে হয়। যে কারণে বাসভাড়া বৃদ্ধি পায়। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সঙ্গে সমন্বয় করে বাইরের জেলার বাসগুলোকে যাত্রী পরিবহন করতে হয়। তাদের আলাদা টাকা দিতে হয়। ফলে ভাড়া বেড়ে যায় দৌলতদিয়া প্রান্ত থেকে। জানা গেছে, দৌলতদিয়া বাস টার্মিনালে নামে-বেনামে মৌসুমি বাস কাউন্টার বন্ধ করার প্রক্রিয়া চলমান আছে। যাত্রীদের সুবিধার্থে কাউন্টার সীমাবদ্ধ রাখা হয়েছে। পুলিশ জানায়, ঈদযাত্রা সুন্দর করতে আপ্রাণ চেষ্টা করছেন পুলিশ সুপার। কোনোরকম অব্যবস্থাপনাকে ছাড় দিতে রাজি নন পুলিশ সুপার আবুল কালাম আজাদ।

সর্বশেষ খবর