শিরোনাম
রবিবার, ৭ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

নিখুদি মিষ্টির চাহিদা বেড়েই চলেছে

নীলফামারীর বাহারি মিষ্টি

নীলফামারী প্রতিনিধি

নিখুদি মিষ্টির চাহিদা বেড়েই চলেছে

নীলফামারীর সৈয়দপুরের নিখুদি মিষ্টির চাহিদা বেড়েই চলেছে। টাঙ্গাইলের পোড়াবাড়ির চমচম, বগুড়ার দই ও গাইবান্ধার রসমঞ্জরির যেমন খ্যাতি রয়েছে, তেমনি নিখুদিও নজর কেড়েছে ভোজনবিলাসীদের। সুস্বাদু এ মিষ্টান্নটি মিলছে উপজেলার শাহ হোটেল নিরিবিলিতে। প্রতিদিনই ইফতারসামগ্রীর তালিকায় থাকছে খাদ্যটি। প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ টাকায়। সংশ্লিষ্টরা জানান, ভারতের শান্তিপুরের নিখুঁতি সৈয়দপুরে এসে নাম হয় নিখুদি। এ মিষ্টি লম্বায় প্রায় তিন-চার ইঞ্চি। বলা চলে নিখুঁতভাবে এটি তৈরি হয়, ভেজাল মেশালে হবে না তাই তো এর নামটা নিখুদি। কারিগররা জানান, নিখুদি দুধের ছানার তৈরি মিষ্টি। ছানায় মেখে লম্বা লম্বা করে পাকিয়ে রসে ভেজে চিনির সিরায় ডুবালে তৈরি হয়ে যায় এ মিষ্টি। তাতে স্বাদ বাড়ানোর জন্য দেওয়া হয় বিভিন্ন উপকরণ। আকারে ল্যাংচার চেয়ে বেশ কিছুটা ছোট। অনেকটা আঙুলের মতো দেখতে এ নিখুদি ভোজনরসিকদের রসনা তৃপ্ত করে আসছে। স্বাদ ও গন্ধ বাড়াতে এতে দেওয়া হয় গোলমরিচ, এলাচ। বাইরে কিছুটা কঠিন, ভেতরটা নরম। এটি বিভিন্ন স্থানে বিভিন্ন নামে পরিচিতি লাভ করেছে। কেউ বেড়াতে এলে কিনে নেন অন্য রকম দেখতে এ মিষ্টি। সৈয়দপুরের শাহ হোটেল নিরিবিলির মালিক শাহ আরাফাত রহমান বলেন, নিখুদি মিষ্টির চাহিদা বেড়েই চলেছে। চিন্তা করছি, ঈদের পরও গ্রাহকদের চাহিদার কথা মাথায় রেখে তৈরি করব। কথিত আছে, ভারতের শান্তিপুর থেকে এ মিষ্টির প্রচলন হয়। শান্তিপুরের গোভাগাড় মোড়ের কাছে সেই সময়ে একটি মিষ্টির দোকান ছিল। যার মালিকের নাম ছিল ভোলা। ভোলা ময়রার দোকান হিসেবেই তা খ্যাত ছিল। যদিও বর্তমানে আর সেই দোকান নেই। কথিত আছে, সেই ভোলা ময়রার এক অপূর্ব সুন্দরী কিশোরী কন্যা ছিল। যার নাম ছিল নিখুঁতি। সেই কিশোরী মাঝেমধ্যে বাবার দোকানে গিয়ে বসে থাকত। একদিন ভোলাবাবু মিষ্টির দোকানে ছিলেন না। সেই সময় তার কিশোরী মেয়ে হাতে ছানার দলা পাকিয়ে মিষ্টি তৈরির রসের মধ্যে ছেড়ে দেয়। তা একটি মিষ্টির আকার নেয় কিছু সময় পর। পরে এক ক্রেতা এলে অন্য মিষ্টি ফুরিয়ে যাওয়ায় তাকে সেই মিষ্টিই দেন ভোলা ময়রা। মিষ্টি খেয়ে এর স্বাদে মুগ্ধ হয়ে পরের দিন সেই ক্রেতা ফের দোকানে আসেন। তিনি ভোলাকে জিজ্ঞেস করেন মিষ্টির নাম কী? কানে কম শুনতেন ভোলা। তিনি ভাবেন, মিষ্টি প্রস্তুতকারকের নাম জানতে চাওয়া হয়েছে। তিনি উত্তর দেন- নিখুঁতি। এভাবে মিষ্টিটির নাম হয়ে যায় নিখুঁতি।

যেভাবে তৈরি হয় নিখুদি বা নিখুঁতি মিষ্টি : প্রথমে একটি পাত্রে দুধ নিয়ে ভালোভাবে জ্বাল দিতে হয়। এরপর গুঁড়োদুধ মেশাতে হয়। ভালোভাবে মিশিয়ে নাড়তে হয়। যাতে জমে ক্ষীর হয়ে আসে। নামানোর পর ময়দা, বেকিং পাউডার, ছানা ও ঘি মিশিয়ে ভালোভাবে মেখে নিতে হয়। এরপর নিখুদি মিষ্টির আকৃতি তৈরি করে তেলে ভেজে নিতে হয়। যাতে বাদামি রং ধারণ করে। এরপর চিনির সিরায় ডুবিয়ে তুলতে হয়। ব্যাস তৈরি হয়ে গেল নিখুদি মিষ্টি।

সর্বশেষ খবর