বুধবার, ১৭ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

একাধিক সেতুতে ফাটল

♦ ভেঙে গেছে রেলিং ♦ ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন ♦ দুর্ঘটনার আশঙ্কা

ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি

একাধিক সেতুতে ফাটল

‘২০২২ সালের বন্যায় তিনটি সেতুই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই সময়ে ছোটবড় আরও ১০টি সেতু ও কালভার্ট পানিতে ভেসে যায়’

 

ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগর উপজেলার হবিগঞ্জ-নাসিরনগর-সরাইল আঞ্চলিক মহাসড়কের তিনটি সেতুর গার্ডারে ফাটল দেখা দিয়েছে। সেতু তিনটির অধিকাংশ স্থানে রেলিং ভেঙে গেছে। ২০২২ সালের বন্যায় সেতুগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হয়। দুটি সেতু প্রায় এক ফুট দেবে গেছে। এ সড়ক দিয়ে প্রতিদিন সহস্রাধিক বাস, ট্রাক ও ছোটবড় যানবাহন চলাচল করে। এখানে যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় ধরনের দুর্ঘটনা। সেতু তিনটি হলো হবিগঞ্জ-নাসিরনগর-সরাইল আঞ্চলিক মহাসড়কের বুড়ীশ্বর ইউনিয়নের বেণীপাড়া মহাখালের ওপর সেতু, একই ইউনিয়নের শ্রীগর গ্রামের মেনদী আলীর বাড়িসংলগ্ন একটি সেতু ও সদর ইউনিয়নের দাঁতমন্ডল গ্রামের সেতু।

স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতর (এলজিইডি) সূত্রে জানা গেছে, ১২০ ফুট দৈর্ঘ্য সেতুটি বুড়ীশ্বর ইউনিয়নের বেণীপাড়ার মহাখালে নির্মাণ করা হয় ১৯৯০ সালে। ২০২২ সালের বন্যায় তিনটি সেতুই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ওই সময়ের বন্যায় এলজিইডি ও সওজের ছোটবড় আরও ১০টি সেতু ও কালভার্ট পানিতে ভেসে যায়। এর মধ্যে ওই তিনটি সেতুর গার্ডার এক ফুটের মতো দেবে গেছে। বিশেষ করে বেণীপাড়া গ্রামের মহাখাল সেতুটির মধ্যবর্তী স্থান থেকে সেতুর মূল সংযোগটি প্রায় এক ফুট সরে গেছে। সেতুর ১২-১৫ জায়গায় ফাটল ধরেছে। ফাটল ও ভাঙা অংশে দেওয়া হয়েছে জোড়াতালি। সেতুর কয়েকটি রেলিং ভেঙে গেছে। দুই দিকে গার্ডার সরে গিয়ে মৃত্যুকূপ তৈরি হয়েছে। সেতুটির ওপর অটোরিকশা উঠলেই কাঁপে। একই ইউনিয়নের মেনদী আলীর বাড়িসংলগ্ন সেতুটির ওপরের অংশ ভেঙে গেছে। এ ছাড়া দাঁতমন্ডল গ্রামের সেতুটির দুই দিকে ফাটল দেখা দিয়েছে। পশ্চিম দিকে প্রায় এক ফুট হেলে গেছে। ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর প্রায় তিন বছর কেটে গেলেও সড়ক ও জনপদ (সওজ) বিভাগ এ সেতু তিনটি সংস্কারের উদ্যোগ নেয়নি। উল্টো সেতুগুলো ঝুঁকিপূর্ণ নয় বলে দাবি করছেন সওজ কর্মকর্তারা। স্থানীয়রা বলছেন, আঞ্চলিক যোগাযোগে সেতুগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সেতুগুলোর ওপর দিয়ে প্রতি মিনিটে ৮-১০টি পণ্য ও যাত্রীবাহী যান চলাচল করে। বুড়ীশ্বর ইউনিয়ন পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান মো. রুহুল আমিন বলেন, ঢাকাসহ সারা দেশের সঙ্গে হবিগঞ্জ জেলার যোগাযোগের আঞ্চলিক বিকল্প মহাসড়ক এটি। সেতুটি বিকল হয়ে পড়লে হবিগঞ্জ-নাসিরনগরের সঙ্গে সারা দেশের যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যেতে পারে। হবিগঞ্জ জেলার ট্রাকচালক মো. হানিফ মিয়া বলেন, এ সেতুতে যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। নাসিরনগরের ভ্যানচালক বাহার মিয়া বলেন, ‘কোনবালা যে এইডা ভাঙে একমাত্র আল্লাই জানে। পুল ফার অনের সময় আল্লার নাম স্মরণ রাখন লাগে।’ উপজেলা সহকারী প্রকৌশলী মো. ইছাক মিয়া বলেন, ‘সেতুগুলো সড়ক ও জনপথ বিভাগের।’ ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা সড়ক ও জনপথ (সওজ) বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মীর নিজাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘নাসিরনগরে কয়েকটি সেতু দিয়ে যান চলাচলে সমস্যার খবরে অফিস থেকে কয়েকজন টেকনিশিয়ান পাঠিয়েছিলাম। তারা জানিয়েছেন মানুষ যেভাবে বলছে, আসলে এতটা ঝুঁকিপূর্ণ নয়।’

সর্বশেষ খবর