শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪ ০০:০০ টা

হাওরাঞ্চলে ধান কাটা শ্রমিক সংকট

‘মেশিনে ধান কাটা হচ্ছে। তবে নিচু জমিগুলোতে তা নামানো যাচ্ছে না’

জাকারিয়া চৌধুরী, হবিগঞ্জ

হাওরাঞ্চলে ধান কাটা শ্রমিক সংকট

‘এবারও দেশের অন্য প্রান্ত থেকে শ্রমিক এনে ধান কাটার ব্যবস্থা করা হলে ভালো হতো’

হাওর বেষ্টিত জেলা হবিগঞ্জ। এ জেলায় এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় বাম্পার ফলন হয়েছে বোরো ধানের। তবে ধান কাটার শ্রমিক সংকটে বিপাকে পড়তে হচ্ছে কৃষকদের। সঙ্গে যোগ হয়েছে শ্রমিকদের বাড়তি মজুরি। এতে অনেকে ধান উৎপাদন খরচ ওঠা নিয়েও রয়েছেন শঙ্কায়। বৈশাখের শুরুতে আগাম আবাদ করা ধান কাটা শুরু হয়েছে। কৃষকরা বলছেন, অন্য বছরের মতো এবারও যদি জেলা প্রশাসন দেশের অন্য প্রান্ত থেকে শ্রমিক এনে ধান কাটার ব্যবস্থা করে দিত তা হলে ভালো হতো।

জেলা কৃষি অফিসের তথ্যমতে, এবার জেলায় ১ লাখ ২৩ হাজার ৭৩৭ হেক্টর জমিতে বোরো আবাদ হয়েছে। ধান উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লাখ ২০ হাজার ৬৬৫ টন। এ বছর ধানের দাম প্রতি কেজি ৩০ টাকার বেশি হতে পারে। সে হিসাবে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকার ধান গোলায় ওঠার সম্ভাবনা আছে। গতকাল পর্যন্ত ১৭ হাজার ৬৩০ হেক্টর জমির ধান কাটা শেষ হয়েছে। তবে কৃষি অফিস বলছে, এখনো তেমন শ্রমিক সংকট পড়েনি। বিষয়টি আমরা জেলা প্রশাসনের সঙ্গে সমন্বয় করছি। শ্রমিক সংকট মোকাবিলায় হাওরে হারভেস্টার মেশিনের মাধ্যমে ধান কাটা হচ্ছে।

বানিয়াচং উপজেলার মুরাদপুর গ্রামের কৃষক রাফিউর রহমান বলেন, শ্রমিক সংকটে হাওরের পাকা ধান কাটতে পারছি না। এখন নগদ টাকা দিয়ে ধান কাটতে হচ্ছে। এখন উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে কিছু থাকবে কি না তা বলা যাচ্ছে না। আজমিরীগঞ্জ উপজেলার হিলালপুর গ্রামের কৃষক ওয়ারিশ মিয়া জানান, ভালো ফলন হয়েছে। তবে শ্রমিক না থাকায় পাকা ধান কাটতে পারছি না আমরা। লাখাই উপজেলার কৃষক সুশীল চন্দ্র দাস বলেন, শ্রমিকের পরিবর্তে এখন মেশিনের মাধ্যমে ধান কাটা হচ্ছে। তবে নিচু জমিগুলোতে ওই মেশিন নামানো যাচ্ছে না।

সরেজমিনে হাওরে ঘুরে দেখা যায়, তীব্র গরম উপেক্ষা করে ভোর থেকেই ধান কাটতে দলে দলে নেমে পড়ছেন কৃষকরা। শিশু থেকে বৃদ্ধ পর্যন্ত মেতেছেন ধান গোলায় তোলার উৎসবে। কৃষকরা বলছেন, এবার ধানে কোনো ধরনের পোকা মাকড় আক্রমণ করেনি। সময়মতো বৃষ্টি হওয়ায় বোরো ফসলের ফলন ভালো হয়েছে। হবিগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ-পরিচালক কৃষিবিদ নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, গরমের কারণে ধান কাটার শ্রমিকরা মজুরি বেশি চাচ্ছে। এ সমস্যাটা স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের নিয়ে সমাধান করতে হবে। যেসব এলাকায় ধান বেশি পেকেছে সেই সব এলাকায় আমরা অন্য এলাকা থেকে হারভেস্টার মেশিন এনে ধান কাটার ব্যবস্থা করে দিচ্ছি। কৃষি বিভাগ সবসময় কৃষকদের পাশে থেকে সহযোগিতা ও পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে।

 

সর্বশেষ খবর